ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এগুলি অবশ্যই করবেন
ডায়াবেটিস হলে আর ছেড়ে যায় না। তাই সবসময় ডায়াবেটিস থেকে বেঁচে থাকতে হবে। কীভাবে? আর্টিকেলটি পড়ুন।

ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে কে না চায়! প্রকৃতপক্ষে ডায়াবেটিস এখনও আতঙ্কের নাম। এর মূল কারণ হচ্ছে ডায়াবেটিস একবার হয়ে গেলে সহজে চলে যেতে চায় না।
সারাজীবন ডায়াবেটিস নিয়ে ভুগতেও মানুষের অনেক কষ্ট হয়।
একবার ডায়াবেটিস ধরে বসলে আর চলে যেতে চায় না। এটাই মূল সমস্যা। তা ছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে শরীরের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করাও খুব একটা সহজ না। প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের চেকআপ এর উপর থাকতে হয়।
সেই সাথে যারা মিষ্টি খেতে খুব বেশি পছন্দ করেন, তাদের জন্য ডায়াবেটিস একটা দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। মিষ্টি প্রিয় ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস হলে তারা বেশ হতাশ হয়ে পড়ে।
হতাশ হওয়াটাই স্বাভাবিক যখন কোন ব্যক্তি তার নিজের পছন্দ মতো খাবার থেকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দূরে রাখার মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তখন তার জন্য ভেঙে পড়াটাই মানায়।
তবুও আপনি মিষ্টি প্রিয় হোন আর না হন, ডায়াবেটিস হোক এটা আপনারা নির্ঘাত কেউই চান না।
আর এই ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে আপনার লাইফ স্টাইল এর উপর বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন আনতে হবে। আপনি যদি আপনার ইচ্ছামত লাইফ স্টাইল যাপন করতে চান, তবে কিন্তু হবেনা।
নির্দিষ্ট নিয়মে জীবনকে তৈরি করতে থাকলে আপনি একটা বয়সের পর ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত জীবন যাপন করতে পারবেন।
ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকার জন্যে আপনার লাইফ স্টাইলে যে সকল পরিবর্তন আনতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো। তাই সুপ্রিয় পাঠক আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে দেখুন।
হাঁটতে বের হওয়া
ডায়াবেটিস কন্ট্রোল রাখার জন্য চিকিৎসকেরা প্রত্যেক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের হাঁটতে বের হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।
প্রতিদিন সকালবেলা অথবা বিকালের দিকে হাঁটতে বের হলে শরীর থেকে ঘাম নিঃসৃত হয়। একই সাথে শরীরের ব্যায়াম হয়।
এই ব্যায়াম এর কারণে শরীর টাইট-ফিট অবস্থায় থাকে। একই সাথে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ওভারঅল ডায়াবেটিস হলে হাঁটতে বের হওয়া বাধ্যতামূলক।
শুধু তাই নয়, ডায়াবেটিস মুক্ত জীবন যাপন তথা যাতে আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা না হয়, সে কারণেও আপনাকে প্রথম থেকে হাঁটাহাঁটির অভ্যাস চালু রাখতে হবে।
সুতরাং ডায়াবেটিস মুক্ত জীবন পেতে হলে প্রতিদিন হাঁটতে বের হন।
ফাইবার বেশি খাওয়া
রাফেজ বা ফাইবারযুক্ত শাকসবজি খাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি কার্বোহাইড্রেট খাদ্য বেশি খেয়ে থাকেন, তবে সেটা আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
সুতরাং আপনার উচিত কার্বোহাইড্রেট এর মত খাদ্য খাওয়া একেবারেই কমিয়ে দিয়ে এর পরিবর্তে ফাইবার জাতীয় খাদ্য বেশি বেশি খাওয়া।
মেথি খাওয়া জরুরি
