কিভাবে একজন সফল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে উঠবেন?

গ্রাফিক্স ডিজাইন, কথাটার সাথে সবাই কম বেশি পরিচিত। আজকের কথা বলব কিভাবে একজন সফল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে উঠবেন?

কিভাবে একজন সফল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে উঠবেন?
কিভাবে একজন সফল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে উঠবেন


গ্রাফিক্স
ডিজাইন কী?

সারা বিশ্বের মধ্য গ্রাফিক্স ডিজাইন অনেক জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। গ্রাফিক ডিজাইন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে আমরা নিজের ধারণা, শিল্প এবং দক্ষতা ব্যবহার করে ছবি, শব্দ, পাঠ এবং ধারণার মিশ্রণ করে একটি আলাদা এবং নতুন ছবি তৈরি করি।


কোন প্রতিষ্ঠানের লোগো, ব্যানার, বিজনেস কার্ড, ফ্লায়ার, ম্যাগাজিন ইত্যাদি ডিজাইন করাকে বলা হয় গ্রাফিক্স ডিজাইন। এছাড়া ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সট্রাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদির লোগো, ব্যানার, ব্যানার এ্যাড ইত্যাদি ডিজাইন করার মাধ্যমেও গ্রাফিক্স ডিজাইন করা যায়।


গ্রাফিক্স
ডিজাইন এর উপকারিতা: 

গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর কাছে থেকে অর্থের বিনিময়ে ডিজাইন করিয়ে নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠান এর কার্য সম্পাদনের করে তেমনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনেক অর্থ উপার্জন করে থাকে।


গ্রাফিক্স
ডিজাইন শেখার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার:

সাধারনত গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য অ্যাডোবি ফটোশপ(Adobe Photoshop) এবং অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর(Adobe Illustrator) এই দুইটাই বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।


গ্রাফিক্স
ডিজাইন এর ক্যারিয়ার শুরু করা এবং ইনকাম করা:

অনলাইন থেকে অনেক ভাবে ইনকাম করা যায় কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন প্রর্যাপ্ত দক্ষতা। প্রর্যাপ্ত দক্ষতা ছাড়া কোন কাজেই সফলতা পাওয়া যায় না। তো অনেক ধরনের দক্ষতার মধ্য আপনি কেন গ্রাফিক্স ডিজাইন বেছে নিবেন? কেন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখবেন? উত্তর হলো আাপনি যদি একটু ক্রিয়েটিভ হন, আপনার যদি ডিজাইন ভাল লাগে, আপনার যদি আকাআকি ভাল লাগে, আপনার মাথার মধ্যে যদি ডিজাইন ঘুরপাক খায় তাহলে আপনি অন্য সকল দক্ষতার ভেতর গ্রাফিক্স ডিজাইন বেছে নিতে পারেন।


তো গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখার জন্য প্রথমে আপনাকে একটা ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকতে হবে। তারপর যে কোন ভাবে আপনাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন এ প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সংগ্রহ করতে হবে এবং ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এ সফটওয়্যার ইন্সটল দিতে হবে।


এর পর সর্বপ্রথম অ্যাডোবি ফটোশপ(Adobe Photoshop) দিয়ে আমাদের গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখা শুরু করতে হবে। প্রথমে আমাদের শিখতে হবে মেনুবার। কিভাবে একটা নতুন পেজ নিতে হবে, কিভাবে Pixel, Height, Weight, Resulation এগুলা দিয়ে সঠিক মাপের পেজ নেয়া যায়। কিভাবে কাজ সেভ করতে হয়, কিভাবে একটা প্রজেক্ট ওপেন করতে হয় ইত্যাদি দিয়ে শেখা শুরু করতে হবে।


তারপর ফটোশপ এর টুলগুলা ভালভাবে শিখে নিতে হবে। তার মধ্য উল্লেখযোগ্য Marquee Tool, Magic wand Tool, Crop Tool, Brush Tool, Eraser Tool, Pen Tool, Text Tool, Rectangle Tool, Color Tool ইত্যাদি অন্যতম। এগুলা ভালভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। ফটোশপ এর অন্যতম বিষয় হল লেয়ার শেখা। লেয়ার ম্যানেজমেন্ট শেখা অত্যান্ত জরুরি ।


এগুলা প্রাকটিস করার পর আমাদের পাসপোর্ট সাইজের ছবি বানাতে হবে। ছবি ব্যাকগ্রাউন্ড চন্জ করতে হবে, ছবির ব্রাইটনেস বাড়ানো কমানো, ছবিতে বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট দেয়া ইত্যাদি শিখতে হবে এবং বেশি বেশি প্রাকটিস করতে হবে। তারপর বিজনেস কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, আইডি কার্ড, লোগো ব্যানার বানানো শিখতে হবে। এভাবে ফটোশপ এর কাজ ভালভাবে শেখা শেষ হলে বেশি বেশি করে প্রাকটিস করতে হবে।


