ঘরে বসে স্মার্টফোন দিয়েই উপার্জন করুন মাসিক ১৫০০০-২০০০০ টাকা: দেখুন কিভাবে
আপনি কি ঘরে বসে আপনার স্মার্টফোন দিয়েই কাজ করে ইনকাম করতে চান? হতে চান স্বাবলম্বী? তাহলে আর দেরি না করে এখনি পড়ুন আমাদের আজকের পোস্ট আর জেনে নিন কিভাবে করবেন এই অসাধ্য সাধন।

বর্তমানে অনলাইনে কাজ করে আয়ের ধারনাটি খুবই জনপ্রিয়। সবাই ই নিজে আয় করতে চান। যেহেতু অফিসিয়াল কাজের সুযোগ সবখানে সমান নয়, সব কাজ সবাই জানেন ও না, তাই ফ্রিল্যান্সিং এর গ্রহনযোগ্যতা বেড়েই চলেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ফ্রিল্যান্সিং কি মোবাইল থেকে করা যায়? সবার কাছেই ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার এবং ব্রডব্যান্ড কানেকশন নেই।
তাই অনেকেই এটা ভেবে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে আগ্রহী হন না, অনেকেরই হয়ত ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন কাজে আগ্রহ এবং প্রতিভা রয়েছে, কিন্তু যথাযথ সরঞ্জামের অভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারছেন না। প্রথমেই জেনে রাখা ভাল, ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত, এখানে অনেক কাজই রয়েছে।
আপনি চাইলেই এমন ধরনের কিছু কাজ দিয়ে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন যা আপনার যোগ্যতার সাথে মেলে। এটা বলার কারন হচ্ছে, সবাই সবকাজে পারদর্শী নয়, সেটা হওয়া গুরুত্বপূর্ণও নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে কাজটি আপনি করছেন, সেটা কত ভালভাবে করছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার সফলতা ও ব্যর্থতা।
এখন আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এ আপনার ক্যারিয়ার গড়তে চান সেক্ষেত্রে শুধু মোবাইলে কাজ করে সেটা সম্ভব না হওয়ার সম্ভাবনা ৯০%। কারন এমন কিছু সফটওয়্যার রয়েছে যা শুধুমাত্র কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়। আবার সকল সাইট মোবাইলে লোড ও হতে চায়না, অনেক সময় লাগে। কিন্তু এ সকল অসুবিধা সত্ত্বেও মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা সম্ভব। তবে এটা প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ, এক্সপার্ট লেভেলের কাজ শিখতে ও করতে আপনাকে অবশ্যই।
ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের সাহায্য নিতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে প্রথমে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ, যেমন ব্লগ লেখা, কন্টেন্ট রাইটিং, ফটো এডিটিং, পিটিসি, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্স, সার্ভে ইত্যাদি কাজগুলো করতে পারেন। যখন দেখবেন আপনি বেশ কিছু টাকা রোজগার করেছেন তখন এই টাকা থেকে নিজের জন্য একটি ল্যাপটপ কিনে নিতে পারেন।
আজ আমরা আলোচনা করব মোবাইলে কোন কাজগুলো করতে পারবেন, এবং এক্ষেত্রে কি সমস্যা হতে পারে তার বিস্তারিত নিয়ে। চলুন প্রিয় পাঠক, দেরী না করে আলোচনা শুরু করা যাক।
১. সার্ভে
সার্ভের কাজ বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের পন্য বা সেবার জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে সার্ভে করে থাকে। এই সার্ভের কাজগুলি নিয়ে থাকে বিভিন্ন গবেষনা বা সার্ভে কোম্পানি। তারা আবার অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে কাজগুলো করিয়ে নেন।
আপনাকে প্রথমেই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে একাউন্ট ওপেন করতে হবে। আমেরিকান আইপি কিনে আপনাকে প্রতি মাসের কাজ করতে হবে। বিশ্বস্ত সাইটে কাজ করতে পারলে প্রতিদিন ৮-১০ ডলার অনায়াসে আয় করা সম্ভব। কাজটি শুরু করতে পারবেন মোবাইল থেকেই। কিন্তু বিভিন্ন সাইট লোড হতে সমস্যা হতে পারে। তবে ছোটখাট সমস্যা এড়িয়ে প্রাথমিকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
আপনি যদি নিজের হাতখরচ চালিয়ে নিতে চান তাহলে মোবাইল থেকে কাজ করাই যথেষ্ট। তবে এক্সপার্ট লেভেলের কাজে আপনার প্রয়োজন হবে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কাজের রোজগার থেকেই কিনে নিতে পারেন ল্যাপটপ।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে ফেসবুক থেকে প্রচুর পরিমাণে উপার্জন করবেন? বিশেষত মেয়েরা
২. কনটেন্ট রাইটিং