মেথির বিভিন্ন পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে অনেকের জানা থাকলেও কেউ সেভাবে মেথি খেতে চান না বা পছন্দ করেন না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মেথি খেলে আপনার শরীরের নানা রকমের উন্নতি সাধন হয়।
সেই সাথে মেথি প্রতিদিন খাওয়া ডায়াবেটিসের সমস্যার সমাধান করে থাকে।
সুতরাং চেষ্টা করুন বিভিন্ন খাবারের মধ্যে মেথির পাউডার ঢেলে দেওয়া অথবা মেথি বিভিন্ন শাক সবজির ভেতর দিয়ে রান্না করা। এতে করে খাবারের মান সুস্বাদু তো হবেই।
একই সাথে প্রতিনিয়ত এই খাবার কন্টিনিউ করতে থাকলে দেখা যাবে আপনি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন।
সবুজ শাকসবজি
শুধু ডায়াবেটিস নয়, বিভিন্ন রকমের শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবুজ শাকসবজি খাওয়ার ভূমিকা অপরিসীম। আপনার বয়স হয়তো কম এবং আপনি মনে করতে পারেন শাক সবজি না খেয়ে দিব্যি ভালো আছেন।
কিন্তু দেখা যায়, কম বয়সে শরীরের শাকসবজির প্রভাব ভালোমতো বুঝতে না পারলেও একটা সময়ে গিয়ে আপনি ভিটামিন আয়োডিন, আয়রন, প্রোটিন ইত্যাদির মতো বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান জনিত সমস্যায় ভুগবেন।
যা আপনার জন্য সত্যিই অসুবিধার হয়ে দাঁড়াবে।
তাই চেষ্টা করুন বয়স কম থাকতেই বেশি বেশি শাকসবজি ফলমূল খেয়ে শরীরকে ভবিষ্যতের সমস্যাগুলোর জন্য প্রস্তুত করে রাখার।
সবুজ শাকসবজি প্রতিনিয়ত খাওয়া আপনাকে আপনার ভবিষ্যৎ শারীরিক সমস্যা থেকে যেরকম রেখে দিয়ে থাকে।
ঠিক সেভাবেই আপনাকে একটা বয়সে যে ডায়াবেটিস মুক্ত জীবনযাপন করতে সহায়তা করে থাকে। সুতরাং আপনি যদি না চান আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা হোক, তবে এখন থেকে বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়া শুরু করে দিন।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শাক সবজি রাখুন।
একেক দিন একেক সবজি রাখতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের সবজি একত্রে মিশিয়ে মজাদার কিছু তৈরি করেও খেতে পারেন।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা এমন একটি ঔষধি গুণাগুণ সমৃদ্ধ ভেষজ উদ্ভিদ যাতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের সমস্যার সমাধান। সুতরাং আপনি যদি প্রতিনিয়ত অ্যালোভেরার রস খেতে পারেন, তবে তা আপনার ভবিষ্যৎ ডায়াবেটিস সমস্যা থেকে আপনাকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
তেজপাতা
তেজপাতা ছাড়া সাধারণত কোন রান্নায় হয় না। শুধুমাত্র খাদ্যের স্বাদ বাড়ানোর জন্যই নয়, তেজপাতায় রয়েছে আরো নানারকম গুনাগুন যা আপনাকে আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করবে।
তাই যদি আপনি আপনার খাদ্যে তেজ পাতার ব্যবহার না করে থাকেন (অবশ্যই করেন যদি না করে থাকেন) তবে অবশ্যই রান্নায় তেজ পাতার ব্যবহার শুরু করে দিন।
প্রতিদিন ডায়েট ফল রাখা
আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রতিদিন একটা করে হলেও বিভিন্ন রকমের ফল খেতে হবে। যে কোন ফল আপনার ডায়াবেটিসের জন্য ভালো, তবে চেষ্টা করবেন ডায়েট ফল রাখতে।
জল পান করা
জল পান করার সাথে সাধারণত অন্য কোন কিছুর তুলনা হয় না। দৈনিক ৩ থেকে ৪ লিটার জল তো আপনাকে সুস্থ থাকার জন্য পান করতে হবে। মনে রাখবেন ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই পরিমাণ মতো জল পান করতে হবে।
তাহলে সুপ্রিয় পাঠক, আশা করা যায় আপনারা ডায়াবেটিস মুক্ত জীবন যাপন করার জন্য উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো মেনে চলবেন। আজ তাহলে এখানে ইতি টানছি, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস ও চোখ কিভাবে ডায়াবেটিস চোখের জন্য ক্ষতিকর