আয় অল্প হলেও সঞ্চয় করার দারুণ পদ্ধতিগুলো জেনে নিন
আপনার উপার্জন কম বা আপনি অধিক উপার্জন করেন কিন্তু টাকা সঞ্চয় করতে পারেন না? তবে আপনি সঞ্চয় করতে চান কিন্তু মাস শেষে টাকা শেষ হয়ে যায়? তাহলে পোস্টটি পড়তে থাকুন আপনার জন্যই আমাদের আজকের পরামর্শ।

সবাই যে চাকরি করবে বা সবাই ব্যবসা করবে বা সবাই দিনমজুর হবে এমনটা নয়। একেকজন একেক পেশায় নিয়োজিত।
তাই রোজগারেও তেমন রয়েছে ভিন্নতা। তবে যারা অল্প ইনকাম করেন তারাও চান ভবিষ্যৎ এর জান্য কিছু টাকা জমানো যদি যেত তবে ভালোই হত।
কিন্তু দেখা যায় ভাবনাটা শুধু মাথাতেই থাকে টাকা জামানো আর সম্ভব হয় না স্বল্প আয়ের কারণে। নিত্যকার খরচ মিটিয়ে টাকা জমানো আর হয়ে উঠে না।
অনেকে আছেন লাখ টাকা উপার্জন করেও টাকা সঞ্চয় করতে পারেন না। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে।
আবার অনেকে উপার্জন করেও দেখা যায় তিনি অর্থকষ্টে ভুগে থাকেন। মাস শেষে টাকা থাকে না। আর সঞ্চয় করাও সম্ভব হবে না।
আপনার উপার্জন কম বা আপনি অধিক উপার্জন করেন কিন্তু টাকা সঞ্চয় করতে পারেন না? তবে আপনি সঞ্চয় করতে চান কিন্তু মাস শেষে টাকা শেষ হয়ে যায়?
তাহলে পোস্টটি পড়তে থাকেন আপনার জন্যই আমাদের আজকের পরামর্শ।
আয় অল্প করলেও সঞ্চয় করার পদ্ধতিগুলো জেনে নিন -
নিজেকে নিজেই জবাবদিহি করতে হবে
আপনার উপার্জন কত? খরচ প্রতিদিন কত করছেন? কেন খরচ করলেন? কতটা আজ অবশিষ্ট থাকল? এই সব প্রশ্নগুলো প্রতিদিন নিজেকে করুন এবং এই আয়-ব্যয়ের হিসাবটা খাতায় লিখে ফেলুন।
যদি অতিরিক্ত খরচ করে ফেলেন তাহলে নিজেকে পরবর্তী দিনে আর এভাবে দাঁড় করাবেন না। পরবর্তী দিন কম খরচ করুন।
অনেকে আছেন যাদের পরিবার থেকে মা অথবা বউ তাদের কাছে খরচের হিসাব চায় এতে করে সে সব লোক জবাবদিহি করতে চান না।
উল্টো রাগারাগি করে পরিবারে অশান্তি শুরু করে দেন। তাই আপনি যদি সঞ্চয় করতে চান তাহলে নিজের কাছে নিজেই জবাবদিহি করুন।
এতে করে সঞ্চয় করার প্রবণতাও যেমন বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে অন্যদের কাছে জবাবদিহি না করে নিজের কাছে জবাবদিহি করলে অশান্তির সৃষ্টিও হবে না।
মাসের শুরুতে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে
আপনি মাসে কত টাকা উপার্জন করেন? এবং কত টাকা খরচ করেন? সেগুলোর একটা হিসাব করে ফেলুন। আপনার খরচগুলোকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করে ফেলুন। কিছু নির্দেশনা নিচে আলোচনা করলাম।
আবশ্যিক খরচ
যে খরচগুলো আপনার করাই লাগবে। না করলে চলা সম্ভব নয় এমন খরচগুলোর তালিকা আলাদা করে ফেলুন এবং এই খরচের জন্য কতটাকা খরচ হবে সে বাজেটটা করে ফেলুন।