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং কাজে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কনটেন্ট রাইটিং। এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী তরুন তরুনী নিজেদের আয়ের ব্যবস্থা নিজেরাই করার সুযোগ পাচ্ছেন।
বেশীরভাগ নিউজ পোর্টালই তাদের কাজের জন্য মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছেন, কারন এ কাজগুলো মোবাইল থেকে করা সম্ভব। এবং যেহেতু সবার কাছেই ল্যাপটপ নেই, তাই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সবাই এ কাজগুলো করতে পারবেন না, যদিনা মোবাইল ব্যবহার করে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়।
আপনি মোবাইল ব্যবহার করেই অধিকাংশ নিউজ পোর্টালে আর্টিকেল বা কন্টেন্ট লিখতে পারবেন। তবে মার্কেটপ্লেস এ নিয়মিত লিখতে চাইলে এবং বড় কাজ পেতে চাইলে প্রচুর গবেষনা এবং লেখালিখির প্রয়োজন হবে। তখন ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের সাহায্য নিতেই হবে।
৩. ফটো এডিটিং
বর্তমানে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা মোবাইল থেকে তোলা ছবি বিভিন্ন সাইটে বিক্রয় করার কাজ করে থাকে।আপনি যদি মোবাইলে ভাল ছবি তুলতে পারেন এবং সামান্য ফটো এডিট করতে পারেন, তাহলে আপনি খুব সহজেই মোবাইল থেকে তোলা ছবি এসব সাইটে বিক্রি করে ভাল টাকা রোজগার করতে পারবেন।
আপনি গুগলে সার্চ দিলেই এমন সব ট্রাস্টেড সাইটের সন্ধান পেয়ে যাবেন। এরকম দুইটি ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট হচ্ছে istock photo এবং Art Storefronts, আপনি এই দুইটি ওয়েবসাইটে একাউন্ট করে প্রাথমিকভাবে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তবে ফটোশপের এডভান্স লেভেলের কাজ করতে আপনার যেসব সফটওয়্যার প্রয়োজন হবে তা ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে পাবেন।
আরও পড়ুনঃ বাড়িতে থেকেও উপার্জনে ব্যর্থ হওয়ার প্রধান কারণসমূহ
৪. সিপিএ মার্কেটিং
বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধি ও লিংক প্রোমোট এর কাজই মূলত সিপিএ মার্কেটিং। আপনি যেসব লিংক দেবেন তাতে ভিজিটররা প্রবেশ করলেই করলেই আপনি কমিশন পাবেন, তারা যদি লিংকে প্রবেশ করে কিছু কেনেন তাহলেও আপনি কমিশন পাবেন।
এই জাতীয় কাজগুলো মোবাইলের মাধ্যমেই করতে পারবেন। তবে আপনি যদি বিস্তৃত আকারে এবং এক্সপার্ট হিসেবে কাজগুলো করতে চান তাহলে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ অবশ্যই প্রয়োজন হবে।
৫. ডিজিটাল মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে সরাসরি পন্য বিক্রয়ের বা প্রমোশনের কাজ। আপনি যদি ইনফ্লুয়েন্স করে পন্য ক্রয় করাতে পারেন তাহলেই আপনি কমিশন পাবেন। সেক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন লিংক বা ওয়েবসাইট প্রোমোট করতে পারেন আপনার প্রোফাইল বা পেজ এ। খুব বিস্তৃত কাজ না হলে ডিজিটাল মার্কেটিং ফোন থেকেই করা সম্ভব।
৬. ইউটিউবে ভিডিও আপলোড
ফোন থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিও করে আপলোড দিতে পারেন ইউটিউবে। এটা ফোন থেকেই সবচেয়ে ভাল সম্ভব। তবে এডিটিং, সাউন্ড এডিটিং এবং প্রেজেন্টেশন এর কাজে ল্যাপটপের প্রয়োজন পড়ে। তবে প্রাথমিক ভাবে শুরুর জন্য মোবাইল থেকেই কাজটি করতে পারেন। পরে আয় ভাল হলে নিজের টাকায় কিনতে পারেন ল্যাপটপ।
আরও পড়ুনঃ মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করুন কন্টেন্ট রাইটিং থেকে
উপসংহার
হাতের স্মার্টফোনটি শুধুমাত্র সময় কাটানোর মাধ্যম না হয়ে, আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠুক, এটাই আমাদের পোস্ট লেখার উদ্দেশ্য। অনেকেই প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও ল্যাপটপ বা,ডেস্কটপ নেই বলে কোন কাজ না করে বাড়িতে বেকার সময় কাটাচ্ছেন। নিজেদের হাত খরচের জন্য অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে আছেন।
এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য বিভিন্ন ব্লগ থেকে ধারনা নিয়ে নিজের ভাললাগার কাজটি শুরু করুন মোবাইল থেকেই। কাজ করতে থাকুন, আগ্রহ থাকলে পরবর্তীতে এক্সপার্ট লেভেলের কাজ শিখে হয়ে উঠতে পারেন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার বা ইউটিউবার।
আশা করি পোস্টটি আপনাদের উপকারে আসবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।