এরপর আমাদের অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর(Adobe Illustrator) এর কাজ শুরু করতে হবে। ফটোশপ এর মতো ইলাস্ট্রেটর এর ও প্রথমে মেনুবার ও টুলস সম্পর্কে পরিচিত হতে হবে। তারপর বিভিন্ন ধরনের কাজ শুরু করতে হবে যেমন :-

  • লোগো ডিজাইন
  • বিজনেস কার্ড ডিজাইন/ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন
  • ইমেজ রিসাইজ এন্ড এডিটিং
  • ব্যানার ডিজাইন
  • পোস্টার ডিজাইন
  • টি শার্ট ডিজাইন
  • ওয়েব সাইটের জন্য পিএসডি তৈরি
  • বিভিন্ন পিএসডি ইমেজকে ভেক্টরে কনভার্ট করা
  • প্রোডাক্ট হলোগ্রাম ডিজাইন
  • ফটো রিটাচিং
  • স্টিকার ডিজাইন ইত্যাদি
  • স্কেচ তৈরি
  • ফ্লায়ার ডিজাইন
  • আ্যড ডিজাইন
  • সোস্যাল মিডিয়া লোগে, ব্যানার ডিজাইন
  • ক্যালেন্ডার ডিজাইন
  • ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইন ইত্যাদি


গ্রাফিক্স
ডিজাইনার হওয়ার জন্য জরুরি কিছু টিপস:-

  • কালার কম্বিনেশন বোঝা। কোন কালারের সাথে কোন কালার যাবে এগুলা ভাল বোঝা।
  • মোটামুটি একটু আকাআকি জানা। 
  • লেখা ভালভাবে ফুটিয়ে তোলা যেমন ফন্ট কালার, ফন্ট সাইজ, ফন্ট চয়েজ ইত্যাদি।
  • ডিজাইন কনসেপ্ট ভালো হওয়া এবং ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা এবং ক্রিয়েটিভ কিছু করে তোলা।
  • ক্লাইন্টের সন্তুষ্টির জন্য ভাল ডিজাইন করা।


গ্রাফিক ডিজাইনারদের আয় কেমন? মাসে কত টাকা আয় করে? কিভাবে আয় করে?

গ্রাফিক ডিজাইনারদের দেশীয় প্রতিষ্ঠান গুলোতে বর্তমানে ১০,০০০ থেকে ৫০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন হয়ে থাকে।আন্তর্জাতিক মার্কেটে একজন ডিজাইনার একটিভ এবং পেসিভ আয়ের মাধ্যমে ২০,০০০ থেকে শুরু করে ২,০০,০০০ বা ততোধিক টাকা আয় করতে পারে। এই ক্ষেত্রে তার যোগ্যতা এবং কমিউনিকেশন দক্ষতার উপর তার আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে।


সবগুলা কাজ ভাল ভাবে শেখা হলে ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিলান্সার ইত্যাদি মার্কেটপ্লেস এ অ্যাকাউন্ট করে কাজ শুরু করতে হবে। এছাড়া দেশের অনেক কম্পানিতে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। এছাড়াও গ্রাফিক্স রিভার, ক্রিয়েটিভ মার্কেট এ ডিজাইন সাবমিট করার মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম করা সম্ভব। এছাড়াও গ্রাফিক্স ডিজাইন টিউটোরিয়াল করে ইউটিউব এ ভিডিও করে অথবা পেইড কোর্স করে ইনকাম করার সুযোগ আছে।


আপনি যদি ভাল ডিজাইনার হউন এবং দক্ষ ডিজাইনার হওয়া বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়েটিভ আইডিয়া থাকে এবং আপনার ক্রিয়েটিভ আইডিয়া কে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও কোর্স / ট্সিউটরিয়াল বানিয়ে সেই ভিডিওগুলোকে আপনি অনলাইনে বিক্রয় করতে পারেন। ।


অথবা আপনি অনলাইনে লাইভ ক্লাস নিয়ে স্টুডেন্টদের কে শেখাতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার ভালো পরিমাণে একটা প্রকৃত জেনারেট হবে।


আপনি চাইলে স্টপ ডিজাইন করেও অনেক ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন বর্তমানে অনলাইনে বেশকিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে আপনি চাইলে আপনার ভিডিওগুলো বা স্টক ক্লিপ, ক্লিপ আর্ট, ভেক্টর ডিজাইন লগো সহ আরও অনেক ধরণের ডিজাইন স্টক মার্কেট এ বিক্রি করতে পারেন।


এভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন বেশি বেশি প্রাকটিস করার মাধ্যমে একজন ভালো ডিজাইনার হওয়া সম্ভব। এভাবেই একজন ডিজাইনার হওয়া সম্ভব।