জিভে জল আসার মতো খুলনার বিখ্যাত ৫টি খাবার
খুলনায় অনেক ধরনের খাবারই বিখ্যাত তবে তার মধ্যেও কিছু কিছু খাবার একদমই অন্যরকম। আজ আমি খুলনার খাবার গুলো সম্পর্কে জানাবো। জানতে চাইলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।

খুলনা যেমন বিখ্যাত তার সুন্দরবনের জন্য ঠিক খাবারের দিক থেকেও কম যায় না। সুলভমূল্যে খুব সুস্বাদু সুস্বাদু খাবার পাবেন এই খুলনায়।
যারা ভবিষ্যতে খুলনায় বেড়ানের পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য এটি জানা খুবই প্রয়োজন। কারণ অনেকেই কোথাও বেড়াতে গেলে বুঝে উঠতে পারেন না যে সেখানের কি খাবার ভালো পাওয়া যায় যায়।
তাই কোথাও বেড়াতে গেলে আগে থেকেই যদি ঐ শহরের বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে জানা থাকে তাহলে খুব ভালই হয়।
খুলনায় কোন কোন খাবার গুলো বেশি বিখ্যাত, কেমন দাম এবং কোথায় পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে জানাবো। তবে চলুন জেনে আসি খুলনার বিখ্যাত ৫টি খাবার সম্পর্কে।
১. মেজবান বাড়ির সরিষা-খাসি
জিরো পয়েন্ট থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসতে হাতের ডান দিকে ছোট ছিমছাম একটা রেস্টুরেন্ট পড়বে, নাম মেজবান বাড়ি।
যারা খুব সুস্বাদু এবং অন্য মাত্রার খাবার চান তারা চলে আসবেন মেজবান বাড়ির সরিষা তেলে রান্না করা খাসির মাংস খেতে।
মোটে চারটে টেবিলের এই রেস্টুরেন্ট ভোজনরসিক মানুষে থাকে পরিপূর্ণ। সবচেয়ে সুন্দর হলো মেজবানের খাবার পরিবেশনের ধরণটা।
মাটির সুন্দর পালিশ করা পাত্রে পরিবেশন করা হবে ভাত, ডাল আর সরিষা খাসি। যতবার খুশি ততবার ভাত নেয়া যাবে এমন একটা প্যাকেজে সঙ্গে থাকে খাসি অথবা গরু, একটা ঠাণ্ডা পানীয় আর অফুরন্ত ডাল। সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ১৮০ টাকা।
২. কাচ্চিঘরের কাচ্চি বিরিয়ানি
খুলনার কাচ্চি বিরিয়ানির ঐতিহ্য বহুদিন ধরে টিকিয়ে রাখা রেস্টুরেন্টের নাম কাচ্চিঘর। রয়েলের মোড়ে অবস্থিত এই রেস্টুরেন্টের ভেতরটা বেশ ভালো করে সাজানো।
পরিবার-পরিজন নিয়ে কাচ্চি খাওয়ার শখ জাগলে চলে যেতে পারেন কাচ্চিঘরে। খুব সুন্দর আর যত্ন করে রান্না করা খাসির কাচ্চি বিরিয়ানির সাথে অতিরিক্ত আর্কষণ হিসেবে থাকে চাটনি, বোরহানি আর সেদ্ধ ডিম।
এবং এই বোরহানি তারা পরিবেশন করবে একদম ফ্রিতে। ফ্রিতে পাওয়া জিনিসের গুণগত মান নিয়ে যাদের সন্দেহ আছে, তারা অর্ডার করতে পারেন কোমল পানীয়।
সব মিলিয়ে প্রতিজনে খরচ পড়বে ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মতো।
৩. মেগার কাচ্চি বিরিয়ানি
খুলনার নতুন রাস্তা থেকে রিক্সা নিয়ে একটু সামনের দিকে এগিয়ে গেলে হাতের বামপাশে পড়বে খুলনার বিখ্যাত কাচ্চির আস্তানা “মেগা বিরিয়ানি হাউজ”।
আধুনিক ভোজন রসিকরা ভালো খাবারের সাথে ভালো পরিবেশও চায়। সেদিক থেকে মেগা বিরিয়ানির ভেতরের পরিবেশ ছোট কিন্তু সুন্দর।
এখানকার কাচ্চি বিরিয়ানি পরিমাণের দিক থেকে একজনের জন্য প্রচুর। কাচ্চিতে মসলা আলু, চাটনি আর ডিম তো আছেই। এখানকার বোরহানিটাও বেশ ভালো।
খুলনা স্টেডিয়ামের পরের এলাকাগুলোতে এক সময়কার সবচেয়ে ভালো কাচ্চি বানানোর ঐতিহ্য ছিল মেগা বিরিয়ানি হাউজের। এখনো কাচ্চির গুণগত মান ধরে রেখেছে সগৌরবে। এখানে কাচ্চির মূল্য ১৩০ টাকা।
৪. রাজকচুরীর রাজস্থানি খাসি
খাসিটা যদি হয় একটু ভিন্নধর্মী তাহলেই তো কথাই নেই। বলছি খুলনার দৌলতপুরের রাজস্থানি খাসির কথা। সাধারণ খাসির মাংসের চেয়ে একটু অন্যরকম খাসির মাংসের স্বাদ পাওয়া যাবে রাজকচুরীতে।
গাজর-পোলাও এর সাথে পরিবেশন করা এই রাজস্থানি খাসির মাংসের চেহারা দেখেই ভোজনরসিক না হয়েও জিভে পানি এসে যাবে যে কারো।
এখানেও ব্যবহার করা হয় খাসির ঝোলের সাথে গোটা রসুন। তবে এই খাবারের একটাই ঝামেলা, পোলাওটা একটু কম দেয় তারা।
যারা প্রথমবার রাজস্থানি খাসির স্বাদ নিতে চান তারা অবশ্যই চলে আসবেন রাজকচুরীতে। এর মূল্য ১৬০ টাকা।
৫. বাঁশ বাগানের খিচুড়ি-কলিজা-মুরগী ভুনা
অনেক তো অন্যান্য খাবারের কথা হলো। এবার একটু আবহমান বাংলার বাঙালিদের বৃষ্টিবাদলের দিনে প্রিয় খাবার খিচুড়ির দিকে আসা যাক।
খুলনার মতো এত ভালো মানের ও দামে সস্তা খিচুড়ি আর কোথাও পাবেন না। তবে সবসময়ই বিশেষ কিছু জায়গা আছেই যেখানে গেলে পাওয়া যাবে সবচেয়ে ভালো স্বাদ। তেমনই একটি রেস্টুরেন্ট বাঁশ-বাগান।
বাঁশ-বাগান নাম দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। খিচুড়ি-কলিজা আর মুরগী ভুনার যে আইটেম এখানে পাওয়া যায় তা চেখে দেখলে ভক্ত হয়ে যাবেন এটার।
সোনাডাঙ্গা মজিদ সরণিতে গাজী মেডিকেলের একটু সামনে হাতের বামে গেলেই মিলবে বাঁশ-বাগান রেস্টুরেন্ট। খিচুড়ির দাম ৩০ টাকা, মুরগী ভুনা ৫০ টাকা আর কলিজা ভুনা ৬০ টাকা।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা কেমন লাগলো আজকের এই পোস্টটি! আশা করি ভালোই লেগেছে। আজ এই পর্যন্তই। আবারও নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের কাছে।
সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং শুভ প্রভাতের সঙ্গেই থাকুন। মনে রাখবেন শুভ প্রভাত নতুন নতুন বিষয় নিয়ে কথা বলে আপনাদের জন্যই। ধন্যবাদ।