আবশ্যিক খরচ গুলো কেমন একটু জেনে নেয়া যাক- চাল, ডাল, সবজি, বিদ্যুৎ বিল, ঘরভাড়া যদি থাকে তাহলে এই খরচের জন্য কত টাকা লাগবে এগুলো আলাদা তালিকা করে ফেলুন।
ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ
বই, খাতা-পত্র কিনতে কত টাকা লাগবে তা আগে থেকে আলাদা তালিকা করে ফেলুন এবং এই খরচের জন্য কত টাকা খরচ হতে সেই বাজেটটাও আলাদা করে রাখুন।
লাইফস্টাইলের খরচের হিসাব
আপনার আবশ্যিক ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ বাদ দিয়ে অন্যান্য যে খরচগুলো যেমন পোশাক, বিনোদন, ঘোরাঘুরি ইত্যাদি খরচগুলোর তালিকা আলাদা করুন।
প্রতিমাসে একটু একটু করে এই খরচগুলো কমানোর চেষ্টা করুন। কারন এই খাত ছাড়া আপনার আবশ্যিক খরচ কমানোর উপায় নেই।
ধরুন আপনার যদি জামাকাপড় থাকে তাহলে অতিরিক্ত ক্রয় করবেন না। অতিরিক্ত ব্যয় করলে আপনি সঞ্চয় করতে পারবেন না।
যদি অতিরিক্ত ঘোরাঘুরি করেন এই খাত থেকেও টাকা সঞ্চয় করা সম্ভব। আপনার আয় বুঝে আপনাকে ব্যয় করতে হবে।
আপনার আয় যদি কম হয় আর আপনি অন্যদিকে যদি অধিক ব্যয় করেন তাহলে পরবর্তীতে অর্থকষ্টে ভুগতে হবে।
আপনি মুভি দেখতে যান সিনেমা হলে, নামি-দামি রেস্টুরেন্টে যান বন্ধুদের সাথে কিন্তু অন্যদিকে আপনার পকেটের জোর কম।
খুব বেশি টাকা নেই আপনার কাছে কিন্তু আপনি তবুও লজ্জায় বা সংকোচে না বলতে পারেন না। ফলে আপনার আয়ের থেকে ব্যয় বেশি করে অনেক সময় ঋণও করতে হয়।
ফলে দীর্ঘজীবন এর জন্য একটা ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। তাই এই খাতের ব্যয় কমিয়ে সঞ্চয় করুন। তবে হ্যাঁ বিনোদন করবেন না এমনটাও নয়।
আপনার সামর্থ্যের মধ্যে করার চেষ্টা করুন। যাতে সমস্যায়ও না পড়তে হয় আবার অন্যদিকে সঞ্চয়ও করতে পারেন।
তো সুপ্রিয় পাঠকগণ আপনারা যারা আয় অল্প করেন কিন্তু সঞ্চয় করতে পারেন না তাদের জন্য কিছু কার্যকরী পরামর্শ দিলাম আজ।
আজকের উপার্জন আগামীদিনের জন্য যদি সঞ্চয় না করেন তাহলে ক্ষতিটা আপনারই। তাই আয় যেমনই হোক তা থেকে সামান্য হলেও সঞ্চয় করার চেষ্টা করুন।
যদি আবশ্যিক খরচ করার পর আপনার কাছে আর কোনো টাকা অবশিষ্ট না থাকে তাহলে অন্তত আপনি পাঁচ টাকা করে সঞ্চয় করুন যাতে বিপদ-আপদ বা অসুখ-বিসুখে অন্যের কাছে হাত পাততে না হয়।
যদি পরামর্শটি মন দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি আপনি অবশ্যই বুঝতে পারছেন কিভাবে আপনার দৈনন্দিন খরচ করা দরকার এবং কিভাবে চলা দরকার।
খুব শীঘ্রই আসব পরবর্তী পোস্টে নতুন কিছু পরামর্শ নিয়ে। কোনো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই মন্তব্য করতে পারেন কমেন্ট সেকশনে। সাথেই থাকুন। শুভকামনা জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি সুপ্রিয় পাঠকগণ।
করোনার এই মহামারির সময় সবাই ঘরে থাকুন, সাবধানে ও সুস্থতায় থাকুন।