এখন যৌবনেও বাড়বে উচ্চতা! জেনে নিন কিভাবে
আপনার উচ্চতা কি আপনার মনের মত নয়? ভাবছেন আরেকটু লম্বা হলে কি ক্ষতি হতো। আবার বয়স চলে গেছে বলে লম্বা হতে পারছেন না এই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এখন কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন উচ্চতা বৃদ্ধি শুধুমাত্র 18 বছর বয়স পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। তাই অতিরিক্ত ভাবনায় না জড়িয়ে জেনেনিন কিভাবে বৃদ্ধি করবেন আপনার উচ্চতা।

আকর্ষণীয় উচ্চতা সকলেই চেয়ে থাকেন। তবে ভৌগোলিকভাবে আমাদের উচ্চতা তেমন বেশি না হলেও একেবারে কম নয়। যেখানে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে মানুষের উচ্চতা মোটামুটি কম ই হয়ে থাকে সেখানে বলতে গেলে আমাদের উচ্চতা ভালোই।
তবে আমাদের মধ্যে উচ্চতার বিস্তার তারতম্য লক্ষণীয়। তাই যেমন এখানে ছয ফুট উচ্চতার মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় তেমনি পাওয়া যায় সাড়ে চার ফুট উচ্চতার মানুষও।
তাই নারী কিংবা পুরুষ বলি একটি আকর্ষণীয় উচ্চতায় সকলেরই কাম্য। তবে অনেকেই তাদের কম উচ্চতার জন্য হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে মানুষের উচ্চতা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে যৌবন কালেও
মানুষের উচ্চতা বৃদ্ধির বিষয়টি অনেকগুলো বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত। অর্থাৎ এটি নির্দিষ্ট করে বলা যায় না যে একটিমাত্র কারণে উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। উচ্চতা বৃদ্ধির বিষয়টি সরাসরি বংশগত পরম্পরার সাথে যুক্ত।
অর্থাৎ একটি পরিবারে বাবা ও মায়ের উচ্চতা কেমন সেটি নির্ধারণ করে নবজাত শিশুর উচ্চতা। অর্থাৎ উচ্চতার বিষয়টি হচ্ছে জিনগত। যদি পিতা ও মাতার উচ্চতা অধিক না হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তাদের সন্তান অধিক উচ্চতা সম্পন্ন হয় না।
এক্ষেত্রে সন্তানটি কোন না কোন ভাবে তার পিতা অথবা মাতার বংশগত জিন বহন করে। কিন্তু উচ্চতার এই নির্ধারক এর বাহিরেও আরো যে বিষয়টি কাজ করে সেটি হচ্ছে হরমোন।
শুধুমাত্র হরমোনের জন্য অনেক ব্যক্তিকে অধিক উচ্চতা সম্পন্ন দেখা যায় আবার কাউকে খুব বেটে মনে হয়।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় সাধারণত পেটের বা বামন মানুষদেরকে তেমন ভাল চোখে দেখা হয় না। তারা সর্বদাই হাস্যরসের পাত্র হয়ে থাকে। যদিও এরূপ উচ্চতার জন্য ওই ব্যক্তিটি নিজেই দায়ী নন।
আবার অনেক বেশি উচ্চতা সম্পন্ন ব্যক্তি কেউ আমরা তাল গাছের সাথে তুলনা করে মজা নেই। তাই আমাদের সামাজিক কথার মধ্যে উচ্চতায় প্রশ্নটি বার বারই আসে। যদিও বিভিন্ন গবেষণা বলছে যে ব্যক্তির উচ্চতা তার 18 বছর বয়সের আগেই নির্ধারণ হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে 16 বছর বয়সী একজন মেয়ে তার পূর্ণ উচ্চতা প্রাপ্ত হয়। কিন্তু তারপরও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে 18 বছর বয়সে উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য শেষ বয়স না। এরপরও ব্যক্তি উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
উচ্চতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী এমন কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করবো আজকে।
১. খেলাধুলা করুন
উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য হ্যাঙ্গিং বা ঝুলে থাকা বেশ জনপ্রিয়। তবে সত্যিকার অর্থে 18 বছর বয়সের পর এটি তেমন কাজে দেয় না।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে নিয়মিত খেলাধুলার মধ্যে থাকলে প্রাপ্ত বয়সেও উচ্চতা বৃদ্ধির সুযোগ থাকে। এই খেলাগুলো হতে পারে ব্যাডমিন্টন ফুটবল-ক্রিকেট ইত্যাদি।
এছাড়া স্কিপিং জাতীয় খেলা ও উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য বেশ কার্যকর। তাই নিয়মিত খেলার অভ্যাস থাকলে কম উচ্চতা নিয়ে আর আপনাকে ভাবতে হবে না।
২. ব্যায়াম ও যোগব্যায়াম
মাংসপেশির সঠিক গঠনের সাথে আমাদের উচ্চতার সম্পর্ক রয়েছে। যে সকল ব্যক্তির মাংসপেশি অধিক সুদৃঢ় ও এবং সুগঠিত তাদের উচ্চতার সাধারণত ভালো হয়ে থাকে।
আর এই জন্যই সাধারণতঃ খেলোয়াড়দের মধ্যে ভালো উচ্চতা দেখতে পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম এবং যোগা করা উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য অন্যতম সহায়ক হতে পারে। ব্যায়াম করলে মাংস পেশী দৃঢ় হয়।
কাজেই আপনি যদি আপনার উচ্চতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে কোন ভাল ট্রেনারের কাছ থেকে যোগা শিখতে পারেন। অথবা দিনে অন্তত 30 মিনিট এর অধিক ওয়ার্কআউট করতে পারেন।
৩. ক্যালসিয়াম গ্রহণ করুন
মজবুত হার আমাদের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে। আর এই জন্যই গর্ভকালীন সময় গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন প্রকার নেশাজাত দ্রব্য যেমন সিগারেট থেকে দূরে থাকতে বলা হয়।
কারন এ ধরনের নেশাজাত দ্রব্য গর্ভস্থ শিশুর হাড় গঠন কে ব্যাহত করে। এতে করে শিশুর দাঁত অগঠিত হাড়গুলো অমজবুত এমনকি বিকলাঙ্গ পর্যন্ত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রাপ্তবয়স্ক কালেও যদি খাবার তালিকায় ক্যালসিয়াম এর উৎস রাখা যায় তবে উচ্চতা কিছুটা বৃদ্ধি হয়। ক্যালসিয়ামের সবথেকে ভালো উৎসের মধ্যে রয়েছে দুধ ডিম ও দই।
৪. পুষ্টিকর শাকসবজি
শুধুমাত্র ক্যালসিয়াম ই নয় বরং অন্যান্য খাদ্য উপাদান গুলো প্রত্যক্ষভাবে আমাদের উচ্চতা কে নির্ধারণ করে। এ ধরনের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার আমাদের শরীরে হরমোনের নিঃসরণ সঠিক রাখে।
তাই উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ক্যালসিয়াম এর সাথে সাথে খাবার তালিকায় খনিজ উপাদান ও ভিটামিন রাখুন। ভিটামিন বি ১২ উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য বেশ কার্যকরী।
তাই প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খান। স্বাভাবিক মাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ করুন কাঙ্খিত উচ্চতা পাওয়ার জন্য।
৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান
পর্যাপ্ত ঘুম মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বস্তুত একজন শিশু যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন তার উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। তাই একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমালে আমাদের মাংসপেশি ও হাড় ইত্যাদি সক্রিয় থাকে। যার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় বাড়তে পারে আপনার উচ্চতা।