ফাইভারে সেলার অ্যাকাউন্ট, কাজ ও ফাইভার প্রোফাইল সাজানো সম্পর্কে বিস্তারিত

আপনারা হয়ত সবাই ফাইভারের বেসিক ধারণা, আমাদের আগের পোস্টে পেয়েছেন। তবে কীভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়, কাজ কিভাবে করবেন, প্রোফাইল কিভাবে সাজাবেন, এসব সম্বন্ধে হয়তো আপনাদের ধারণা নাও থাকতে পারে। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে আজকের পোস্ট থেকে এ সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নিন।

ফাইভারে সেলার অ্যাকাউন্ট, কাজ ও ফাইভার প্রোফাইল সাজানো সম্পর্কে বিস্তারিত
ফাইভারে সেলার অ্যাকাউন্ট, কাজ ও ফাইভার প্রোফাইল সাজানো সম্পর্কে বিস্তারিত

আপনারা যারা অনলাইন জগতে অনেক দিন ধরে কাজ করছেন অথবা এসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন, তারা হয়তো জানেন যে, বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং জগতে ফাইভার খুব জনপ্রিয় এবং হাই আর্নিং এর কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম।


ফাইভারের কাজ শিখে খুব সহজেই অনলাইন ফ্রিল্যান্সাররা মাসিক ১০০$-৫০০$ অবধি আয় করতে পারবেন।


কিন্তু এখানে বিষয় হচ্ছে, অনেকেই হয়তো ভাবেন যে ফাইভারে কাজ করা অনেক কঠিন, কাজে জটিলতা রয়েছে, গিগ বানানো হয়তো সাধারনদের পক্ষে অসম্ভব বা এরকম আরও অনেক কিছু।


কিন্তু আসলে মোটেও এরকম কিছু নয়। এসব জটিলতা দূর করতেই আজ আমি আপনাদের ফাইভার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানাবো এবং কিভাবে এখান থেকে আয় করা সম্ভব সে সম্বন্ধে আলোচনা করবো।


তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক -


ফাইভারে কিভাবে সেলার অ্যাকাউন্ট খুলবেন?

ফাইভারে কাজ শুরু করার জন্য প্রথমেই আপনাকে একটি সেলার একাউন্ত রেজিস্টার করে নিতে হবে। নতুবা আপনি এখানে কাজ শুরু করতে পারবেন না।


এখানে বিভিন্ন কাজগুলো কেনা বেচা ও সম্পাদন করার জন্য, একটি সেলার অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক। সেজন্যই আমি এখন আপনাদের দেখাবো, কিভাবে ফাইভারে সেলার অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়।


১. ফাইভার এর হোমপেজ প্রথমে সার্চ করে খুজে বার করুন। এর জন্য সাধারন ভাবে, fiverr.com লিখে সার্চ করলেই হবে।


এখানে আপনি "Sign Up as a seller" অপশন দেখতে পাবেন। এখানে ক্লিক করে লিংকে প্রবেশ করুন।


২. এরপর এখানে আপনি ফেসবুক, অথবা জিমেইল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সাইন আপ করতে পারবেন। আপনি যেই মাধ্যমে লগইন করতে চান করতে পারবেন।


৩. এরপর ইমেইল দিয়ে লগইন করলে আপনাকে একটি ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। এরপর জয়েন অপশনে ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট চালু করে নিন।


৪. জয়েন করার পর আপনাকে আপনার ইমেইল থেকে মেইল ভেরিফাই করে অ্যাকাউন্ট সচল করে নিতে হবে।


৫. এরপর আপনাকে প্রোফাইল বানাতে হবে ও অন্যান্য কাজগুলো, যেমন- গিগ প্রস্তুত করতে হবে।


৬. প্রোফাইল তথ্য সব সঠিকভাবে দেয়ার পর, আপনি যেসব কাজে অভিজ্ঞ বা যে কাজগুলো করে অর্থ উপার্জন করতে চান, সেগুলো সম্বন্ধে বিজ্ঞাপন দিন নথবা গিগ প্রস্তুত করে ফেলুন (গিগ কীভাবে ভালোভাবে সাজাবেন তা অন্য পোস্টে জানানো হবে)।


এখন আপনারা নিশ্চয়ই ব্যঝতে পেরেছেন যে, কিভাবে ফাইভার অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। হয়তো আগে ভাবতেন যে এটা খুব কঠিন কাজ তবে আসলে এমনটা নয়, সেটা হয়তো এখন বুঝতে পেরেছেন।


কীভাবে ফাইভারে কাজ পাবেন বা কি কি কাজ পাবেন?

