নারীদের জন্য সহজ কয়েকটি বিউটি টিপস, যা না জানলেই নয়
এখন মেকআপ টা সবার কাছে ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে, নিজের ন্যাচরাল লুক ভুলতে বসেছে। প্রাকৃতিক যত্ন নিয়ে ঘরোয়াভাবে নিজের ন্যাচরাল লুককে ফুটিয়ে তুলুন, আর মেকআপ কে বলুন টা টা বাই বাই।

বিউটি টিপস কথাটা শুনলে অনেকের মনের মধ্যে এমন ধারণা হতেই পারে যে, দামী দামী ব্রান্ডের বিউটি প্রোডাক্ট ও অনেকখানি কষ্ট। সুন্দর দেখতে লাগা কি এতটাই সহজ! খরচা আছে, কষ্ট আছে। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে ভেবে দেখলে, অতি সাধারণ বিষয় নিজেকে অসাধারণ সুন্দর করে রাখার জন্য।
আমরা সবাই চাই নিজেকে সুন্দর এবং ফ্রেশ দেখাতে। এটা কে না পছন্দ করে, এটা আর নতুন কি। তবে বিউটি পার্লার নয় ঘরের ভিতরেই আপনি নিজেকে অনন্যা করে তুলতে পারেন। অনেকেই নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য মেকআপ টাকেই সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন, কিন্তু মেকআপ এর সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়।
আপনার যে সৌন্দর্য আছে, সেই সৌন্দর্য টাকে একটু যত্ন নিন, দেখবেন মেকআপ লাগবে না। ২৪ ঘন্টা মেকআপ লাগিয়ে থাকা ছাড়াও সুন্দর দেখানো যায়। এই জন্য চাই নিজের জন্য সামান্য একটু যত্ন, যাতে আপনার ত্বক থাকবে উজ্জ্বল এবং মসৃণ।
এমন কয়েকটি ঘরোয়া যত্ন যা আপনার ত্বককে সুন্দর উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে সাহায্য করবে। জেনে নেয়া যাক তাহলে সেই ঘরোয়া যত্ন গুলো-
১. গ্রিন টি :
গ্রিন টি সাধারণত আমরা পান করে থাকি, কিন্তু খাওয়ার পাশাপাশি সৌন্দর্য চর্চায় এর ভূমিকা এতটাই যে আপনি গুণে শেষ করতে পারবেন না। গ্রিন টি ত্বক এবং চুলকে সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
গ্রীন টির বাহ্যিক ব্যবহার এবং খাওয়ার মাধ্যমে ত্বকের ব্রন ত্বকের রুক্ষ ভাব প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মাথায় খুশকির মত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। গ্রিন টি ত্বক ও চুলকে ভিতর থেকে সতেজ ও সুন্দর করে।
২. বাদামের তেল :
বাদাম তেল ত্বক এবং চুলের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। একেবারে ব্রাইডাল মেকআপ না করলেও অনেকেই হালকা মেকআপ করে অনুষ্ঠানে যেতে পছন্দ করেন, যেমন ধরুন আইলাইনার, লিপস্টিক এটা তো সাধারণ বিষয়। তবে অনেকেই অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে ফিরে এসে মেকআপ না তুলেই ঘুমিয়ে পড়েন। এটা কিন্তু বদভ্যাস, এতে ত্বকে অনেক রকম ক্ষতি হতে পারে।
বাদাম তেল দিয়ে ঠোঁটের যত্ন নিতে পারেন, অনেক সময় লিপস্টিক পরার কারনে ঠোট রুক্ষ শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে থাকে। এই বাদাম তেল দিয়ে লিপস্টিক তুলে ফেলুন এবং ঠোটে হালকা লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন ঠোঁটকে নরম রাখবে সবসময়।
৩. ভেসলিন :
অনেকেই সাধারণত ভেসলিন শীতকালে ব্যবহার করে থাকেন, তবে এর ব্যবহার সারাবছর চলতে থাকে। শুধুমাত্র ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য ভেসলিন ব্যবহৃত হয় না।
আপনাকে সুন্দর দেখাতে ভেসলিনের ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ভ্রু দুটোকে সুন্দরভাবে সঠিক জায়গায় রাখার জন্য ভেসলিন বেশ জনপ্রিয়।
৪. নারকেল তেল :
নারকেল তেল কিন্তু সাধারণ জিনিস নয়, এর গুনাগুন অনেক। আমরা কত কিছুই না করি চুলের উপর, কখন স্ট্রেট কখনো বা কারলি। কম ধকল যায়না চুলের উপর দিয়ে। তাই চুলের রুক্ষতা দূর করতে নারকেল তেলের ব্যবহার অতি উত্তম। স্নানের আগে নারকেল তেল দিয়ে মাথা এবং চুল মেসেজ করে নিতে পারেন, এতে চুল নরম ও মসৃণ হয়।
তবে শুধুমাত্র চুলের ক্ষেত্রে নারকেল তেল ব্যবহৃত হয়না ত্বকের যত্নে নারকেল তেল বিশেষভাবে কার্যকরী। সারা শরীরে নারকেল তেল মাখতে পারেন। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও চকচকে হয়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে তাতে কোনরকম দাগ ছোপ পড়ে না।
৫. জল :
প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ার পাশাপাশি জলকে রূপচর্চায় কাজে লাগাতে পারেন, কিভাবে! ঘরে থাকলেও দিনে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় বার মুখ হাত পা ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, আর যদি বাইরে থেকে আসেন তাহলে তো আর কথাই নেই, আগে হাতমুখ ধুতে হবে ঠান্ডা পরিষ্কার জল দিয়ে, তারপরে অন্য কাজ।
দেখবেন আপনার ত্বক কথা বলবে। দামি দামি প্রোডাক্ট যা করতে পারে না এই সামান্য কিছু অভ্যাস আপনার ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখবে।
৬. গোলাপ জল :
গোলাপ জল, হয়তো অনেকেই মনে করেন সামান্য একটা জল এমন কি করতে পারে। কিন্তু এই গোলাপজল অসাধারণ ভূমিকা পালন করে ত্বকের যত্নে। এটি একটি টোনার হিসেবেও কাজ করে। ময়শ্চারাইজ করে ত্বককে।
সকালে মুখ ধোয়ার পর মুখে গোলাপজল ইউজ করলে একটা আলাদা উজ্জ্বল ভাব আপনার চোখে পড়বে। আর এই অভ্যাস নিয়মিত থাকলে ত্বকে কোন রকম দাগ ছোপ আসতে দেয় না। নামিদামি প্রোডাক্ট এর থেকেও সামান্য এই গোলাপজল রূপচর্চায় অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে সুন্দর থাকলে সবদিক দিয়েই সাশ্রয় হয়। যেমন, কোন কিছুর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং অনেকখানি টাকা খরচ, সবকিছু এড়ানো যায়। তার সাথে অনিয়মিত ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
কোলড্রিংস খাওয়ার অভ্যাস থাকলে কমিয়ে ফেলুন, ছেড়ে দিতে পারলে তো সোনায় সোহাগা। সত্যি! সুন্দর দেখানো এতটা সহজ নয়, তবে অসাধ্য কিছু নয়। নিজেকে ভালবাসলে সবকিছুই সম্ভব। মেকআপ কে না বলুন, আর নিজের ন্যাচারাল বিউটি টাকে ফুটিয়ে তুলুন নিজের মতো করে।