অতিরিক্ত মাস্টারবেশনঃ ডেকে আনে শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়

অতিরিক্ত মাস্টারবেশনের ভয়াবহ পরিনতি। মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিরা মাস্টারবেশন করে সাময়িকের জন্য আনন্দ পায় ঠিক। কিন্তু পরে তারা হতাশায় ভোগে। দিনের পর দিন যখন এভাবে চলতে থাকে। তখন তাদের  জীবনে মানসিক বিপর্যয় নেমে আসে। 

অতিরিক্ত মাস্টারবেশনঃ ডেকে আনে শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়
অতিরিক্ত মাস্টারবেশনঃ ডেকে আনে শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়


বর্তমান সময়ের একটি নিশ্চুপ ঘাতক ব্যাধির নাম হলো মাস্টারবেশন অথাৎ হস্তমৈথুন। অনেকেই হয়তো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। তাই চলুন আগে জেনে নেই মাস্টারবেশন কি? হাত,সেক্স টয় অথবা অন্য কোনো উপায়ে যৌন সঙ্গম করে যৌন সুখ লাভ করাকে মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন বলে। কিন্তু আমরা কেউ এটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছিনা।  কখনো কখনো হয়তো খুব কাছের মানুষটির আসক্তি দেখেও আমরা নিরবতা পালন করছি, চক্ষু লজ্জায় কিছু বলতে পারছি না।


একেবারে কিশোর কিংবা তরুণ থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত মাস্টারবেশন করে না বা কোনোদিন করেনি এমন একজন ও খুজে পাওয়া কষ্টকর। মাস্টারবেশন কম বেশি সবাই করে থাকে। তবে ইদানীং কালে যারা মাস্টারবেশন করে তাদের বড় অংশই হলো তরুণ প্রজন্ম।পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতা, সামাজিক মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় অনুশাসনের অভাবে সমাজে এই আসক্তি বেড়েই চলছে।ছেলে মেয়ে যে কেউ মাস্টারবেশনে আসক্ত হতে পারে। তবে আজকে পুরুষদের মাস্টারবেশনে আসক্তি নিয়ে আলোচনা করবো। 

মাস্টারবেশনে আসক্তির ফলে শারীরিক এবং মানসিক উভয় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।যার ফলে আমরা পাচ্ছি শারীরিক এবং মানসিকভাবে দুর্বল, বিবেকহীন, হতাশাগ্রস্ত এক প্রজন্ম।


মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিরা জেনে এবং না জেনে নিজের ব্যাপক ক্ষতি করে ফেলে। মাস্টারবেশনের ফলে শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
বিশেষজ্ঞরা মাস্টারবেশনকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে ভুলে গেলে চলবে না অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়।বিশেষজ্ঞদের মতে সপ্তাহে ২ বার মাস্টারবেশন করা স্বাভাবিক তার বেশি হলে আসক্তি। এই আসক্তির পরিণাম কত ভয়ানক তা হয়তো আমরা চিন্তাও করতে পারছিনা। তাই দিনের পর দিন এই মারাত্মক ভুল করেই চলেছি।

পুরুষরা তার স্ত্রীর কাছে কি চায়? জানতে হলে পড়ুন

যৌন সম্পর্কের আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা

পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর কার্যকরী কিছু পরামর্শ

পুরুষের যেই সমস্যার ফলে সন্তান ধারণ সম্ভব হয় না


মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন রকমের শারীরিক দুর্বলতায় ভোগে। চোখ বসে যায়,গাল মুখ শুকিয়ে যায়। পরিমিত খাদ্য গ্রহনের পরও তাদের শারীরিক উন্নতি হয় না। মুখে ব্রন,চুল পড়া, মাথা ব্যথা,চোখে সমস্যা, খাবারে অরুচি এরকম অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাদের রোগা চেহারা দেখলে  মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মতো মনে হয়।


মাস্টারবেশন করার ফলে মানসিক জটিলতা ও দেখা দেয়। তাদের কোনো মানসিক শান্তি থাকে না।মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। অল্পতেই রেগে যায়। সবসময় বিষন্নতায় ভোগে।ডিপ্রেশন তাদের নিত্য সঙ্গী। স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে। কোনো কিছু মনে রাখতে পারে না। কাজ করার ইচ্ছা শক্তি  লোপ পায়।তারা সবসময় অবসাদগ্রস্থ থাকে। মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিদের আরেকটি বড় সমস্যা হলো অনিদ্রা। তাদের ঘুম কমে যায়। রাতে ঘুম হয় না।


মাস্টারবেশনের ফলে খুব দ্রুত বীর্যপাত হয়। মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিরা কখনো তাদের সঙ্গীকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। ফলে দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে চরম হতাশা। সেক্স পাওয়ার কমে যায়। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটে।


মাস্টারবেশন বেশির ভাগ মানুষ হাত দিয়েই করে থাকে। তাই যৌনাঙ্গের পেশিগুলোতে অনেক চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে পেশি গুলো দুর্বল হয়ে যায়। যৌনাঙ্গ বাকা,  চিকন, আগা মোটা, গোড়া চিকন সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে।  প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা প্রস্রাব বের না হওয়া এবং প্রস্রাবের সাথে স্পার্ম বের হওয়ার মতো অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়।


মাস্টারবেশনের ফলে শরীর থেকে স্পার্ম বেরিয়ে আসার পরপরই শরীরে টোসটোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমতে থাকে। এই হরমোন হজম ও পেশির জোর বাড়াতে সাহায্য করে। এই হরমোন শরীরে কম থাকলে হজম ক্ষমতাও কমে যায়। এই হরমোন কম তৈরি হলে স্পার্ম উৎপাদনও কমে যায়। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। শরীরে ঝিমঝিম ভাব থাকে। যারা খুব অল্প বয়স থেকে মাস্টারবেশন করেন তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরো ভয়াবহ হতে পারে।


একজন পুরুষ যখন সহবাস করেন। তখন তার থেকে যে বীর্য বেরিয়ে আসে। সে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা ৪২ কোটির মতো থাকে। কিন্তু মাস্টারবেশনের ফলে সেটি ২ কোটির নিচে নেমে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে কোনো পুরুষের থেকে যদি ২০ কোটির কম শুক্রাণু বের হয়। তাহলে সে সন্তান জন্ম দিতে পারবে নাহ।ফলে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়। 


আরেকটি সমস্যা হলো leakage of semen অথাৎ সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল পদার্থ বেরিয়ে আসে। শারীরিক ব্যাথা এবং মাথা ঘোরার মত সমস্যা দেখা দেয়। 


মাস্টারবেশনের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। nervous system, heart, digestive system, urinary system এবং আরো অন্যন্যা system গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরো শরীর দুর্বল হয়ে যায়। শরীরে রোগ বালাই লেগেই থাকে। 


মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিরা মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষের মত আচরণ করে। সবাই এক রকম ভাবে চিন্তা করে। মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিরা আরেক রকমভাবে চিন্তা করে। এমনি যৌন ক্রিয়ার সাথে জড়িত স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হওয়া অথবা ঠিকমত কাজ না করার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। 

মাস্টারবেশনে আসক্ত ব্যক্তিরা মাস্টারবেশন করে সাময়িকের জন্য আনন্দ পায় ঠিক। কিন্তু পরে তারা হতাশায় ভোগে। দিনের পর দিন যখন এভাবে চলতে থাকে। তখন তাদের  জীবনে মানসিক বিপর্যয় নেমে আসে। 


মাস্টারবেশনের মতো ভয়াবহ আসক্তি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মাস্টারবেশনের কুফল নিজে জানুন অন্যকে জানান। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন।