খাঁটি সুপুরুষ হিসাবে নিজেকে কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন?

আমাদের মানবসমাজে পুরুষ মানুষ তো অহরহ দেখা যায়। কিন্তু খাটি সুপুরুষের সংখ্যা হাতে গোণা। তবে সব পুরুষই চায় যে নিজেকে সুপুরুষ হিসাবে গড়ে তুলতে। তাই আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি সুপুরুষ হওয়ার জন্য কিছু গাইডলাইন নিয়ে যা আপনাদের কাজে আসবে।

খাঁটি সুপুরুষ হিসাবে নিজেকে কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন?
খাঁটি সুপুরুষ হিসাবে নিজেকে কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন?


আমরা প্রত্যেকেই চাই সকলে আমাদের পছন্দ করুন। আলাদা মূল্যায়ন করুক। আমরা নিজেরাও এমন কিছু মানুষদের প্রতি আকৃষ্ট হই, যাদের কিছু বৈশিষ্ট্য আমাদের ভাল লাগে। ছেলে হোক বা মেয়ে সকলেরই নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শুধু ছেলেদেরকেই নয়, মেয়েদের এবং সব মানুষকেই আকৃষ্ট করে।


এটা হচ্ছে মানুষের প্রতি মানুষের আকর্ষন। আজ আমরা ছেলেদের  এমন কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে কথা বলব যা কোন ছেলের ভিতর থাকলে সবাই তার প্রতি আকৃষ্ট হবে। সুপ্রিয় পাঠক চলুন দেরী না করে বৈশিষ্ট্যগুলো জেনে নেয়া যাক।


সুপুরুষ হওয়ার জন্য যেসমস্ত গুণাবলীর প্রয়োজন:


১.আত্মবিশ্বাসী 

যেসব ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী হয় তাদের সকলেই পছন্দ করে। যারা কোন কাজ করার আগে ভাবে যে এটা হবে কিনা,না হলে সে কি করবে,এরকম কনফিউজড ছেলেদের অনেকেই পছন্দ করেন না। কোন কাজের ভবিষ্যত কি হবে তা জানা সম্ভব নয়, কিন্তু কাজটি শুরুর সময় সেটা জোর দিয়ে যে সকল ছেলে ভাবেন, তাদের আত্নবিশ্বাস সবাইকে আকৃষ্ট করে।


আত্নবিশ্বাসী ছেলেদের অভিব্যক্তিতে মানুষ মুগ্ধ হয়। সকলেই তাদের পছন্দ করে, এদের জীবনে সফল হওয়ার সম্ভবনা বেশী বলে মনে করেন সবাই।


২. শারীরিক ফিটনেস

ছেলেদের সৌন্দর্যের অন্যতম দিক হচ্ছে তাদের শারীরিক ফিটনেস, মেয়েদের যেমন চেহারা সুন্দর হলে সকলে আকৃষ্ট হয়, তেমনি ছেলেদের সুঠাম আকর্ষনীয় স্বাস্থ্য সকলেই পছন্দ করে।। মেয়েরা লম্বা, সুঠাম ছেলেদের জীবনসংগী হিসেবে পছন্দ করেন।


আর ছেলেরা সুঠাম আকর্ষনীয় স্বাস্থ্যের বন্ধুদের একটু বাড়তি পছন্দ করে কারন যাদের স্বাস্থ্য ভাল তাদের প্রানচাঞ্চল্য বেশী, তারা খেলাধুলা, মারামারি,যেকোন প্ল্যানেই বেশী সক্রিয়। তাদের শারীরিকভাবে শক্তিশালী ভাবা হয়, তাই তারা সাথে থাকলে সকলেই নিরাপদ বোধ করে। এজন্য সকলেই এরকম ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হয়।


৩. পরিপাটি বেশভূষা

একটি ছেলের চেহারা যেমনই হোকনা কেন, তার পোশাক যদি পরিপাটি এবং রুচিশীল, স্টাইলিশ হয়, সকলেই তাকে পছন্দ করবে। চেহারা সৃষ্টিকর্তার দান, কিন্তু মানুষের রুচি, পরিচ্ছন্নতা,ড্রেস সেন্স এগুলো নিজের ভিতর সৃষ্টি হয়। মেয়েরা স্বামী বা প্রেমিক হিসেবে পরিপাটি গোছানো ছেলেদেরই পছন্দ করেন।


আর বন্ধু, আত্মীয় মহলে রুচিশীল ছিমছাম ছেলেদের সবাই আলাদা কদর করে,মানুষ স্বভাবতই দেখতে গোছালো সবকিছুর প্রতিই আকর্ষন অনুভব করেন। তাই সকলে পরিপাটি পোশাকের ছেলেদের সকলেই পছন্দ করে।


৪.পরিচ্ছন্নতা

পরিচ্ছন্নতা এমন একটি গুন যা সকলের মাঝে থাকা একান্ত আবশ্যক। একটি ছেলদ দেখতে সুন্দর, সুঠাম স্বাস্থ্য,লম্বা কিন্তু পরিচ্ছন্ন নয় এমন ছেলেকে কেউ পছন্দ করবেনা। পক্ষান্তরে সুন্দর নয় কিন্তু পরিচ্ছন্ন এমন ছেলেদের সবাই পছন্দ করে।


৫.ভারী কন্ঠ

পুরুষের যে সকল গুন সকলকে আকৃষ্ট করে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তার পুরুষালী ভারী কন্ঠ। যেসব পুরুষের কন্ঠ পাতলা বা বাচ্চাদের মত তাদেরকে মানুষ অতটা সমীহ করেনা। ভারী কন্ঠের পুরুষরা সহজেই অন্যকে নির্দেশ দিতে পারেন, তাদের কন্ঠের গাম্ভীর্যে মানুষ সহজেই তাদের নির্দেশ পালন করে।


