কি কি থাকা উচিত চাকরিজীবী মহিলার হ্যান্ডব্যাগে?

একজন চাকরিজীবী মহিলার হ্যান্ডব্যাগে কি কি রাখা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করব। আসুন জেনে নিই।

কি কি থাকা উচিত চাকরিজীবী মহিলার হ্যান্ডব্যাগে?
কি কি থাকা উচিত চাকরিজীবী মহিলার হ্যান্ডব্যাগে?

আপনি একজন চাকরিজীবী মহিলা। ঘর সামলে তারপর কর্মক্ষেত্রে যান। বের হওয়ার আগে তরি ঘড়ি করে হ্যান্ডব্যাগ তা গুছান। কিন্তু একি? আপনি সবসময়ই ব্যাগ গুছাতে গেলে বুঝে পান না কি কি নিতে হবে? কোনো সমস্যা নেই। আপনার মত অনেকেরই এ সমস্যা হয়।তাই আজ আমরা একজন চাকরিজীবী মহিলার হ্যান্ডব্যাগে কি কি রাখা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করব। আসুন জেনে নিই।


১. হ্যান্ডস্যানিটাইজার

এ সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল হ্যান্ডস্যানিটাইজার। যে কোনো জায়গায় যেতে সবার আগে এখন এ জিনিসটিই বহন করতে হয়। তাই আপনি বাইরে চাকরিরত হলে নিজের হ্যান্ডব্যাগে এটি ভরে নিন।


হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাতের জীবাণু ধ্বংস করে। তাই নিজেকে সুরক্ষিত করতে আপনার এর প্রয়োজন আছে। এছাড়াও হ্যান্ড স্যানিটাইজার আপনার হাতকে ময়েশচারাইজড রাখে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় সবার আগে স্যানিটাইজার নিয়ে নিন। ভাল একটি স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন।


২. নোটবুক

আপনি আপনার ব্যাগে একটি নোটবুক রাখতে পারেন। চাইলে নোটবুকের সাথে একটি কলম ও রাখতে পারেন। যাতে আপনি সারাদিনের কাজ সমূহ এতে লিখতে পারেন। নোটবুক হাতের কাছে রাখা ভাল।


কারণ হুট করে আপনার মাথায় কোনো আইডিয়া আসলে তা আপনি নোট করে ফেলতে পারেন যাতে পরে ভুলে না যান এবং ভুলে গেলেও নোট আপনাকে তা মনে করিয়ে দিবে।


চেষ্টা করবেন নোটবুক টা একটু ছোট সাইজের নিতে। কারন বেশি বড় নোটবুক ব্যাগে বেশি জায়গা নিবে। ফলে অন্য বাকি সব জিনিস ব্যাগে এডজাস্ট করতে আপনার সমস্যা হবে।


৩. ওয়ালেট

সবচেয়ে জরুরি, যা ছাড়া আপনার বাইরে দিন কাটানো মুশকিল তা হল টাকা। আর টাকা বহন করার জন্য অবশ্যই আপনি একটি ওয়ালেট রাখেন। তাহলে বাইরে যাওয়ার আগে, ব্যাগ গুছানোর সময় ওয়ালেট আগে ব্যাগে পুরে নিবেন এবং অবশ্যই ওয়ালেটে পর্যাপ্ত টাকা আছে কিনা দেখে নিবেন।


বাজারে অনেক সাইজের ওয়ালেট পাওয়া যায়। আপনি আপনার ব্যাগের সাইজ অনুযায়ী একটি পছন্দ করবেন। খেয়াল রাখবেন, ওয়ালেট বা মানিব্যাগটি যাতে বেশি বড় না হয়। যাতে ব্যাগের এক পাশে এর জায়গা হয়ে যায়।


৪. জলের বোতল

আপনি একটি জলের বোতল ব্যাগে নিয়ে নিতে পারেন। এ সময় সম্ভব হলে বাইরের কিছু না খাওয়া বা না ধরাই ভাল। তাই আপনি আপনার জলের বোতলটি বহন করুন। একটি বোতল বেছে নিন যেটির আপনার ব্যাগে জায়গা হবে। বাইরে যাওয়ার আগে বোতল টি ভরে নিন। প্রত্যেকবার ব্যবহারের পর বোতলের কর্কটি ভাল করে লাগাবেন।


তা না হলে জল সব ব্যাগে পরে যাবে। ফলে ব্যাগের জিনিসের ক্ষতি হবে। তাই এসব ছোট খাটো বিষয় খেয়াল রাখবেন। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বোতল কিনতে পাওয়া যায়। সেগুলো দেখতেও সুন্দর। আপনি আপনার রুচি অনুযায়ী বোতল বেছে নিতা পারেন।


৫. টিস্যু

টিস্যু মূলত মোছার কাজে ব্যবহার করা হয়। জল,ঘাম,তেল ইত্যাদি মোছাই টিস্যুর কাজ। তাই এক প্যাকেট টিস্যু আপনার হ্যান্ডব্যাগে রেখে দিবেন। অত বড় নয়, ছোট প্যাকেট রাখলেই চলবে। কে জানে কখন কাজে লেগে যায়।


আর আপনার যদি হাত ঘামানোর সমস্যা থাকে তাহলে তো অবশ্যই আপনার টিস্যু সাথে রাখা দরকার। টিস্যু দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর পর মুখ মুছে মুখ ফ্রেশ রাখতে পারবেন। আর গরমকালে তো টিস্যুর দরকার। তাই টিস্যুর ছোট একটা প্যাকেট সবসময় হ্যান্ডব্যাগে রেখে দিবেন। এটিও কিন্তু ব্যাগে  বহন করার মত প্রয়োজনীয় একটা জিনিস।


৬. কার্ডহোল্ডার

 কার্ডহোল্ডার ও একটি প্রয়োজনীয় বস্তু। বর্তমানে অনেকেই ক্যাশ টাকার চেয়ে কার্ড বেশি ব্যবহার করে থাকেন। সেক্ষেত্রে কার্ড টি খুবই যত্ন সহকারে রাখা উচিত। তাই  কার্ডটি একটি কার্ড হোল্ডারে রাখলে সবচেয়ে নিরাপদ।


এছাড়াও আপনার কাছে অন্যান্য কার্ড থাকলে সেগুলোও আপনি এই কার্ড হোল্ডারে রাখতে পারেন। অনেক সময় বিভিন্ন মেম্বারশিপ কার্ড থাকে,বিজনেস কার্ড থাকে, ইমারজেন্সিতে দরকার এমন  দোকানের কার্ড থাকে।


আপনি এ সকল কার্ড আপনার কার্ড হোল্ডারে রেখে দিতে পারেন যাতে প্রয়োজনের সময় সহজেই পাওয়া যায়। এসব কার্ড এমনি ব্যাগে রেখে দিলে তা ব্যাগের ভিতর থেকে খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। বর্তমানে মানিব্যাগ এর সাথে সংযুক্ত কার্ড হোল্ডার ও পাওয়া যায়। আপনি চাইলে ওরকম ও ব্যবহার করতে পারেন।


৭. লিপবাম

 অনেকেই যে জিনিস ছাড়া বাইরে বের হন না তা হল লিপ বাম। লিপ বাম ঠোঁটকে ভেজা  রাখে,ময়েশ্চারাইজড রাখে। ঠোঁট ফাটা অনেকেরই একটি কমন সমস্যা। তাই ঠোঁট ফাটা দূর করতে লিপ বাম ব্যবহার করা উচিত।


