কোলকাতার অদ্ভুত ৫টি থিম রেস্তোরাঁ, যা সত্যিই খুব আকর্ষণীয়
সময়ের সাথে সাথে মানুষের চাহিদা ও সেই সাথে বদলাচ্ছে খাবারের অভ্যাস। আর মানুষ শুধু খাবারই নয় সেই সঙ্গে উপভোগ করতে চায় পরিবেশ। আর তাই নানা রকম থিমের সম্ভার নিয়ে তৈরী হচ্ছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট যা সত্যিই খুব আকর্ষণীয়। জানতে চান সেগুলো কেমন আকর্ষণীয়? তাহলে পড়তে থাকুন শেষ পর্যন্ত।

ভারতবর্ষ হল এমনই একটি দেশ যেখানে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ বসবাস করেন। আবার রাজ্যের দিক থেকে দেখতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরে বিভিন্ন কালচারের মানুষ দেখা যায়।
আর তাদের মধ্যে সব থেকে বেশি দেখা যায় বাঙালিদের। আর কথায় আছে বাঙালি মানেই খাদ্যরসিক। তবে মানুষের চাহিদা মতন খাবারের নানা ভ্যারাইটি এখানে দেখা যায়।
খাদ্য তালিকায় আমিষের সাথে তাল মিলিয়ে চলে নিরামিষও। খাঁটি বাঙালী খাবারের সাথে সাথে নানা রকম বিদেশী, ভারতীয়, কোস্টাল ও ফিউশন যুক্ত খাদ্য পাওয়া যায় এই কলকাতা শহরে।
শুধু স্বাদের বাহার নয় কলকাতায় সাধারণ রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কয়েকটি থিম বেসড রেস্টুরেন্ট। যেখানে খাবারের সাথে সাথে আপনি উপভোগ করতে পারবেন সুন্দর মন মাতানো পরিবেশ।
কোথাও জেলখানা, আবার কোথাও টলিউডের থিম, কোথাও বা আবার গাছপালায় ভরা পরিবেশ ইত্যাদি। চলুন আজ আমরা জেনে নেব কলকাতার বিখ্যাত ৫টি থিম রেস্তোরাঁ সম্বন্ধে -
১. কয়েদী কিচেন
সাধারণত আমরা জেলে কখনই যেতে চাইনা, তবে ফিল্মের মতন যদি আপনাকেও সুযোগ দেওয়া হয় জেলের ন্যায় পরিবেশে থেকে সুস্বাদু পছন্দ মতন খাবার খাবার খেয়ে প্রিয়জনের সাথে একটি সন্ধ্যা কাটানোর জন্য?
আশ্চর্য হলেন তাই তো? ঠিক এমনই এক থিমের রেস্টুরেন্ট পেয়ে যাবেন মানিস্কোয়ারের মলের কয়েদী কিচেন-এ।
এই রেস্টুরেন্টে জেলের অ্যাম্বিয়েন্সের অনুকরনে সাজানো হয়েছে। এখানকার ওয়েটার থাকে শুরু করে অন্যান্য কর্মচারীদের সাজ পোশাকেও জেলখানার কয়েদী ও দারোগাদের ন্যায়।
এখানে আসলে মনে হবে আপনি একটি জেল খানার কয়েদী। খরচ ২ জনের জন্য মাত্র ১১০০ টাকা।
২. জোডিয়াক
জোডিয়াক শব্দের অর্থ রাশি, কলকাতার বুকে অবস্থিত এই রেস্তোরাঁয় সকল রাশি অনুযায়ী সাজানো হয়েছে। এখানকার মূল আকর্ষণ হল আপনার নিজের রাশি আনুযায়ী পরিবেষণ করা হয় খাবারের তালিকা।
চাইলেই আপনি ট্রাই করে দেখতে পারেন এই আকর্ষনীয় খাদ্য সমূহ। এই রেস্টুরেন্টের অ্যাম্বিয়েন্স পুরোটাই বিভিন্ন রাশির ছবি দিয়ে সাজানো। আরও আছে বুফের ব্যবস্থা। খরচ ২ জন প্রতি১১০০ টাকা ও বুফের খরচ ৭৫০ টাকা।
৩. সি-এস্তা-ইন
