অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে? নতুনদের জন্য সবকিছু এখানে!

আপনারা হয়তো অনেকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর নাম শুনে থাকবেন। বস্তু তথ্যপ্রযুক্তিগত এই উত্তরণ কে কাজে লাগিয়ে নিজের মার্কেটিং দক্ষতা সাহায্যে আপনিও হতে পারেন একজন সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার, এবং ক্যারিয়ার হিসেবে এখান থেকে আয় করতে পারেন পর্যাপ্ত অর্থ।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে? নতুনদের জন্য সবকিছু এখানে!
What is affiliate marketing and how does it work? Everything is here for beginners

সময় এখন তথ্য ও প্রযুক্তির। এই সময়ে আমাদের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অনলাইনের মাধ্যমে আমরা শুধু একে অপরের সাথে যোগাযোগই নয় বরং গড়ে তুলতে পারি আমাদের ক্যারিয়ার।


অনলাইন ভিত্তিক একটি সফল ক্যারিয়ার হতে পারে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আজকে আমাদের আয়োজনে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে। 



অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? 

প্রথমেই যে প্রশ্ন টি আমাদের সামনে আসে তা হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে কী বোঝায়। এক্ষেত্রে প্রথমেই জানা দরকার মারকেটিং বিষয়টা কি।মার্কেটিং হচ্ছে একটি চলমান প্রক্রিয়া যেখানে  প্রমোশন এবং প্রচারের মাধ্যমে একটি পণ্যের ক্রেতা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।


বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং এই শব্দগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সাধারণ অর্থে ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে বোঝায় যখন আপনি আপনার একটি পণ্যকে ক্রেতাদের কাছে প্রচার করার জন্য অনলাইনে তার বিজ্ঞাপন দেন।


ইন্টার্নেট মারকেটিং কে প্রায় একই অর্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এ ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে একটি পণ্যকে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এসব বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মার্কেটের খোঁজেন।


যারা ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে তাদের পণ্যকে জনগণের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে। এদেরকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার। অর্থাৎ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি আপনার মার্কেটিং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য কে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে  পারবেন। 



কিভাবে কাজ করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং? 

আমরা প্রায়শই হয়তো বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্লগিং সাইট অথবা ভিডিওএর মাধ্যমে  পণ্য সম্পর্কে জেনে থাকি। এ ধরনের ওয়েবসাইট ব্লগিং সাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল গুলো নিজস্ব কোনো পণ্য বিক্রি করে না।


তথাপি তারা বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে আমাদের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে। এবং সবশেষে একটি লিংক দিয়ে থাকে যেখানে গিয়ে আমরা ঐ পণ্যটি ক্রয় করতে পারি।


কখনো কি ভেবে দেখেছি এ ধরনের কাজে ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট অথবা ইউটিউব ভিডিওটি স্বার্থ রয়েছে। আমরা তো তাদেরকে কোন টাকা দিচ্ছি না তাহলে তাদের লাভটা কি। বস্তুত এটাই হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং।


যেখানে নিজের একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট ইউটিউব অথবা ফেসবুক পেজ ক্রিয়েট করে কোন একটি পণ্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। প্রদত্ত লিংক থেকে কেউ যদি কোনো পণ্য ক্রয় করে তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সে তার একটি কমিশন পেয়ে থাকে।


বর্তমান সময়ে অ্যামাজন ফ্লিপকার্ট সহ অন্যান্য বিভিন্ন অনলাইন বিক্রয় মাধ্যমগুলোর সারা বিশ্বব্যাপী অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার রয়েছে। 



কেন করবেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং?  

