পার্সোনালিটি বজায় রাখতে ছেলেদের কিছু ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল
নিজের ব্যক্তিত্ব বজায় রেখে সবদিক থেকে পরিপাটি রাখতে ছেলেরাও আজকাল তৎপর।

ফ্যাশন বিষয়টাতে মেয়েদের সাথে সাথে ছেলেরাও কিন্তু কম যায় না। তারা নিজেদেরকে পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখতে এবং নিজেদেরকে স্টাইলিশ দেখাতে অনেক রকম পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। সে কারণে তাদেরকে ফ্যাশনেবল এবং স্টাইলিশ লাগে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ফ্যাশন এবং স্টাইল এর ধরন অনেক ছেলেদের জানা না থাকলে সে ক্ষেত্রে ফ্যাশনের বারোটা বেজে যায়।
ফ্যাশন এবং নিজেকে স্টাইলিশ দেখানোর জন্য অনেকে এমন কিছু ভুল পন্থা অবলম্বন করেন যেগুলোতে তাদের পার্সোনালিটিকে আরো বেশি ডাউন করে দেয়। যুগের সাথে সাথে ছেলেদের ফ্যাশান পরিবর্তন হয়েছে। তার সাথে তাল মিলিয়ে প্রায় সকল ছেলেরাই নিজেদেরকে পরিপাটি রাখতে ব্যস্ত। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় ছেলেদের ফ্যাশন ও পার্সোনালিটির উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে
এমন কিছু অভ্যাস আছে যেগুল একটু চেঞ্জ করলেই নিজেদেরকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তোলা যায় চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যায়-
১. পোশাক-পরিচ্ছদ :
শরীরকে ঢাকতে পোষাক পরিচ্ছেদ এর ব্যবহার করা হয়। তার সাথে ফ্যাশনটাও মাথায় রাখা জরুরি। তবে আপনার পোশাক দামি হোক বা কম দামী তাতে কোন সমস্যা নেই সেই পোশাক দিয়ে আপনার ব্যক্তিত্ব এর বিচার হয় না।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপনি যে কোন পোশাক পরতেই পারেন। তবে সেটা আপনার গায়ে কতটা মানানসই সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরী। তবে যে পোশাকটি আপনি পরছেন সেটি যেন পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও মার্জিত হয়।
২. জিন্স প্যান্ট :
এখন তো ছেলেদের জিন্সের প্যান্ট ছেঁড়া ফাটা ও পাওয়া যায়। যেগুলো পরে প্রায় ছেলেরা রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায়। ছেঁড়াফাটা পোশাক পরলেই স্টাইলিশ হওয়া যায়না। ভদ্র সভ্যতা ও মাথায় রাখাটা জরুরি।
অন্যজন পরছে বলে আমাকে যে সেটাই করতে হবে, স্টাইল এর নামে এমন তো কোন মানে নেই। নিজের ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী পোশাক পরা ভালো।
৩. পাঞ্জাবি পাজামা :
এই পোশাকে সকল ছেলেদেরই বেশ ভালই লাগে। ইসলামে সম্মান বৃদ্ধির মাধ্যম পাঞ্জাবি পাজামা। শুধু ইসলামেই নয়, সব ধর্মের ক্ষেত্রেই এই পোশাকটির বেশ সম্মান রয়েছে। অনেকের মতে আপনি যখন কোনো উৎসবে অনুষ্ঠানে পাঞ্জাবি পরিধান করবেন, তখন আপনার সম্মান অনেকখানি বৃদ্ধি পাবে। এখন তো ছেলেরা পাঞ্জাবি-পাজামা কে ফ্যাশন ট্রেন্ড হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
৪. ছাতার ব্যবহার :
অনেক ছেলেরাই মনে করে থাকেন ছাতার ব্যবহার শুধুমাত্র মেয়েরাই করে থাকে। ছেলেদের রোদে বেরোনোর সময় ছাতা প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ত্বকের উপরে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি কিন্তু একই রকম প্রভাব ফেলে। তাই রোদে বেরোনোর আগে ছাতা ব্যবহার করাটা জরুরী। আপনি ছেলে হয়েছেন তো কি হয়েছে।