৬.সৎ চরিত্র

চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। যার চরিত্র সুন্দর নয়, সে হাজার সুদর্শন হলেও তার সংগ পরিত্যাজ্য। যেসব পুরুষ তার সমসাময়িক ছেলেদের চেয়ে আলাদা ধরনের, যারা চঞ্চল হলেও দুশ্চরিত্র নয়, মেয়েদের উত্যক্ত করা, অভদ্রতা করা, কাউকে অসম্মান করা যাদের স্বভাব নয়, উপরন্তু মানুষকে সম্মান করা, উপকার করা, মেয়েদের সম্মান করে যে পুরুষরা তাদেরকে সকলেই পছন্দের সাথে মন থেকে সম্মান করে।


ব্যক্তিত্ব এমন একটি বিষয় যা সকলের থাকেনা। সৎ চরিত্র এমন একটি অলংকার যা মানুষকে অন্যের কাছে পুজনীয় ও শ্রদ্ধার পাত্রে পরিনত করে। অনেকেই শুধু ক্ষমতার জোরে সম্মান আশা করেন। কিন্তু ক্ষমতা দিয়ে হয়ত ভয় দেখিয়ে সম্মান আদায় করা যায়, কিন্তু চরিত্র সুন্দর হলে সম্মান এমনিতেই পাওয়া যায়।


৭.চঞ্চলতা

চুপচাপ শান্ত ছেলেদের চেয়ে চঞ্চল,  দুষ্টু ছেলেদের সবাই পছন্দ করে। দুষ্টু মানেই খারাপ নয়। যারা উচ্ছ্বল তাদের প্রতি সবাই আকৃ্ষ্ট। সারাদিন হইচই করতে ছেলেরা মানুষ হিসেবে অনেক সক্রিয় হয়, সবার বিপদে এদেরকেই এগিয়ে যেতে দেখা যায়।


৮.বিনয়ী

স্বভাবে বিনয়ী পুরুষের বিনয়ে সবাই মুগ্ধ হয়। পুরষ দেখতে যেমনই হোক, যদি সবার সাথে শুভেচ্ছাসূচক বাক্য ব্যবহার করে খোজখবর নেয়, গুরুজনদের সম্মান করে, ছোটদের স্নেহের চোখে দেখে তাহলে সবাই তাকে পছন্দ করে। সবাই এ সকল পুরুষকে উদাহরনস্বরুপ ব্যবহার করে বলে যে, হতে হলে এমন বিনয়ী ভদ্র হওয়া উচিত।


৯.ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠিত 

বর্তমানে পুরুষের সফলতা ব্যর্থতা পরিমাপ করা হয় তার ক্যারিয়ার দিয়ে। যেসব পুরুষ আর্থিকভাবে ধনী বা বড় চাকুরি বা ব্যবসায় করে তাকে সব মেয়েই জীবনসংগী হিসেবে পছন্দ করে। কারন তারা মনে করে এ সকল পুরুষরা তাদের আর্থিকভাবে নিরাপত্তা দিতে পারবে।


একটি সংসার ভালভাবে চালাতে হলে অর্থের প্রয়োজন। আর অর্থের বিষয়টি সকলেই বড় করে দেখে। যেসব পুরুষ প্রতিষ্ঠিত তাদেকে অন্যরা অনুকরনীয় আদর্শ হিসেবে দেখে থাকে। 



১০.মানবিকতা

পুরুষের মানবিক গুনাবলি তাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। যারা মানুষের বিপদে ঝাপিয়ে পড়ে, যেকোন আপদ অথবা দুর্যোগে সবার পাশে থাকে, ধনী গরিব ভেদাভেদ না করে সবার উপকার করে তাদেরকে সবাই মন থেকে ভালভাসে, আশীর্বাদ করে।


শুধু মানুষের প্রতি নয়, পশুপাখির প্রতি ভালবাসাও মানবিক গুনাবলির মধ্যে অন্যতম। এ জাতীয় পুরুষরা সমাজের অন্যদের মধ্যে মানবিক গুনাবলি জাগিয়ে তোলে। যারা তাদের সান্নিধ্যে থাকে তারাও ভাল মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে।



উপসংহার

পুরুষ অর্থেই আমরা বুঝি নিরাপত্তা ও শক্তির প্রতীক। প্রাচীনকালের বিভিন্ন পুরানে আমরা পুরুষের শারীরিক গঠন ও শক্তির পরিচয় পাই। বর্তমানে পুরুষ বলতেই বলশালী হতে হবে এমন ধারনার চেয়ে মানবিক গুনাবলি, ক্যারিয়ার,পড়াশুনা, ইত্যাদি গুনাবলিকেও বড় করে দেখা হয়।


তবে যাই হোক, এখনও মেয়েরা সংগী হিসেবে শক্তিশালী পুরুষ পছন্দ করে, কারন তারা ভাবে এ ধরনের পুরুষ তাদেরকে শারীরিকভাবে নিরাপত্তা দিতে পারবে। বিত্ত এবং ক্ষমতাকেও বড় করে দেখা হয়, কারন বিত্ত ও ক্ষমতা পুরুষের প্রভাব আরও বাড়িয়ে তোলে, সবাই তাদের সমীহ করে। আশা করি পুরুষের চমৎকার কিছু বৈশিষ্ট্য জানতে


আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। 

ধন্যবাদ সবাইকে।