কলাকাতার বুকে সি-বিচ উপভোগ করতে চান? সন্ধ্যা বেলা সমুদ্রের পাড়ে বসে ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে চান? শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি। কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরের ভবানী সিনেমা হলের উল্টো দিকে অবস্থিত সি-এস্তা-ইন রেস্তোরাঁ।
এখানে ডেকোরেশন এমনই ভাবে করা যে মনে হবে যেন আপনি কোন এক সমুদ্রের পাড়ে বসে আছেন, বালির উপর থেকে হেঁটে এখানে প্রবেশ করতে হবে,সুস্বাদু সি-ফুডের সমাহার যা আলাদা মাত্রা আনে।
এখানেই শেষ নয় ক্যান্ডেল লাইটে বসে খাদ্য উপভোগ করার ব্যবস্থাও আছে। সবমিলিয়ে সমুদ্র তটের একটা সুন্দর বাতাবরণ এই রেস্টুরেন্টের মূল আকর্ষণ। খরচ ২ জন প্রতি ৭০০ টাকা।
৪. গব্বরস্ বার অ্যান্ড কিচেন
কলকাতার ক্যামাক স্ট্রীটে অবস্থিত ‘গব্বরস্ বার অ্যান্ড কিচেন’ নাম শুনলেই ফিল্মি কালচারের আভাস মেলে। এই রেস্টুরেন্টে গেলে মনে হবে যেন গোটা বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখানেই।
বলিউডের নামজাদা অভিনেতা-অভিনেত্রী ও ৬০ এর দশকের বিখ্যাত কিছু হিন্দি চলচ্চিত্রের থিমে সজ্জিত এই রেস্টুরেন্ট।
এবার তবে জেনে নেওয়া যাক খাবারের বিষয়ে, এই রেস্তোরাঁয় আসলে পাওয়া যাবে চাইনিজ, ইতালিয়ান ও ভারতীয় ফুড কুইজিন।
এখানেই শেষ নয়, এই রেস্তোরাঁর মেনু কার্ডে প্রত্যেকটি ডিশের নাম বলিউড ফিল্মি নাম ও গানের স্বরূপ নামাঙ্কিত। কলকাতায় সুস্বাদু খাবারের সাথে বলিউডকে উপভোগ করতে হলে এই রেস্তোরাঁই শ্রেষ্ঠ। খরচ ২ জন প্রতি ১৪০০ টাকা।
৫. ফিউশন ফ্যান্টাসি
ফিউশন কথাটি শুনলেই মনে হয় কিছুর সংমিশ্রণ, ঠিক তাই কলকাতার লেক রোড সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত ফিউশন ফ্যান্টাসি।
এই রেস্টুরেন্টের তিনটি ফ্লোরে তিন রকম ভিন্ন থিম এর দেখা মিলবে। সি-ফুড এর স্বাদ পেতে চাইলে আসতে পারেন এই রেস্তোরাঁয়।
ট্রাইবাল কমিউনিটিকে কেন্দ্র করে একটি ফ্লোর সাজানো আছে, অপর একটি ফ্লোরে আছে পাইরেটস অফ দি ক্যারেবিয়ান সিনেমাকে কেন্দ্র করা একটি থিম, যেখানে গেলে মনে হবে কোনো জাহাজে আছি আবার হন্টেড হাউসের কথা মাথায় রেখে একটি ফ্লোরে হরর থিম রাখা হয়েছে।
সি-ফুডের সাথে ট্রাইবাল-হরর-সিপ এর মতন বাতাবরণ উপভোগ করতে চাইলে ঘুরে আসুন ফিউশন ফ্যান্টাসি। খরচ ২ জন প্রতি ৭০০ টাকা।
এই অদ্ভুত আকর্ষণীয় থিম রেস্তোরাঁ গুলো সম্পর্কে জেনে নিশ্চয়ই আপনারও যেতে ইচ্ছে করছে! আপনি খাবার এবং খুব ভালো একটা সময় কাটাতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এই রেস্তোরাঁ গুলো থেকে। এতে খাবার এবং সময় দুটোই ভালো কাটবে।
আজ এই পর্যন্তই। আবারও নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের কাছে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং শুভ প্রভাতের সঙ্গেই থাকুন। মনে রাখবেন শুভ প্রভাত নতুন নতুন তথ্য নিয়ে কথা বলে আপনাদের জন্যই। ধন্যবাদ।
আরও পড়ুনঃ চেন্নাইয়ের লোভনীয় ও জিভে জল আসবে এমন কিছু স্ট্রিট ফুড