পুরুষদের স্বাস্থ্যের উপর কুমড়োর বীজের ভূমিকা কতখানি! জানেন কি?
কুমড়োর বীজ আর ফেলবেন না, ছোট্ট একটা বীজের মধ্যে এতগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতা পেলে কেইবা ফেলতে চাইবে এগুলোকে। শরীরের অনেক সমস্যাকে সমাধান করতে নিঃসন্দেহে খেতে পারেন কুমড়োর বীজ।

এখনকার ব্যস্ত জীবনে নিজের উপর যত্ন নেওয়াটা অনেকখানি কমিয়ে দিয়েছে অনেকেই। বিশেষ করে পুরুষরা স্বাস্থ্যের দিক টা একেবারেই হয়তো খেয়াল রাখতে সময় পান না। স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ উঠলে আমরা সকলেই একটু নড়েচড়ে বসি, কেননা স্বাস্থ্যই তো আসল সম্পদ, তাই না। আমরা সকলেই চাই সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন। ডাক্তারের কাছে যেতে কার ভালো লাগে বলুন।
আমরা কিন্তু সকলেই চাই যে, কোন কিছু বাড়াবাড়ি হওয়ার আগেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে নিজেদেরকে সুস্থ করে তুলতে। যদি আমরা নিজেদের স্বাস্থ্যের দিকটা একটু খেয়াল রাখি, তাহলে এই বাড়াবাড়ি পরিস্থিতি টা হয়তো কখনোই আসবেনা। এই স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে একটা কথা বলাটা জরুরী, কুমোর বীজ আমাদের স্বাস্থ্যে কতটা প্রভাব ফেলে তা হয়তো অনেকেই জানেন।
সাধারণত আমরা কি করি, কুমড়োর বীজ গুলোকে ফেলে দিই। এই স্বাস্থ্য গুণ সম্পন্ন বীজগুলোকে আর ফেলবেন না যদি জানেন এর গুনাগুন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক-
১. ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ইউরোলজি তে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী কুমড়োর বীজ প্রোস্টেট স্বাস্থ্যের ওপর পজেটিভ বা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি সাধারণত প্রোস্টেট গ্রন্থি কে শক্তিশালী করতে এবং পুরুষদের শরীরে স্বাস্থ্যকর হরমোন গুলির স্বাভাবিক কাজ অব্যাহত রাখে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত কুমড়োর বীজ খেয়ে থাকেন তাদের শরীরে এটি বিপিএইচ সম্পর্কিত উপসর্গগুলি কম করতে সহায়তা করে। এছাড়াও কুমড়োর বীজ নিয়মিত খেলে পুরুষদের যৌনস্বাস্থ্য কে উন্নত করে।
২. কুমড়োর বীজ জিংক দিয়ে পরিপূর্ণ যা একজন পুরুষের শরীরে জিংকের অভাব পূর্ণ করে। শুক্রাণুর গুণমান হ্রাস, এমনকি পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের পিছনে একমাত্র কিন্তু কাজ করে এই জিংক এর অভাব।
তাই কুমড়ার বীজ পুরুষদের জন্য কতটা উপকারী বুঝতেই পারছেন। অন্যদিকে কুমড়ার বীজে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপাদান শরীরে স্বাস্থ্যর উন্নতি উপর ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে।
৩. শুধু কি তাই, কুমড়োর বীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ। যা শরীরের পেশি নির্মাণ করতে ও উন্নত করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে বলাই বাহুল্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি বিভাগে পুষ্টি চার্ট অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম কুমড়োর বীজের মধ্যে প্রায় ২৩.৩৩ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
একটি সহজ এবং সুলভ মূল্য প্রোটিন বুস্টার হিসাবে এই কুমড়োর বীজ কে আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করে নিতেই পারেন।
৪. খুশির খবর হলো, কুমড়োর বীজ প্রাকৃতিক তেল সমৃদ্ধ হলেও বেশি পরিমাণ কুমড়োর বীজ খেলেও আপনি মোটা হবেন না। আর যেহেতু কুমড়োর বীজ জিংকসমৃদ্ধ তাই শরীরের নতুন কোষ সৃষ্টি করতে, ক্ষতিগ্রস্ত কোষ কে পুনর্নির্মাণ করতে সাহায্য করে।
তার সাথে সাথে চুলের স্বাস্থ্যের জন্য কিন্তু কুমড়োর বীজ বেশ উপকারী। বীজ গুলির মধ্যে ফসফরাস থাকার কারণে মেটাবলিজম এ সাহায্য করে। পরিপাকতন্ত্র, হজম শক্তি বৃদ্ধি, করতে কুমড়োর বীজ কিন্তু বেশ উপকারী।
৫. কুমড়োর বীজ ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ হয়, যা শরীরের স্বাভাবিক রক্ত চলাচল কে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্টকে সুস্থ রাখে। শারীরিক স্বাস্থ্যের সাথে সাথে কুমড়োর বীজ ডিপ্রেশন কমানোর সাথে সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে সঠিক পরিমাণ ঘুম হয় না, ঘুম আসতে দেরি হয়, অনিদ্রাজনিত কারণ যদি কারো থেকে থাকে তাহলে কুমড়ার বীজ কে খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন নিঃসন্দেহে। এটাও গবেষণায় প্রমাণিত যে কুমড়োর বীজ ঘুম কে উন্নত করতে পারে।
তাই আর দেরি কেন আজ থেকেই খাওয়া শুরু করে দিন কুমড়োর বীজ। এতদিন তো অনেক ফেলে দিয়েছেন, এখন থেকে আর নয়।
যেখানে ছোট্ট এই বীজ গুলোত এতগুলো উপকার পাচ্ছেন, তাহলে আর কিসের চিন্তা। আপনার খাদ্য তালিকায় এটা কে আজ থেকেই যোগ করে দিন। নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন, সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন।