টোনার কি? টোনার ব্যবহারের ৫টি উপকারিতা জেনে নিন

আপনারা সবাই কি রুপচর্চার সব নতুন নতুন উপায় সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চান? তাহলে আর দেরি না করে, এখনি আমাদের আজকের "টোনার(Toner)" বিষয়ক পোস্ট পড়ে ফেলুন। আর নিয়মিত রুপচর্চা ও অন্যান্য সকল বিষয় সম্বন্ধে আপডেট নিউজ পেতে আমাদের পোর্টাল নিয়মিত ভিজিট করুন।

টোনার কি? টোনার ব্যবহারের ৫টি উপকারিতা জেনে নিন
টোনার কি? টোনার ব্যবহারের ৫টি উপকারিতা জেনে নিন


মুখের ত্বক সুন্দর রাখতে আমরা সবাই একটি রুটিন মেনে চলার চেষ্টা করি। ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করেই অনেক সময় ত্বকের যত্ন নেওয়া শেষ বলে ভাবি আমরা। ত্বক কেবল পরিষ্কার রাখলেই তা সুন্দর, উজ্জ্বল ও সতেজ দেখায় না।


এরসাথে আরো কিছু ধাপ অনুসরণ করা প্রয়োজন। আর সেই ধাপগুলো হচ্ছে ত্বক পরিষ্কার করার পর টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা। আমরা বেশিরভাগ সময় ত্বক পরিষ্কার করার পর শুধু ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করি, কিন্তু টোনার ব্যবহার করিনা।


অনেকে হয়ত জানেনও না, যে টোনার আসলে কি? বা এটার কাজ ও উপকারিতা কি? কেনই বা টোনার ব্যবহার করা প্রয়োজন?


আজ আমাদের আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে টোনার কি? এবং টোনার ব্যবহারের উপকারিতা কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত। চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।


টোনার কি?

টোনার এক ধরনের তরল যাতে ত্বকের জন্য উপকারী এসিড থাকে, যা ত্বকের লোমকূপ সংকুচিত করে। ত্বকের ঢিলেঢালা ভাব কমিয়ে ত্বক টানটান ও মসৃণ রাখে। অ্যালকোহলিক টোনারের চেয়ে ওয়াটার ও গ্লিসারিনভিত্তিক টোনারগুলো বেশী ভাল কাজ করে।


এগুলো ত্বকের তেল নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে। অর্থাৎ ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা তৈলাক্ত হতে দেয়না। ত্বক স্বাভাবিক রাখে।


যারা ত্বকের পরিপূর্ন যত্ন নিতে চান, এবং ত্বকের অকালে বুড়িয়ে যাওয়া, বলিরেখা দূর করতে চান তারা অবশ্যই স্কিন কেয়ারে টোনার ব্যবহার করবেন। টোনার চাইলে বাড়িতে ঘরোয়া উপাদান দিয়েই তৈরি করে নিতে পারেন।


চাল ধোয়া জলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে টোনার তৈরি করতে পারেন। গ্লিসারিন ও পানি মিশিয়ে স্প্রে বোতলে রেখে টোনার হিসেবে স্প্রে করতে পারেন। গোলাপজল ও লেবুর রস মিশিয়ে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।


এছাড়া এলোভেরা জেল ও জল মিশিয়েও টোনার তৈরি করতে পারবেন। গ্রিনটিও টোনার হিসেবে খুবই কার্যকর, গ্রিন টি ফ্রিজে আইসকিউব করেও টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। টোনার ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করুন।


টোনার হাত দিয়ে ব্যবহার করবেন না, এটা তুলা অথবা কটন বাড এ নিয়ে মুখে লাগাবেন। সবসময় ত্বকে জল লাগানোর পর অথবা ত্বক পরিষ্কার করার পর টোনার ব্যবহার করবেন।


বাড়িতে তৈরি টোনার ৭ দিনের বেশি সংরক্ষণ করা উচিত নয়। এতে করে টোনারের গুনগত মান নষ্ট হয়ে যায়, এবং এতে কাজ করেনা। তাই বাড়িতে তৈরি টোনার ৭ দিন ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারেন।

চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার কিছু সহজ পদ্ধতি

চুলের যত্নে ডিমের দারুন কিছু ব্যবহার ও প্যাক

এই ৫টি অভ্যাস ত্বক ভালো রাখতে অনেক জরুরী

প্রাকৃতিক উপায়ে চোখের পাপড়ি সুন্দর হবে, মাত্র ৩০ দিনে!

