জরায়ু ক্যান্সারের প্রধান কিছ লক্ষণ সমূহ, এখনি জেনে নিন!

এই পরিবর্তনটা অবশ্যই স্বাভাবিক না। প্রথমে নারীরা এসব পাত্তা নাও দিতে পারেন। কিন্তু আপনার মনে রাখা উচিত যে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের মধ্যে পেট জিনিসটা সবথেকে বেশি সেনসিটিভ। কেননা খাবার হজম হওয়া থেকে শুরু করে গর্ভধারণ সবকিছুই এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।

জরায়ু ক্যান্সারের প্রধান কিছ লক্ষণ সমূহ, এখনি জেনে নিন!
জরায়ু ক্যান্সারের প্রধান কিছ লক্ষণ সমূহ, এখনি জেনে নিন!

যত রকমের শারীরিক ক্যান্সার রয়েছে তার মধ্যে নারীদের জরায়ু ক্যান্সার সবথেকে বেশি হয়ে থাকে। বয়স উচ্চতা, শারীরিক আকৃতি, সন্তান ধারণে সমস্যা হওয়া, অতিরিক্ত ওজন, কোন দুর্ঘটনা অথবা বংশগত কারণে এই জরায়ু ক্যান্সার হয়ে থাকে।


প্রথম পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে অপারেশন করে জরায়ু ফেলে দেওয়ার মাধ্যমে নারীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়। কিন্তু যদি খুব বেশি দেরি হয়ে যায় তবে আর জরায়ু ক্যান্সার আক্রান্ত নারীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। আর এইজন্যই একটা বয়সের পর থেকে নারীদের সাবধান থাকতে হবে।


সবথেকে ভালো হয় যদি বেশ কিছুদিন পর পর চেকআপ করিয়ে নেওয়া হয় যে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার রয়েছে কি-না?


অবশ্য সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী থাকা যায় না, সব সময়ে চেকআপের উপর থাকাটাও আর্থিক সংকটের কারণে সম্ভব হয় না।


তাই আজকের আর্টিকেলটিতে জরায়ু ক্যান্সারের প্রধান কিছু লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। যা আপনি আপনার শরীরে দেখা মাত্রই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নেবেন  আসলেই আপনি জরায়ু ক্যান্সারের ভুক্তভোগী কি-না।


তাহলে চলুন আর দেরি না করে জরায়ু ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

 
যৌনাঙ্গের চারপাশে চাপ লাগা

জরায়ুর রাস্তা শেষ হয় যৌনাঙ্গের মাধ্যমে। আর তাই যদি জরায়ুতে ক্যান্সার কোষ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে, তখন যৌনাঙ্গের চারপাশের চাপ লাগার মত অনুভূত হতে থাকবে। সাধারণত কোন সমস্যা না থাকলে এইরকম অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায় না।


তাই যদি যৌনাঙ্গের চারপাশের চাপ লাগার মত অনুভব অনুধাবন করতে পারেন তবে ব্যাপারটা একটু সিরিয়াসলি নিবেন। এছাড়াও জরায়ু ক্যান্সার হলে ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করার ইচ্ছা জাগতে পারে। অবশ্য এটি ডায়াবেটিসেরও কারণ। কিন্তু তবুও সতর্ক থাকতে দোষ কি?

  

বিভিন্ন রকমের  পেটের সমস্যা

যেহেতু  জরায়ু তলপেটে অবস্থিত। তাই জরায়ুর ক্যান্সার হলে পেটের উপর অনেক প্রভাব পড়ে থাকে। আর এ কারণেই জরায়ুতে ক্যান্সার হলে পেটে নানা রকমের সমস্যা দেখা যায়। যে নারীর জরায়ু ক্যান্সার হয়েছে তার কিছুদিন পর পর পেটে গ্যাস হতে পারে। গ্যাস জমার ফলে প্রচুর পরিমাণে অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে।


এছাড়াও খাবার সহজে হজম হতে চায় না। বারবার বদহজমের সমস্যা দেখা যায়। কোন রকমের ভেজাল জাতীয় খাবার না খেলেও  দেখা যায় তার কোষ্ঠকাঠিন্যের অসুবিধা লেগেই থাকে। অনেক ক্ষেত্রে হালকা খাবার খাওয়ার পর মনে হয় পেট ভর্তি হয়ে আছে।


যে জায়গায় পেট ভরার মতন খাবার তিনি খান-ই না। নানা কারণে পেটে অস্বস্তি লাগা লেগেই থাকে।
 
 