যেহেতু বাইরে আপনি আপনার বড় পেট্রোলিয়াম জেলির জারটা নিয়ে যেতে পারবেন না তাই ছোট একটি লিপ বাম বা ছোট পেট্রোলিয়াম জেলির জার ব্যাগে রাখতে পারেন। ছোট একটা লিপ বাম আপনার ব্যাগের বেশি জায়গা নিবে না আশা করি। লিপ বামটি আপনি ব্যাগের জিপার ব্যাগে নিতে পারেন অথবা হ্যান্ডব্যাগে এক্সট্রা ছোট ব্যাগ রাখলে ওখানেও নিতে পারেন।


৮. সানগ্লাস এবং এর ক্যাস

বাইরে যাচ্ছেন আর সানগ্লাস নিবেন না,তা কি হয়?মোটেও না। বাইরে প্রচুর রোদ এবং ধুলো। রোদ এবং ধুলো উভয় থেকে চোখকে রক্ষা করতে হলে সানগ্লাস অবশ্যই দরকার। তাই বাইরে যাওয়ার আগে হ্যান্ডব্যাগ গুছানোর সময় আপনার সানগ্লাস টি ব্যাগে পুরে নিন।


সানগ্লাস বেশি রোদে আপনার চোখকে স্বস্তি দিবে। আর ধুলোয় আপনার চোখকে সুরক্ষিত রাখবে। মনে রাখবেন,সানগ্লাসটি কিন্তু ক্যাস সহ ব্যাগে নিবেন। তা না হলে সানগ্লাসের ক্ষতি হতে পারে। সানগ্লাসের ল্যান্সের ক্ষতি হতে পারে। তাই সবসময় সানগ্লাসের ক্যাস ব্যবহার করুন।


৯. চার্জার এবং ইয়ারফোন

সবচেয়ে জরুরি, যেহেতু আপনি একটি পুরো দিনের জন্য বাইরে যাচ্ছেন তাই আপনার ল্যাপটপ এবং ফোনে চার্জ থাকা দরকার। আজকাল অফিসের বেশির ভাগ কাজ ই ল্যাপটপ নির্ভর। তাই আপনার ল্যাপটপের চার্জার সবসময় সাথে রাখুন।


আপনার ফোনে ও যোগাযোগ রক্ষার জন্য চার্জ ফুল থাকা জরুরি। তাই ব্যাগে এ দুই জিনিসের চার্জার রাখবেন। আর ইয়ারফোন ও জরুরি। বলা যায় না, যেকোনো সময় আপনার ইয়ার ফোন কাজে লাগতেও পারে!


১০. ফেমেনিন প্রোডাক্ট

যেকোনো সময় যেকোনো কিছুই হতে পারে। তাই আমাদের যথা সম্ভব সতর্ক থাকা ভাল। মেয়েদের একটি বিষয়ে সবসময় ভয় থাকে তা হল পিরিয়ড। তাই এ বিষয়ের জন্য প্রস্তুত থাকা ভাল কোনো রকম অপ্রস্তুত সিচুয়েশন এড়াতে।


আপনি এমন পরিস্থিতির জন্য ব্যাগে যে ধরণের ফেমেনিন প্রোডাক্ট আপনি ব্যবহার করেন তা রেখে দিতে পারেন। এ ছোট একটি কাজ আপনাকে অনেক বড় সুফল দিবে।


আপনি যেহেতু বাইরে যাচ্ছেন পুরো দিনের জন্য তাই অবশই প্রস্তুত হয়ে যাওয়াই ভাল। পুরো দিনের জন্য আপনার যা প্রয়োজন এবং ব্যাগে বহনযোগ্য তা আপনি নিয়ে নিতে পারেন। ব্যাগ নির্বাচন করার সময় অবশ্যই একটু বড় সাইজের ব্যাগ দেখবেন। ব্যাগ টা টেকসই কিনা তা যাচাই করে নিবেন। কারন আপনার পুরো দিনের ধকল কিন্তু কিছুটা এ ব্যাগের উপর ও যাবে।