নখ সহসা ভেঙে যায়? নখ বড় নয় না? এই উপায় গুলো করুন


টোনার ব্যবহারের উপকারিতা -

১. ত্বকের লোমকূপ সংকুচিত করে

ত্বক ফেসওয়াশ দিয়ে ধোয়ার পর ত্বকের ধুলা-বালি দূর হয় ঠিকই কিন্তু ত্বকের লোমকূপ আলগা হয়ে যায়, এবং ত্বক ঢিলেঢালা হয়ে যায়। এর ফলে ত্বকে সহজেই বাইরের ময়লা আবার প্রবেশের সুযোগ পায় এবং ত্বকের ক্ষতি করে।


এজন্য প্রয়োজন টোনার, টোনার ব্যবহারে এতে থাকা এসিড ও গ্লিসারিন ত্বকের লোমকূপের ছিদ্র সংকুচিত করে, ত্বক মসৃণ ও টানটান থাকে। এতে করে ত্বকের অনেক সমস্যার সমাধান পাবেন সহজেই। টোনার ব্যবহারের পর এর উপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।


২. ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে

ত্বক সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করার পর তা শুষ্ক হয়ে যায়, ত্বকে আদ্রতা কমে যায়। তখন ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে কোষগুলো বেশী মাত্রায় কাজ করে ফলে ত্বকে আরও বেশী তেল নিঃসরণ হয়।


কিন্তু টোনার ব্যবহারের ফলে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে, এবং টোনার ত্বকের আদ্রতা লক করে রাখে, ফলে ত্বক তৈলাক্ত হয়না, সাথে আদ্রতাও বজায় থাকে। এজন্য মুখ ধোয়ার পরপরই টোনার ব্যবহার করুন। তারপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।


৩. ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে

ত্বকের লোমকূপের গভীরে অনেক ময়লা থাকে, যা জমে ব্ল্যাকহেডস, পিম্পল হয়ে থাকে। এগুলো দূর করতে ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন।


কিন্তু ত্বক পরিষ্কারের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে টোনার ব্যবহার করলে লোমকূপের ছিদ্রগুলো লক হয়ে যায়, লোমকূপের ছিদ্রে কোন ময়লা ক্ষতিকর উপাদান প্রবেশ করতে পারেনা। ফলে ত্বক সুরক্ষিত থাকে। ত্বকের ক্ষতি হয় মূলত ত্বকের লোমকূপে ময়লা ও তেল জমে তা বন্ধ হয়ে গেলে।


আর তা দূর করতে ক্লিনিং করা হয়। কিন্তু এরপর লোমকূপের গোড়া অরক্ষিত হয়ে পড়ে। এ থেকে ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে টোনার।


৪. মুখের বাড়তি লোম দূর করে

আমাদের অনেকেরই মুখে লোম রয়েছে। হরমোনের কারণে মুখের লোমের পরিমাণে তারতম্য হয়, সবার মুখে লোমের পরিমাণ সমান নয়। কিন্তু যাদের মুখে লোম বেশি তারা কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেও তা ভালভাবে মুখের সাথে মেশেনা।


ফলে মেক-আপ করলেও ত্বক সুন্দর দেখায় না। মুখের বাড়তি লোমের কারণে ত্বক কালচে দেখায়, নিয়মিত টোনার ব্যবহার করলে এই ফেসিয়াল হেয়ার গ্রোথ কমে যায়। ফলে ত্বক আরও উজ্জ্বল ও টানটান দেখায়। তাই ফেসিয়াল হেয়ার কমাতে অন্য কোন প্রোডাক্ট না ব্যবহার করে ভরসা রাখতে পারেন টোনারের উপর।


৫. বয়সের ছাপ দূর করে

ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যাক এটা আমরা কেউই চাই না। ত্বকের যত্ন না নিলে যেমন বয়সের ছাপ পড়ে যায়, তেমনি অতিরিক্ত যত্নও খুব দ্রুত ত্বক পাতলা করে ফেলে। তখন খুব দ্রুত বয়সের ছাপ, বলিরেখা পড়া শুরু হয়।


ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করা, স্ক্রাবিং ও মেকআপের কারণে ত্বকে দ্রুত ভাজ পড়ে যায়, ত্বকের টাইটভাব থাকেনা। কিন্তু টোনার ব্যবহার করলে ত্বকের টাইট ভাব বজায় থাকে, ফলে ত্বকে বলিরেখা বা বয়সের ছাপ পড়তে পারেনা। এজন্য ত্বকচর্চার রুটিনে সবসময়ই টোনার রাখুন। তাতে ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকবে।


উপসংহার

টোনার ত্বক পরিচর্যার একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। আপনি যদি পরিপূর্ণ স্কিন কেয়ার করতে চান, এবং ত্বক বয়সের ছাপমুক্ত, উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে চান, তাহলে অবশ্যই টোনার ব্যবহার করুন। এটা ব্যবহারে ত্বকের নানাবিধ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। কখনোই ত্বকচর্চার রুটিন থেকে টোনার বাদ দেবেন না, এতে ত্বকের ক্ষতি হবে।


আশা করি আজকের পোস্টটি থেকে টোনার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। পোস্টটির বিষয়ে কোন তথ্য জানানোর হলে বা কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করুন। আমরা অবশ্যই তথ্য জানিয়ে আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।


ধন্যবাদ সবাইকে।