ঢাকা টু কক্সবাজার ভ্রমণের বিস্তারিত সম্পর্কে জেনে নিন

আপনি যদি নিরাপদ এবং সুন্দর ট্যুর চান তাহলে আপনার জন্য বেস্ট ওয়ে হচ্ছে আকাশপথ। এ পথে আপনি নির্ঝঞ্ঝাট ঝামেলা মুক্ত হয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে পারবেন। যদি সরাসরি ঢাকা টু কক্সবাজার বাসে যান তাহলে সেটিও হতে পারে আপনার জন্য বেস্টওয়ে। রেলপথে যানবাহন চেঞ্জ করার ঝামেলা থাকলেও এ পথে আপনি নিরাপদ জার্নি করতে পারবেন। তাছাড়া এ পথে আপনি ট্রেনের ধকধক শব্দের সাথে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে পারবেন। তুলনামূলক এ পথে খরচও কম পড়বে।

ঢাকা টু কক্সবাজার ভ্রমণের  বিস্তারিত সম্পর্কে জেনে নিন
ফটো গ্রহণ করা হয়েছে tripadvisor.com থেকে

কি ভাবছেন? ভাল্লাগছেনা? তাহলে চলুন ঘুরে আসি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত থেকে। হ্যাঁ আমি বলছি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কথাই।


মনটা খারাপ? ভাবছেন কীভাবে যাবো? কোথায় থাকবো? তাহলে আসুন জেনে নেই কক্সবাজার ভ্রমণের বিস্তারিত।


কীভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে তিন মাধ্যমে কক্সবাজার ভ্রমণে যাওয়া যায়। সড়ক পথে, রেল পথে ও আকাশ পথে।


ঢাকা সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল হতে বিভিন্ন সময়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় নিম্নোক্ত বাসগুলো।


এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ সৌদিয়া, এস আলম মার্সিডিজ বেঞ্জ,  শ্যামলী পরিবহন, গ্রিন লাইন ইত্যাদি। এক্ষেত্রে আপনার সময় লাগতে পারে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা।


ঢাকা থেকে বাস ভেদে ভাড়া পড়বে ৯০০-২০০০ টাকা।


এছাড়াও আপনারা হাইস গাড়ী ভাড়া করেও কক্সবাজার যেতে পারেন। যারা ফ্যামিলি ট্যুরে যাবেন তাদের জন্য হাইস গাড়ি ই সবচেয়ে ভালো।


ট্রেনে যেভাবে যাবেনঃ কমলাপুর রেলস্টেশন বা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে সোনার বাংলা, মহানগর প্রভাতি, গোধুলি ও সুবর্ণ এক্সপ্রেস সময় ভেদে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্য রওনা করে।


এক্ষেত্রে ভাড়া ২৮৫- ১১৮০ টাকা লাগতে পারে।


চট্রগ্রাম নেমে নতুন ব্রীজ, দামপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে এস আলম,হানিফ, ইউনিক ইত্যাদি বাস ছাড়াও লোকাল অনেক বাস পাবেন। যেগুলোতে আপনার ভাড়া পড়তে পারে ২৮০- ৫৫০ টাকা পর্যন্ত।


আকাশপথে যেভাবে যাবেনঃ ইউএস বাংলা, নভোএয়ার,  বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজে এই কয়টি বিমান কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যাতে সময় লাগে ৫৫ -৬০ মিনিট। এ পথে আপনাকে ভাড়া গুনতে হতে পারে ৩০০০-৬০০০ টাকা।


কোন পথে সবচেয়ে সুবিধাজনক?

আপনি যদি নিরাপদ এবং সুন্দর ট্যুর চান তাহলে আপনার জন্য বেস্ট ওয়ে হচ্ছে আকাশপথ। এ পথে আপনি নির্ঝঞ্ঝাট ঝামেলা মুক্ত হয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে পারবেন।


যদি সরাসরি ঢাকা টু কক্সবাজার বাসে যান তাহলে সেটিও হতে পারে আপনার জন্য বেস্ট ওয়ে।


রেলপথে যানবাহন চেঞ্জ করার ঝামেলা থাকলেও এ পথে আপনি নিরাপদ জার্নি করতে পারবেন। তাছাড়া এ পথে আপনি ট্রেনের ধকধক শব্দের সাথে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে পারবেন। তুলনামূলক এ পথে খরচও কম পড়বে।


এছাড়া আপনারা যদি সাত আটজনের একটা টীম হন তাহলে হাইস গাড়ি ভাড়া করেও যেতে পারেন। অথবা অনেক ট্যুর এজেন্সি প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজন করে। তাদের সাথেও যেতে পারেন।


যেখানে থাকবেন

কক্সবাজার শ্রেনি ভেদে ৫০০-১০,০০০ টাকার মধ্যে হোটেল পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে অফ সিজনে কম খরচে থাকা যায়। অন সিজনে অনেক সময় হোটেল পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়।


তাই অনলাইনে বা ফোনে কথা বলে আগে থেকে বুকিং করে রাখা ভালো। এক্ষেত্রে হোটেল বুকিং ওয়েবসাইট বা এ্যাপ থেকে করা যায়। ৬০০০-১০,০০০ টাকার মধ্যে যেসব হোটেল পাওয়া যায়।


এখানে দেখার জন্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মারমেইড বিচ রিসোর্ট, সায়মন বিচ রিসোর্ট,  ওশেন প্যারাডাইজ, লং বীচ, কক্স টুডে, হেরিটেজ ইত্যাদি।


৩০০০-৬০০০ টাকার মধ্যে যেসব হোটেল পাওয়া যায়ঃ হোটেল সী ক্রাউন, সী প্যালেস, সী গাল, নিটোল রিসোর্ট, আইল্যান্ডিয়া, বীচ ভিউ, ইউনি রিসোর্ট ইত্যাদি।


৮০০-৩০০০ টাকার মধ্যে যেসব হোটেল পাওয়া যায়ঃ উর্মি গেস্ট হাউজ, কোরাল রীফ, ইকরা বীচ রিসোর্ট, অভিসার, মিডিয়া ইন কল্লোল, হানিমুন রিসোর্ট ইত্যাদি।


এগুলো ছাড়াও আরও অনেক হোটেল আছে যেগুলোতে গিয়ে আপনারা খোঁজ নিলে আরও ভালো এবং কমদামে থাকতে পারবেন। এছাড়াও ফ্লাট বাসাও ভাড়া দেওয়া হয়।


খাবার রেস্তোরাঁঃ কক্সবাজার অনেক রেস্তোরাঁ আছে। এর মধ্যে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষ, নিরিবিলি ইত্যাদি। খাবারের দাম মোটামুটি মানের মধ্যেই আছে।


কি করবেন?

যদি রাতের বেলা কক্সবাজার গিয়ে পৌছেন তাহলে সকাল বেলা সমুদ্রের নির্মল বাতাস কখনোই মিস করবেন না। অবশ্যই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিয়ে তারপর ঘুরতে বের হবেন।


কক্সবাজার ও তার আশেপাশে এলাকা মোটামুটি ২/১ দিনেই ঘুরে দেখা সম্ভব। কক্সবাজার মূল পয়েন্ট কলাতলী বীচ থেকে অটোরিক্সা বা গাড়ি ভাড়া করে হিমছড়ি, ইনানী বীচ, সুগন্ধা বীচ ও লাবনী বীচে যেতে পারেন।


ট্যুর প্ল্যানঃ সকাল বেলা ৭-৮ টার সময় রওনা হবেন মেরিন ড্রাইভ হয়ে ইনানী বীচ দেখার উদ্দেশ্য। সেখানে অল্পকিছু সামুদ্রিক প্রবাল দেখতে পাওয়া যায়। ভাগ্য ভালো হলে দেখতে পারবেন। আমার কাছে ইনানী বীচকে সবচেয়ে সুন্দর বীচ মনে হয়েছে।


এখানে ১-২ ঘন্টা ঘুরতে পারেন।  সেখান থেকে ১০ টার মধ্যে হিমছড়ির উদ্দেশ্য রওনা হতে পারেন। সেখানে ঝর্না ছাড়াও পাহাড়ের উপর থেকে সমুদ্র দেখতে পাবেন।


যা সত্যিই স্বর্গীয় সূখ উপভোগ করায়। সেখান থেকে ১ টার মধ্যে সেরে আপনারা লাবনী বীচে গোসলটা সেরে নিতে পারেন। তারপর আপনারা দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারেন।


এবার আপনারা ঘুরে আসতে রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড থেকে। এবার আপনারা সুগন্ধা বীচে এসে সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। রাতের বেলা আপনারা বার্মিজ মার্কেটগুলো থেকে সখের জিনিস পত্র কিনে নিতে পারেন।


আপনারা চাইলে আরও সময় নিয়ে ঘুরতে পারেন। এতে খুব সুন্দর ভাবে সমুদ্রের প্রকৃতি উপভোগ করা যাবে। ও বলে রাখি মিষ্টি তেতুল আনতে ভুলে যাবেন না যেনো।


কক্সবাজার ট্যুরের পাশাপাশি আপনারা চাইলে মহেশখালী দ্বীপ ঘুরে আসতে পারবেন।


আরও পড়ুনঃ বন্ধুদের সাথে দারুণ উপভোগ্য স্থান প্রান্তিক হ্রদ বান্দরবান