বন্ধুদের সাথে দারুণ উপভোগ্য স্থান প্রান্তিক হ্রদ বান্দরবান!
পাহাড় এবং বন দ্বারা ঘেরা এই সুন্দর হ্রদটি বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালায় পরিপূর্ণ। হ্রদের তীরে বনে বাঁদর ও পাখি সহ অনেক প্রজাতির বন্য প্রাণী রয়েছে যা প্রাকৃতিকভাবে জন্মগ্রহণ করে। পুকুরে রয়েছে ডাহুক, বিভিন্ন প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ।পাহাড় এবং বন দ্বারা ঘেরা এই সুন্দর হ্রদটি বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালায় পরিপূর্ণ।

বাংলাদেশ! যে নাম শুনলেই মনে আসে, নদ-নদী, হাওড়-বাওড় আর সবুজের সমারোহে বিস্তৃত দিগন্ত। বাংলাদেশে রয়েছে ৬৪ টি জেলা যার একেকটা জেলার বিবরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না।
প্রতিটি জেলার মানুষের জীবন-যাপন, খাওয়া-দাওয়া,কথাবার্তা সবকিছুতে রয়েছে ভিন্নতা। আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো বান্দরবানের প্রান্তিক হ্রদ সম্পর্কে যেখানে আপনি বন্ধুদের সাথে ঘুরতে দারুণ মজা পাবেন।
প্রান্তিক হ্রদ বান্দরবান
প্রান্তিক হ্রদ একটি গোষ্ঠী বা পরিবার ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত জায়গা। এই জায়গার সৌন্দর্য আপনাকে দারুণ অনুভূতি দেবে। একই সময়ে, আপনি এখানে গিয়ে দু'দিনের মধ্যেই ফিরে আসতে পারেন।
আশা করি, আপনি কম বাজেটের মধ্যে প্রান্তিক লেকে যেতে পারেন।
আপনি যদি বান্দরবানের প্রান্তিক হ্রদ (বাংলাদেশ) সুরক্ষার সাথে ভ্রমণ করতে চান এবং আরও আনন্দের সাথে জায়গাটি উপভোগ করতে চান তবে ট্র্যাভেল মেট আপনাকে সফরের ব্যবস্থা করতে সহায়তা করতে পারে।
প্রান্তিক হ্রদ সম্পর্কে খুঁটিনাটি জেনে নেয়া যাক
প্রান্তিক হ্রদের নীল জল এবং তীরের সবুজ বন এখানে একটি ভিন্ন মাত্রা তৈরি করেছে। গাছের শীতল ছায়া এবং তাজা বাতাস আপনাকে আপনার সমস্ত ক্লান্তি ভুলিয়ে দিবে।
এই হ্রদে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মাছ। আপনি চাইলে হ্রদের জলে মাছ ধরতে পারবেন তবে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে।
এটি আপনার জন্য অতিরিক্ত আনন্দ দিবে। এছাড়াও, আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে, পরিবারের সাথে আরাম করতে পারেন এবং একটি প্যাডেল বোট নিয়ে অনেক মজা করতে পারবেন।
তাহলে বুঝতেই পারছেন দর্শনার্থীগণ বান্দরবানে প্রান্তিক হ্রদ নামে একটি অনবদ্য সুন্দর হ্রদ রয়েছে। যার মোট ক্ষেত্রফল ৮ একর।
এখানে যে হ্রদটি রয়েছে তাকে একটি লেকের সাথে আয়তনগত তুলনা করা হচ্ছে। সেই লেকটির নাম বোগা লেক। বান্দরবনের প্রান্তিক হ্রদটি বোগা লেকের চেয়ে আকারে বড়।
এই বোগা লেকের আয়তন ১৫ একর। কেরানীহাট সড়কের হালুদিয়ার নিকটবর্তী এলাকায় এই হ্রদটি অবস্থিত।
যা যা উপভোগ করতে পারবেন
পাহাড় এবং বন দ্বারা ঘেরা এই সুন্দর হ্রদটি বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালায় পরিপূর্ণ। হ্রদের তীরে বনে বাঁদর ও পাখি সহ অনেক প্রজাতির বন্য প্রাণী রয়েছে যা প্রাকৃতিকভাবে জন্মগ্রহণ করে।
পুকুরে রয়েছে ডাহুক, বিভিন্ন প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ। পাহাড় এবং বন দ্বারা ঘেরা এই সুন্দর হ্রদটি বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালায় পরিপূর্ণ।