পেটে নানা পরিবর্তন দেখতে পাওয়া

স্বাভাবিক অবস্থায় পেট যেরকম দেখতে লাগার কথা জরায়ু ক্যান্সারের পর সে রকম দেখতে লাগে না। অর্থাৎ জরায়ুতে ক্যান্সার কোষ সংক্রমণ হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে পেটে পরিবর্তন দেখা যায়।


এই পরিবর্তনটা অবশ্যই স্বাভাবিক না। প্রথমে নারীরা এসব পাত্তা নাও দিতে পারেন। কিন্তু আপনার মনে রাখা উচিত যে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের মধ্যে পেট জিনিসটা সবথেকে বেশি সেনসিটিভ। কেননা খাবার হজম হওয়া থেকে শুরু করে গর্ভধারণ সবকিছুই এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।


সুতরাং পেটের কোন রকমের গন্ডগোল আপনার শরীরের জন্য বিরাট বড় খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন করতে সক্ষম। তাই এই ছোট বিষয়টি মাথায় রেখে পেটের প্রতি যত্নশীল হন এবং যদি কোনো রকমের পরিবর্তন দেখতে পান সেটা এড়িয়ে না গিয়ে বরং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

 

পেটে অতিরিক্ত ব্যথা

জরায়ু ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হচ্ছে পেটে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যথা করা কিংবা  কোন কারণ ছাড়াই পেট ফুলে থাকা। পেটে ব্যথা  একটা সময় সহ্যের সীমানা ছাড়িয়ে যায়। তখন নারী আর এই ব্যথা নিতে পারে না।


আবার অনেক সময় দেখা যায়, কম কম কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী পেটে ব্যথা হতে পারে। উভয় ধরনের ব্যথাই ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ।

 

বমি বমি ভাব

অযথাই বমি বমি ভাব হওয়া কিংবা বারবার বমি হওয়া পেটে কোন রকমের খাবার না থাকলেও মাথা ঘোরানো অনুভূতি এবং সেই সাথে বমি বমি ভাব হওয়া জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ।


ক্ষুধা কমে যা
ওয়া

দেখা যায় যে, বেশ সময় ধরেই পেট ভরা ভরা লাগে। কম খাবার খেলেও মনে হয় যে পেট অনেক ভরে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে নারীর ক্ষুধা কমে যেতে থাকে।


আর এই ক্ষুধা কমে যাওয়ার ফলে মুখের রুচি চলে যায় এবং নারী পুষ্টিহীনতায় ভুগতে থাকে। শরীরের দুর্বলতার সুযোগ খুঁজে ক্যান্সার কোষ ক্রমান্বয়ে বেড়ে ওঠে।


অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া বা কমে যাওয়া

শরীরের ওজন হঠাৎ করেই কোন কারণ ছাড়া বেড়ে যেতে পারে অথবা একেবারে কমে যেতে পারে। তবে যেটাই হোক না কেন দুটোই শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং দুটো একই সাথে জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ।


সহবাসে  ব্যথা পাওয়া

যদিও সহবাস স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের জন্য একটি আনন্দঘন মুহূর্ত। তবুও যে নারী জরায়ু ক্যান্সারে ভুগছেন তার যৌনাঙ্গের পথে নানা রকমের সমস্যা হওয়ায় সহবাসে প্রশান্তি পাওয়ার বদলে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা পেয়ে থাকেন।


যদি কখনো এই বিষয়টি খেয়াল করে থাকেন তবে মোটেও অবহেলা করবেন না। কিংবা লজ্জায় চেপে ধরে রাখবেন না। অবশ্যই এই বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।


 

অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করা

কোন কাজ না করেও অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ অনুভব হতে পারে। অবশ্য একই সাথে এটি শরীরের গ্লুকোজ কমে যাওয়ার  লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে।

 

মেনোপজ হওয়া সত্ত্বেও ব্লিডিং

একটা বয়সের পর পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায় এবং সেই অবস্থাটাকে মেনোপজ বলা হয়। কিন্তু কোনো নারীর মেনোপজ হওয়ার পরেও যদি  ব্লিডিং হতে থাকে তবে সেটা জরায়ুর লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে।


উক্ত লক্ষণগুলোর মধ্যে ৭০% শতাংশ যদি আপনার ভেতর প্রকাশ পায় তবে হেলাফেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। সময় থাকতেই সুচিকিৎসা গ্রহণ করুন তাহলে পরবর্তীতে আপনাকে বেশি ভুগতে হবে না।



সুপ্রিয় পাঠক আশা করে আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জরায়ুর ক্যান্সার এর প্রধান লক্ষণ সম্পর্কে অবগত হয়েছেন।