এ সম্পর্কে প্রথমেই বলেছি বর্তমান সময় হচ্ছে তথ্য ও প্রযুক্তির সময়। এই সময়ে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য তাই অনলাইন বা ভার্চুয়াল জগত অন্যতম জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।


বিনোদনের সীমারেখাকে অতিক্রম করে এই অনলাইনের জগত আপনাকে নতুন একটি পরিচয় গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অন্যতম উদাহরণ।


এখানে চুক্তিভিত্তিক অথবা মাসিক বেতনে আপনি আয় করতে পারেন অর্থ যার মাধ্যমে সফল ভবিষ্যৎ সহ হয়ে উঠতে পারেন স্বাবলম্বী। 



অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য কি কি প্রয়োজন?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জগতে আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন অথবা একজন বিগেনার হিসেবে ভাবছেন কীভাবে করা যায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং তাহলে আমাদের আজকের এই আয়োজন টি আপনার জন্য।


সত্যি কথা বলতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে তেমন কোন জিনিসের প্রয়োজন হয় না। সবথেকে যেটি প্রয়োজন তা হচ্ছে দৃঢ় মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস। আর আমরা জানি এই দুটি আপনার মধ্যে রয়েছে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য প্রথমত যেটি প্রয়োজন তা হচ্ছে আপনার পছন্দসই একটি ল্যাপটপ।


এবং দ্বিতীয়তো প্রয়োজন হাই ইসপ্রিট সম্পন্ন ইন্টারনেট কানেকশন। এই দুটি যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে সক্ষম। তবে হ্যাঁ প্রথমদিকে আপনি যদি মন মত অর্থ উপার্জনে সক্ষম না হন তাহলে মন খারাপ করার কিছু নেই।


কারণ যে কোন নতুন জায়গাতেই কিছুটা সময় প্রয়োজন হয় শেখার জন্য। দৃঢ় আত্মবিশ্বাস অতি দ্রুত সফলতা নিয়ে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। 



অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য যা জানা অত্যাবশ্যকঃ

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে নিশ বলতে কী বোঝায়। সহজ ভাষায় আমরা যাকে ইন্ড্রাস্ট্রি হিসেবে জানি অনলাইনের ভাষায় তাকে নিশ বলা হয়।


বস্তুগত জীবনে যেমন বিভিন্ন ধরনের ইন্ডাস্ট্রি থাকে যেমন ফুড ইন্ডাস্ট্রি ক্লথ ইন্ডাস্ট্রি একইভাবে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের নিশ থাকে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দনীয় একটি নিশ বেছে নিতে পারেন। 



কিভাবে করবেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং? 

ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে কাজ করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কিভাবে একজন সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারবেন।


এক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার পরে আপনি কোন পণ্যের লিংক আপনার ওয়েবসাইট ব্লগ অথবা ভিডিও তে দেওয়ার জন্য সক্ষম হবেন।


এফিলিয়েট মার্কেটিং এ সফল হওয়ার জন্য আপনার ওয়েবসাইট ব্লগ ইনসাইড ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক পেইজে ভালো ট্রাফিক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনার ট্রাফিক হতে হবে আপনার পণ্যের অনুকূলে।


অর্থাৎ যারা আপনার প্রদত্ত লিঙ্ক থেকে পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী থাকবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য বর্তমান সময়ে অ্যামাজন সবথেকে জনপ্রিয় একটি প্রতিষ্ঠানের যাদের সারা বিশ্বব্যাপী লক্ষ্য লক্ষ্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার রয়েছে।


এছাড়া আপনিফ্লিপকার্ট অথবা অন্যান্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের হয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।


এক্ষেত্রে আপনি নিশ সিলেকশন পড়বেন সতর্কতার সাথে। অনেকেই নিশ সিলেকশনের জন্য কিবোর্ড বা এজাতীয় বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে আমি মনে করি এটি অবশ্যই ব্যক্তির পছন্দের উপর হওয়া উচিত।


কারণ আপনি আপনার ওয়েবসাইট ব্লগ অথবা ভিডিওর কনটেন্ট যত বেশি আকর্ষণীয় করে তৈরি করতে পারবেন মানুষ তত বেশি আপনার সাইট প্রদত্ত লিংক  থেকে পণ্যটি ক্রয় করবে। 


ঘরে বসে কাজ করার দারুণ সুযোগ নিয়ে এসেছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি আপনার উপস্থাপন করার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সহজেই ঘরে বসে আয় করতে পারেন।


তাই দেরি না করে এখন থেকেই শুরু করতে পারেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হবার পথে আপনার যাত্রা।