প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভূত উদ্ভিদ ,হ্রদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলছে ব্যাপকভাবে। এছাড়াও অপরিবর্তিত ও পতিত জমিতে বিভিন্ন ধরণের ফুল, ফল, ঔষধি ও কাঠবাদাম গাছ লাগানো হয়েছে।
এর চারপাশে একটি ফুটপাথ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিকে এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।
প্রাকৃতিকভাবে নির্মিত এবং উন্নত প্রান্তিক হ্রদ যে কোনও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
আরও পড়ুনঃ ভ্রমনের জন্য বাংলাদেশের সেরা কিছু সমুদ্র সৈকত থেকে ঘুরে আসুন
প্রবেশ ফি
প্রান্তিক হ্রদে প্রবেশের জন্য আপনাকে জনপ্রতি মাত্র ২০ টাকা দিতে হবে। বান্দরবানের এই অপরুপ প্রান্তিক হ্রদটি প্রায় ২৫ একর জায়গা জুড়ে তৈরি একটি কৃত্রিম জলাধার।
প্রান্তিক লেকের আয়তন ২৫ একর হলেও পুরো কমপ্লেক্সটি অনেক বড়। পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত ২৫-৩০ একর বিশাল এক হ্রদ ৬৮৮-৬৯০ একর এলাকা জুড়ে যা বোগা হ্রদের চেয়ে বড়।
জেলার এক প্রান্তে অবস্থিত এই হ্রদটিকে প্রান্তিক হ্রদ বলা হয়।
প্রান্তিক লেকের পাহাড়ি অঞ্চল ভ্রমন
এই সুন্দর হ্রদ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালায় পূর্ণ। এটি সর্বত্র পিকনিকের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে পরিচিত। এটি বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের হালুদিয়ায় অবস্থিত।
বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রান্তিক লেকের দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। হ্রদে খোলা টেরেস, পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার এবং একটি উচ্চ-গোলাকার ঘর রয়েছে। একটি গোল ঘরে বসে লেকের সৌন্দর্যটি সহজেই উপভোগ করা যায়।
কীভাবে যাবেন এই প্রান্তিক হ্রদে
প্রান্তিক হ্রদের বর্ণনা শুনে নিশ্চয়ই সেখানে ভ্রমনের যেতে মন চাইছে তাই না! কিভাবে যাবেন জানার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক কিভাবে যাবেন এখানে।
বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে বান্দরবানে এসে পৌছানোর জন্য আপনি বাস, ট্রেন বা বিমান ব্যবহার করতে পারেন।
তবে যারা বাস বা ট্রেনে যাতায়াত করবে তাদের জন্য কোন বাসে যাবেন বা কোন বাসের মাধ্যমে বান্দরবান গিয়ে পৌছাবেন তা একনজরে দেখে নিন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এস আলম, সৌদিয়া, সেন্টমার্টিন ট্রান্সপোর্ট, ইউনিক, হানিফ, শ্যামলী, ডলফিন প্রভৃতি বাস বান্দরবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এই বাসগুলির জন্য জনপ্রতি ভাড়া যথাক্রমে নন এসি ৫৫৯ এবং এসি ১০০০-১৫০০ টাকা।
এখানে একটা ঢাকা থেকে পৌছানোর বর্ণনা দেয়া হল। আপনি যদি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তুরনা নিশিতা, মহানগর গোধুলিতে ট্রেনে যেতে চান তবে এই ট্রেনগুলি দিয়ে আপনি চট্টগ্রাম যেতে পারবেন।
ভাড়া ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত এবং ভাড়া মাঝে মাঝে বেশি কম নিয়ে থাকেন। তবে স্থায়ী মূল্য ৪০০/৩৫০-১২০০ টাকা পর্যন্ত। পরিবর্তিত হয়।