৫. সানগ্লাস এর ব্যবহার :
রোদের প্রকোপ থেকে চোখ দুটোকে রক্ষা করার জন্য সানগ্লাসের ব্যবহারের জুড়ি মেলা ভার। অনেক ছেলেকেই রোদে সানগ্লাস ব্যবহার করতে দেখা যায়, তবে এটা তার স্টাইল বাড়ানোর সাথে সাথে চোখেরও যত্ন হয়ে যায়।
আর এই সানগ্লাস এর মধ্যেও অনেক ভাগ রয়েছে। কালো সানগ্লাস এগুলো একটু বেশি স্টাইলিশ এবং রোদ থেকে চোখকে ঠান্ডা রাখে। সুন্দর ফ্রেমে সাদা সানগ্লাস ব্যবহার করেন অনেকেই। এটা তাদের নিজের পছন্দের উপর নির্ভর করে।
৬. নেশার মাধ্যমে ফ্যাশন :
বর্তমান যুগে এখন নেশাটা কে ফ্যাশন বলে মনে করছেন অনেক ছেলেরাই। লম্বা সিগারেটে টানদিয়ে ধোয়া ছাড়া কে মনে করেন স্টাইল। তবে আদৌ যে মদ্যপান, সিগারেট খাওয়া এগুলো ফ্যাশনের মধ্যে পড়ে না সেটা জানলে হয়তো, যারা এগুলোকে ফ্যাশন মনে করেন তারা একটু ধাক্কা খেতে পারেন।
এগুলোতে আপনার ব্যক্তিত্ব অনেকটাই নিচে নেমে আসে। তার সাথে সাথে শরীরেরও ক্ষতি। যে টাকা খরচ করে সিগারেট কিংবা মদ পান করবেন সেই টাকা জমিয়ে রেখে ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারেন।
৭. বাইক চালানো :
নিত্যদিনের প্রয়োজনে বাইক বিশেষ প্রয়োজন। তবে এটাকে অনেকে ফ্যাশন মনে করেন। তবে হ্যাঁ ফ্যাশন সেই ক্ষেত্রে মনে করেন, যখন বেপরোয়াভাবে বাইক চালানো হয়। অনেক ছেলেদের ধারণা খুব স্পিডে এবং বেপরোয়াভাবে বাইক চালালে তাদের অনেক স্টাইলিশ লাগে।
আদৌ কি তা সম্ভব। জীবনের ঝুঁকি, সাথে সাথে অনেকে খারাপ মন্তব্য করে বসতে পারেন। যে এভাবে কেউ বাইক চালায়! মার্জিত ভাবে বাইক চালানো অনেক বেশি স্টাইলিশ। জীবন একটাই তাই বেপরোয়াভাবে বাইক চালিয়ে জীবন শেষ করার থেকে মার্জিত ভাবে জীবন-যাপন অনেক শ্রেয়। সাথে ফ্যাশনটাও বজায় থাকুক।
৮. শো অফ করা :
প্রথমেই বলে দেওয়া জরুরি শো অফ মানে যেগুলো লোক দেখানো বা নিজের সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য কোন কিছু বেপরোয়া খরচ করা। পাশের বাড়িতে আজ ভালো-মন্দ খেয়েছে বলে আমাকে যে সবাইকে দেখিয়ে কালকে ভালো মন্দ খেতে হবে বা অন্যজন অনেক দামের পোশাক-পরিচ্ছদ কিনেছে আমাকেও সেই রকম কিনতেই হবে, তাকে দেখাতেই হবে, এমন তো কোন মানে নেই।
সবাই যেটা করে সেটা যে করে দেখাতেই হবে! তার মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং নিজের আর্থিক অবস্থা ভুলে বসতে হয়। কথায় আছে আয় অনুযায়ী ব্যয় করা উচিত না হলে অসময়ে কাউকে পাশে পাওয়া যায় না।
তাই এই শো অফ করা একেবারেই ফ্যাশন এর মধ্যে পড়ে না। লোক দেখিয়ে স্টাইল মারার কোন প্রয়োজন নেই। যেমন অনেকে আছেন, চাকরি করেন কুড়ি হাজার টাকা মাইনের, অথচ মোবাইল কিনতে হবে ৫০ হাজার টাকা দামের। এর থেকেও তো কম দামের মোবাইল এ কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়, তাই না। এতে স্টাইলে এতোটুকুও খামতি হয় না।
ছেলেদের আসল সৌন্দর্য, স্টাইল, তার কথাবার্তা এবং তার ব্যবহার আচরণ এর মাধ্যমে প্রকাশ পায়। শুধু মাত্র ছেলেদের ক্ষেত্রে নয় সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। নিজেকে বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে গেলে দামী দামী জিনিসপত্র এর প্রয়োজন হয় না। অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যকে বাইরে প্রকাশ করতে পারলেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন সকলের কাছে আকর্ষণীয়।