আমের তৈরি ফেসপ্যাক আপনার ত্বকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা জানেন কি?

আমের মাধ্যমেও যে রুপচর্চা করা যায় তা জানতে পারবেন আর্টিকেলটির মাধ্যমে৷ আর এখন তো আমের সিজন চলছেই। সুতরাং দেরি না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।

আমের তৈরি ফেসপ্যাক আপনার ত্বকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা জানেন কি?
আমের তৈরি ফেসপ্যাক আপনার ত্বকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা জানেন কি?


আম গ্রীষ্মকালীন ফল। বর্তমানে পাকা আমের মৌসুম বেশ ভালোমতোই চলছে। বাজারে বাজারে দেখা যাচ্ছে পাকা পাকা মুখে জল এনে দেওয়া আম। মিষ্টি মিষ্টি আমের গন্ধে বাজার, বাগান, ডাইনিং রুম যেন মৌ মৌ করছে। মৌমাছিরাও পিছিয়ে নেই আমের উপর ভনভন করার জন্য।


বাবা-মায়েরা বাজার থেকে ঘরে ফিরলেই এখন তাদের হাতে দেখা যায় করে কেজি দরে কেনা এত্ত এত্ত আম। তো যাই হোক, এত কথা বলার একটাই উদ্দেশ্য, আপনারা জানেন কি? আম দিয়ে শুধু যদি উদরের চাহিদা, মেটাতে ব্যস্ত হয়ে থাকলেই চলে না৷ রূপচর্চার দিকটাও দেখা লাগে।


আপনাদের যারা রূপচর্চার দিকে বেশি খেয়াল রাখেন তাদের জেনে নেওয়া উচিত যে এই মৌসুমী ফলের কিন্তু এমনও ক্ষমতা রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার ত্বকের যত্ন করতে পারেন।


আম এর মাধ্যমে কিভাবে ত্বকের যত্ন করা যায় তা নিয়ে কিছু প্যাক এর বর্ণনা মূলত আজকে আলোচনা করব। ত্বকের যত্নে আমের তৈরি কিছু প্যাক এর কথা বলেছেন হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী।


তাহলে চলুন আমরা আর দেরি না করে জেনে নেই আমের সেই ফেসপ্যাক গুলো কি কি।



যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে থাকে তবে আপনার জন্য আমের যে প্যাক ব্যবহার করা যায় সেটা হল:

প্রথমে আপনাকে পরিষ্কার পাত্রে এক টেবিল-চামচ আমের ক্বাথের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশাতে হবে এবং সেইসাথে দুই চা চামচ বেসন মেশাতে হবে। অতঃপর সম্পূর্ণ উপকরণের মিশ্রণটিকে ভালোমতো মুখে লাগিয়ে কমপক্ষে 15 থেকে 20 মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।


সময় শেষ হয়ে গেলে ভালো করে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন মুখ ধোয়ার সাথে সাথেই কিন্তু মশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। নাহলে সমস্যা।


উল্লেখ্য যে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য আপনাকে কমপক্ষে সপ্তাহে একবার তো এই প্যাকটি ব্যবহার করতেই হবে।


 


যদি আপনার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে থাকে তবে আপনি কি করবেন:

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আফরিন মৌসুমী আমের মাধ্যম তৈরি করা যেই প্যাকটির কথা বলেছেন সেটি হচ্ছে 1 টেবিল-চামচ আমের ক্বাথের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ মুলতানি মাটি মিশিয়ে নিতে হবে।


অতঃপর তা মুখে লাগিয়ে 15 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এখানে বলে রাখা ভালো যে এই মিশ্রণে ব্যবহার করা লেবুর রস আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করতে অনেক বেশি সহায়তা করে।


আর মুলতানি মাটি ত্বকের জন্য কত ভালো সেটা তো আপনারা ভালো করেই জানেন। 


যদি আপনার ত্বক স্বাভাবিক হয়ে থাকে তথা তৈলাক্ত না এবং শুষ্কও না তখন আপনি কি করবেন:

আপনি যদি স্বাভাবিক ত্বকের মালিক হয়ে থাকেন তবে আপনার ত্বক নিয়ে সম্ভবত খুব একটা যত্নআত্তি করার প্রয়োজন হয় না। কেননা আপনি সেইসব ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন যার ত্বক তৈলাক্ত বা শুষ্ক হওয়ার সমস্যা পোহাতে হয় না।


তবুও স্বাভাবিক ত্বকের জন্য আফরিন মৌসুমী আমের যেই প্যাকটির সম্পর্কে আমাদের সাজেশন দিয়েছেন সেটা হচ্ছে 1 টেবিল-চামচ মসুর ডালের সাথে আপনাকে একটি টেবিল চামচ আমের ক্বাথ এবং 1 টেবিল-চামচ গোলাপের পাপড়ি ভালো করে বেটে নিতে হবে।


এখন আপনি ব্লেন্ডার করে বেটে নিতে পারলেও খারাপ হয় না। অতঃপর মুখের ত্বকে আপনাকে এই প্যাকটি ভালো করে লাগিয়ে কমপক্ষে 20 মিনিট রাখতে হবে। ও হ্যাঁ আরেকটা কথা, আম কিন্তু হাতের ত্বকের পরিষ্কারক হিসেবেও কাজ করে।


এই ক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে, একটা আস্ত আমের সঙ্গে আধা কাপ চিনি ও একটা সম্পূর্ণ লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করতে হবে। এই স্ক্রাব বানানো হলে তা ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। 


 
এছাড়াও আমের ব্যাপারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা আপনাদের সাথে জানাতে চাচ্ছি এবং তা হল, যদি আপনি সারা বছর এই প্যাকগুলো সংরক্ষণ করতে চান তবে আমের রস কিউব করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।


আর যদি কোন কারণে আপনার হাতে সময় না থাকে তবে কাঁচা দুধের সঙ্গে আমের রস মিশিয়ে প্যাক বানিয়েও তার সংরক্ষণ করতে পারেন।

 


টপ সিক্রেট:

আম খাওয়ার পর আমের খোসা সম্ভব হলে ত্বকে ঘষে দেখুন। যদি প্রতিদিন এই জিনিসটি ব্যবহার করতে পারেন তবে তার ফল খুব শীঘ্রই পাবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। 


সুপ্রিয় পাঠক, আশা করা যায় আমের তৈরি করা এই প্যাকগুলো আপনারা অবশ্যই বাড়িতে ব্যবহার করে দেখবেন এবং ফলাফল আমাদের সাথে শেয়ার করবেন।


আজ তাহলে এখানেই ইতি টানছি। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।