এছাড়া আপনি ঢাকা বা দেশ বা বিদেশ থেকে সরাসরি বিমানের মাধ্যমে চট্টগ্রামে আসতে পারবেন। চট্টগ্রামের বদদারহাট থেকে পূবালী ও পূর্বাণী নামে দুটি পাব বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এই দুটি বাসের ভাড়া জনপ্রতি ২২০-৩০০ টাকা। চট্টগ্রামের ধামপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০০-৩০০ টাকায় আপনি বাসে বান্দরবান আসতে পারবেন।
বান্দরবানে পৌঁছে গেলেন। কিন্তু আপনাকে তো এবার সেই উপভোগ্য প্রান্তিক হ্রদে পৌঁছাতে হবে তাই না! তাহলে কীভাবে যাবেন বান্দরবান থেকে প্রান্তিক হ্রদে? জেনে নিন পরামর্শটি সম্পূর্ণ পড়ে।
বান্দরবান থেকে প্রান্তিক লেকে যেভাবে পৌছাবেন
বান্দরবান শহর থেকে চন্দর গড়ি, প্রাইভেট কার, জিপ, বেবি ট্যাক্সি করে আপনি প্রান্তিক হ্রদে পৌঁছতে পারবেন।বান্দরবান জেলার বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের হালুদিয়ায় প্রান্তিক হ্রদটি অবস্থিত।
শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে হ্রদের অবস্থান। দেশের যে কোনও জায়গা থেকে বান্দরবান আসার জন্য আপনাকে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কে একটি বাসে উঠতে হবে এবং হালুদিয়ায় নামতে হবে।
চট্টগ্রামের দিকে, আপনাকে চট্টগ্রামের কেরানীহাট রোডের হালুদিয়ায় নামতে হবে।
সেখান থেকে অটোরিকশায় করে প্রান্তিক লেকে যেতে হবে। ভাড়া পড়বে ১০০-১৩০ টাকা। কখনো কখনো কম-বেশি নিতে পারেন।
বান্দরবানের অটোরিকশা, চন্দর গাড়ি ছাড়াও আপনার নিজের যেকোন যানবাহন দিয়ে আপনি প্রান্তিক লেকে যেতে পারেন।
প্রান্তিক হ্রদে না হয় পৌঁছে গেলেন কিন্তু আপনার তো সেখানে আত্নীয় নেই তাহলে কোথায় থাকবেন সেখানে গিয়ে।ভাবনার বিষয়।
চিন্তার কোনো কারন নেই পাঠকগণ হ্রদে ঘুরতে গিয়ে রাত কাটাতে চাইলে বান্দরবানে ফিরে আসতে হবে। রাতারাতি থাকার জন্য বর্তমানে কোনও ব্যবস্থা নেই। বান্দরবানে কয়েকটি ভাল মানের হোটেল রয়েছে।
প্রান্তিক হ্রদে ভ্রমণের সময় কিছু বিষয় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে
ক্যামেরা, চার্জার, পাওয়ার ব্যাংক, জাতীয় আইডি কার্ড ইত্যাদি জিনিস গুলো সাথে নিবেন ভ্রমনের আগে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি একবার দেখে তার ভ্রমনে বের হয়ে পড়বেন। ব্যাগ যত কম হবে তত ভাল।
আদিবাসীদের জীবনযাত্রা সমতল মানুষের মতো নয়, এমন কিছু করবেন না যা তাদের অসম্মান করে।
বান্দরবান থেকে লেকের পুরো রাস্তাটি একটি পাহাড়ি ঘূর্ণায়মান রাস্তা, ভ্রমণের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। রাস্তা ভ্রমণের সময় আপনাকে আর্মি ক্যাম্পের অনুমতি নিতে হবে।
সব ধরনের সিমের নেটওয়ার্ক এখানে পাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র টেলিটক এবং রবি নেটওয়ার্ক সিমের নেটওয়ার্ক কিছুটা উপলব্ধ এখানে।
আপনার ব্যাকপ্যাকের ওজন যত কম হবে ট্র্যাকিং তত সহজ হবে। এটি পার্বত্য অঞ্চল ভ্রমণের শর্ত। আপনার সাথে কয়েক প্যাকেট স্যালাইন বা গ্লুকোজ নিন। হ্রদে স্নান করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন, অনেক গভীরতা রয়েছে।
ভিসা
আপনি যদি বাংলাদেশের বাইরের কেউ হন তাহলে আপনাকে বান্দরবান ভ্রমণ করতে হলে পাসপোর্ট করতে হবে এবং ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
ভিসার আবেদন এর সময় আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট এ জন প্রতি ৩০০০০-৩৫০০০ টাকার বিবরনী দেখাতে হবে। তবে দেশ ভেদে ভিন্নতা রয়েছে। আপনি তিন মাসের জন্য ভ্রমন ভিসা পাবেন।