ফাইভারে কোনো এক ধরনের কাজ পাওয়া যায় না। এখানে হাজারো রকমের ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো কেনাবেচা হয়। বিভিন্ন ক্লায়েন্ট বা প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে কাজ করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সার ভারা করে।


আর মূলত ফাইভার হচ্ছে একটি মার্কেটপ্লেস যেখানে এই কাজগুলো দেওয়া হয় বা কেউ খোজে। মানে হলো, এখানে যেমন কাজগুলো করার জন্য কেউ বিজ্ঞাপন দিতে পারে, ঠিক তেমনি কাজগুলো করানোর জন্যও বিজ্ঞাপন দেয়া হয়।


এখানে আপনারা আপনাদের গিগ প্রস্তুত করে রাখবেন এবং আপনার যোগ্যতা ও রিভিউ দেখে আপনাকে ক্লায়েন্টরা কাজ দেবে বা হায়ার করবে।


আপনি যদি কাজ পান এবং সফল্ভাবে সম্পাদন করেন, তাহলে আপনি চুক্তি মোতাবেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।


ধরে নিন, আপনাকে কাজ দেয়া হলো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কন্টেন্ট লেখার জন্য। আপনি সেটা লিখলেন এবং সেটা সফল্ভাবে সাবমিট করলেন।


তাহলে চুক্তি অনুযায়ী আপনি পেয়ে যাবেন আপনার প্রাপ্য পারিশ্রমিক। এভাবেই এখানে আপনি কাজ পেতে পারবেন এবং ঘরে বসেই উপার্জন করতে পারবেন।


এখন আসুন দেখা যাক ফাইভারে আপনি কি কি কাজ পেতে পারেন। সবগুলো কাজের নাম হয়তো এখানে বলে শেষ করতে পারবোনা, তবে যেগুলো প্রধান ও জনপ্রিয়, সেগুলো আপনাদের এখানে জানাবো।


১. আর্টিকেল লেখা ও কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ

২. লোগো ডিজাইনিং এর কাজ

৩. ডিজিতাল মার্কেটিং এর কাজ

৪. এসইও অপ্টিমাইজেশনের কাজ এবং ওয়ার্ডপ্রেস  ওয়েবসাইট অপ্টিমাইজেশন

৫. ভিডিও এডিটিং এবং এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের কাজ

৬. সাইট ডিজাইনিং এর কাজ

৭. অনলাইন শপিং সাইটের বানানোর কাজ, প্রুফরিডিং এর কাজ এবং আরও অসংখ্য


ফাইভারে প্রোফাইল বানাবেন কীভাবে?

ফাইভারে আপনি আপনার ইচ্ছামতো প্রোফাইল বানাতে পারবেন না। কারণ এটা কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল নয় যেটা শুধু শো অফ করার জন্য বানানো হয়।


এখানে আপনাকে আপনার কথা কাজ ও যোগ্যতা অনুযায়ী প্রোফাইল ও গিগ প্রস্তুত করতে হবে। এই কাজগুলো কিভাবে করবেন, আসুন দেখে নেয়া যাক।


১. অ্যাকাউন্ট বানানোর পর ভাবুন, আপনি কোন কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন বা কোন কাজে আপনি ট্যালেন্টেড।


যেমন - কন্টেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। মনে রাখবেন, আপনার গিগ আপনার দক্ষতার দিক অনুযায়ী প্রস্তুত করতে হবে।


২. এরপর এগুলো সিদ্ধান্ত নেয়ার পর, নিজের প্রোফাইল সেটিংস থেকে অবশ্যই কাজের বিষয়, নিজের সুন্দর ছবি এবং ডেস্ক্রিপশন দেবেন।


৩. এরপর আসবে আপনার গিগ বানানোর পালা, এখন আপনাকে ফাইভার গিগ বানাতে হবে। এখানে আপনার কাজের বিজ্ঞাপন দেবেন যেটা বিক্রয় করে আপনি উপার্জন করতে চাইছেন।


৪. গিগের ভিতরে আপনাকে অবশ্যই কাজের বিবরন, কাজের পেমেন্ট, কতো সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করবেন,এসব কিছু লিখে দিতে হবে।


এছাড়াও যদি আপনাদের কোনো রিভিউ থেকে থাকে, অবশ্যই সেটা গিগে শো করবেন। এই ছিলো ফাইভারে কাজ করার নিয়মাবলী নিয়ে আমাদের আজকের পোস্ট।


উপসংহার

তো এই ছিল ফাইভার এর বেসিক এবং এখান থেকে আয়ের কিছু সাধারণ বিষয় নিয়ে আমাদের আজকের পোস্ট।


আশা করি পোস্টটি আপনাদের সবার ভাল লাগবে এবং কাজেও লাগবে। আপনাদের আজকের পোস্ট সম্বন্ধীয় যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে আমাকে জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে।


আমি যত দ্রুত সম্ভব উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। সবাইকে শুভকামনা জানিয়ে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি!


আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং এর নতুন ক্ষেত্র Affiliate Marketing করে আয় করুন