আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে চান? এই পদ্ধতিগুলো অবশ্যই জেনে নিন

আচার সংরক্ষণ করার আরও কয়েকটি পদ্ধতি গুলো এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে।

আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে চান? এই পদ্ধতিগুলো অবশ্যই জেনে নিন
আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে চান? এই পদ্ধতিগুলো অবশ্যই জেনে নিন


আচার খেতে কার না ভালো লাগে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই কোন না কোন সময় আচার খেয়ে থাকেন। আচার যেমন বাহিরেরটা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তেমনি ঘরে বানানো আচার অতিরিক্ত খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর।


এজন্য আচার একেবারে অনেক বেশি বানিয়ে ফেললেও সাধারণত আপনার উচিত অল্প অল্প করে খাওয়া। আরে আচার অল্প অল্প করে খাওয়ার জন্য আপনাকে আচার সংরক্ষণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে।


যদি আপনি আধুনিক উপায়ে ও প্রাচীন উপায়ে আচার সংরক্ষণ করার সকল রকমের পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হয়ে থাকেন তবে আপনি নিশ্চিন্তে একেবারে অনেক বেশি আচার বানিয়ে ফেলতে পারবেন। একসাথে 5/ 6 কেজি আচার বানিয়ে বয়ামে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে অনেকদিন লাগিয়েই খেতে পারবেন।


এতে আপনার কোন অসুবিধা হবে না। কিন্তু আচার বানিয়ে দীর্ঘদিন লাগিয়ে খাওয়াটাও কোন ব্যাপার না যদি না আপনি জেনে থাকেন আচার সংরক্ষণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে।


আজকের আর্টিকেলটিতে বাড়িতে তৈরি করা আচার সংরক্ষণের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। যা আপনার জানা নাও থাকতে পারে।


তাছাড়াও আপনি যদি নতুন নতুন আচার বানানো শিখে থাকেন এবং আচার সংরক্ষণ করার পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত থাকেন না, তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক বেশি ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।


তাহলে চলুন আমরা আর দেরি না করে আর্টিকেলটা মূল অংশে প্রবেশ করে ফেলি। 



যেভাবে আচার সংরক্ষণ করা আপনার জন্য সহজ হবে-



পদ্ধতি নং ১

আপনাদের মনে রাখা উচিত যে, প্রিজারভেটিভ এমন একটি উপাদান যা খাবার কিংবা খাদ্যবস্তুকে সুরক্ষিত ও সংরক্ষণ করতে সহায়তা করে থাকে। যেকোনো খাবার কে ভালো রাখার জন্য প্রিজারভেটিভ এর ব্যবহার অনেক বেশি প্রাচীন একইসাথে আধুনিক।


মাছ মাংস থেকে শুরু করে সকল রকমের খাদ্যে ব্যবসায়ীরা প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করে থাকেন। আচার সংরক্ষণের প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করার প্রচলন রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে আচারের প্রিজারভেটিভ হতে পারে লবণ।


আচারের প্রিজারভেটিভ হিসেবে আপনি লবণ ব্যবহার করতে পারেন। যত বেশি লবণ আচার এ ব্যবহার করবেন তত আচার সুরক্ষিত থাকবে। লবণ আচারে ব্যবহার করার ফলে যে রকম গন্ধ অটুট থাকবে ঠিক সেরকমই এটির ব্যবহার আচার এর স্বাদও পূর্বের তুলনায় অনেক বেড়ে যাবে।


এখানে কিন্তু লবণ আচারের সাথে মিশে যাবে না এবং আচারকে লবণাক্ত করবেন না এই ভয় পাবেন না। এখানে লবণ শুধুমাত্র আচারের প্রিজারভেটিভ হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু এখানেও আরেকটি কথা রয়েছে।


সঠিক মাত্রায় যদি আপনি প্রিজারভেটিভ ব্যবহার না করতে পারেন তবে কিন্তু আপনার আচারে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে বেশি সময় নেবে না। সুতরাং আপনাকে সর্বপ্রথম সঠিক মাত্রায় প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা শিখতে হবে।


অতঃপর প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা শিখে গেলে আপনি লবণ এর মাধ্যমে আচার সংরক্ষণ করতে পারেন এবং দীর্ঘদিনের উপভোগ করতে পারেন। 



পদ্ধতি নং ২

আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য হলুদ ও মেথি পাউডার খুব ভালো। এরা উভয়েই প্রিজারভেটিভ হিসেবে কাজ করে থাকে। আমরা জানি সোডিয়াম বেনজোয়েট এসিড ও সোডিয়াম বেনজোয়েট এর ব্যবহারে দীর্ঘদিন পর্যন্ত আচার ভালো থাকে।


আর হলুদ ও মেথি পাউডারে এই উপাদানগুলোয় উপরোক্ত অ্যাসিড থাকার কারণে দীর্ঘদিন আচারে ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা যায়।


শুধু হলুদ কিংবা মেথি ই নয়, আপনি চাইলে ভিনেগার, বিভিন্ন রকমের মসলা, লবণ অথবা চিনি দিয়েও আচার এর প্রিজারভেটিভ হিসেবে ব্যবহার করে আচার কে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে পারেন।


এই উপাদান গুলোর মাধ্যমে আচার সংরক্ষণ করা শিখে যান তবে উক্ত আচার আপনি কয়েক বছর পর্যন্ত ভালো রাখতে সক্ষম হবেন এবং বছরের-পর-বছর আরাম আয়েশ করে আচার উপভোগ করতে পারবেন। 



পদ্ধতি নং ৩

এই পদ্ধতি সাধারণত তেমন কঠিন নয় কিন্তু একটুও কষ্টদায়ক হয়ে যায়। আপনি যে বয়ামে আপনার অতি সুস্বাদু আচার গুলো সংরক্ষন করবেন সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপার রয়েছে।


আর আমরা জানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সূর্যের আলো অনেক বেশি প্রয়োজন। তাই আপনি যদি আপনার আচারকে ব্যাকটেরিয়া কিংবা বিভিন্ন অনুজীবের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে দীর্ঘদিন ভালো রাখতে চান তবে একে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের আলোর নিচে রেখে দিন।


প্রতিদিন যদি সূর্যের আলো আপনার আচারের বয়ামে যায় তবে তা অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকতে সহায়তা করে। কেননা সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে তীব্র উত্তাপে ব্যাকটেরিয়া কিংবা অন্যান্য অনুজীবের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা চলে যাবে।


তাই প্রতিদিন কিছু সময় বের করে সূর্যের আলোর নিচে আপনারা আচারের বয়াম খোলা রাখুন। 



পদ্ধতি নং ৪

সম্ভব হলে আপনার আচার ফ্রিজে রাখতে পারেন। কেননা ঠাণ্ডা পরিবেশে আচার ভালো থাকে। যদিও ফ্রিজে না রাখার ইচ্ছে পোষণ করেন কোন সমস্যা থাকার কারণে তবে চেষ্টা করুন আচার এমন জায়গায় রাখতে যেখানে ঠান্ডা পরিবেশ রয়েছে।


গরম পরিবেশ রয়েছে এমন জায়গা যেমন চুলার পাশে, ডিপ ফ্রিজের উপরে কিংবা ওভেন এর আশেপাশে আচারের বয়াম রাখবেন না। ঠাণ্ডা পরিবেশে থাকলে আপনারা আচারে ফাঙ্গাশ ধরতে পারে না। 




সুপ্রিয় পাঠক, এভাবেই আপনি আপনার আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে পারবেন। আশা করি আর্টিকেলটি আপনারা উপভোগ করেছেন। আজ তাহলে এখানেই ইতি টানছি, ধন্যবাদ।