বাংলাদেশের সেরা ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে জেনে নিন : তুলনামূলক আলোচনা

আপনি কি একজন আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং গ্রাহক। আন্তর্জাতিক সব কার্ডগুলো সম্বন্ধে জানতে চান? চিন্তা নেই আমরা আছি আপনার সাথে। একে একে জানাবো অনেক দেশের কার্ডগুলো সম্বন্ধে। আজ জেনে নিন বাংলাদেশী সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রেডিট কার্ডগুলো সম্বন্ধে কিছু সংক্ষিপ্ত ধারণা।

বাংলাদেশের সেরা ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে জেনে নিন : তুলনামূলক আলোচনা
বাংলাদেশের সেরা ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে জেনে নিন

ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে আমাদের জানার শেষ নেই। আন্তর্জাতিক একটি আর্থিক পণ্য বা সেবা হিসাবে ক্রেডিট কার্ডের তথ্যাবলীর শেষ নেই।


আবেদন করা, ব্যবহার করা, বিভিন্ন সুদ ও চার্জের নিয়মাবলী, ব্যবহার সম্বন্ধীয় টিপস সম্বন্ধে জানার পর আমাদের জানার পালা আসে আন্তর্জাতিক কার্ড সম্বন্ধে জানার।


আমাদের আগের পোস্টে আমরা আমেরিকার বর্তমান সময়ের সেরা ক্রেডিট কার্ডগুলো সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত ধারণা পেয়েছিলাম।


আজ আমরা জানবো বাংলাদেশের সেরা ক্রেডিট কার্ডগুলো সম্বন্ধে। যেহেতু ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে আমাদের আন্তর্জাতিক ধারণার প্রয়োজন, তাই আমাদের প্রতিবেশী কিছু দেশের সেরা কার্ডগুলো সম্বন্ধে আমাদের জানা উচিত।


আর নগদ টাকাবিহীন সমাজের ধারণা যেহেতু এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে গিয়েছে, তাই আমাদের অবশ্যই উচিত নগদবিহীন করার ক্ষেত্রে এসব কার্ডগুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জানার।


তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে, আমাদের আজকের মূল আলোচনা শুরু করা যাক।


বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে কিছু সংক্ষিপ্ত আলোচনা

নগদ টাকাবিহীন সমাজ গড়ার প্রচেষ্টা আজকে নতুন চালু হয়নি। অনেক আগে থেকে বিশ্বব্যাপী এই প্রচেষ্টা চলছে এবং অনেক পণ্য বা সেবাও চালু হয়েছে এই লক্ষ্যে।


আপনারা হয়তো জানেন যে, নগদবিহীন তত্ত্বাবধান সিস্টেম শুধু আমাদের অনলাইন কার্যক্রমকেই সহজ করে দেয়না বরং মার্কেটে ব্ল্যাক মানির প্রয়োজনীয়তাও কমিয়ে আনে।


আর আপনারা সবাই জানেন যে, নগদবিহীন লেনদেন প্রক্রিয়া চালুর অন্যতম বড় মাধ্যম হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড।


আর আজ আমরা বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় প্রোভাইডার ও কার্ডগুলো সম্বন্ধে সংক্ষেপে জেনে নেবো।

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার সঠিক পদক্ষেপ? আবেদন পদ্ধতি ও যোগ্যতা

Visa ও Mastercard কী? পার্থক্য কি? সমতা কোথায়? সব জানুন

আপনার কয়টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা উচিত?

ক্রেডিট কার্ড থেকে কি নগদ টাকা পাওয়া সম্ভব? জেনে নিন

ভারতের সেরা ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে জেনে নিন


বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা ক্রেডিট কার্ড 


১. The City Bank Amex Card

City Bank হচ্ছে অন্যতম একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যারা তাদের ক্লায়েন্টদের Amex card প্রদান করে থাকে। Visa এবং Mastercard অনলাইন লেনদেনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলেও, Amex Card বাংলাদেশের লোকাল ও আন্তর্জাতিক লেনদেনে বিশেষ জায়গা দখল করে আছে।


এখানকার নিয়মিত APR হচ্ছে ২৭% আর প্রথম ছাড় পিরিয়ড হচ্ছে ৪৫ দিন পর্যন্ত। কার্ড নবায়নের জন্য ১৫০০ থেকে ২৫০০০ টাকা অব্দি খরচ হয়ে থাকে সুযোগ সুবিধার উপর নির্ভর করে।


এই কার্ডের আউটস্ট্যান্ডিং ফি হচ্ছে ৫% আর ইনস্টলমেন্টের সময় এখানে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা দেয়া হয় না।


২. Standard Charterd Bank Credit Card

অন্যতম পুরনো এবং একটি আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসাবে, এই ব্যাংকটি অনেক বেশি জায়গা দখল করেছে আর্থিক বাজারে।


Standard Charterd Bank
গ্রাহকের লোন পরিশোধের সক্ষমতার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে থাকে।


এই কার্ডগুলোর লিমিট এবং সুযোগ সুবিধা বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে ক্লায়েন্টভেদে। এছাড়া মনে রাখবেন, বাংলাদেশে এই কার্ডটির নিয়মিত APR হচ্ছে ২৬%।


প্রথম ৪৫ দিন কার্ড ব্যবহারে গ্রাহককে কোনো প্রকার অতিরিক্ত চার্জ বহন করতে হবে না। আর এই ক্রেডিট কার্ডের নবায়ন ফি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১০০০০ টাকা অব্দি।


এছাড়াও, Standard Charterd ব্যাংক গ্রাহকদের একটি প্রারম্ভিক বোনাস দিয়ে থাকে যেটা হচ্ছে বোনাস। গ্রাহকরা এই কার্ডের পাশাপাশি একটি অতিরিক্ত সহায়ক কার্ড নিতে পারবেন যেটা চার্জ অনুযায়ী গ্রাহককে ব্যাংক থেকে প্রদান করা হবে।


৩. BRAC Bank Credit Card

BRAC Bank হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রগতিশীল ব্যাংক। এই ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যাংকিং সেক্টরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করা এবং গ্রামের মানুষজনের কাছে ব্যাংকিং সেবা সুলভে পৌছে দেয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলা।


সাম্প্রতিক কয়েক বছরে, এই ব্যাংকটি তাদের তালিকায় নতুন সেবা ও ক্রেডিট কার্ড যুক্ত করেছে। কার্ডের নবায়ন ফি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত যা কার্ডের ধরন এবং সুযোগ সুবিধার উপর নির্ভর করে।


৪. Eastern Bank Credit Card

EBL হচ্ছে বাংলাদেশের অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রবর্তক এবং এখনো অব্দি বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধার প্রবর্তনকারী কোম্পানী। অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি তাদের কার্ড সুবিধাও বেশ ভালো।


বিদেশ ভ্রমণের সময়ে, EBL এর Skylounge কার্ড ব্যবহার সবচেয়ে সুবিধাজনক হিসাবে বিবেচিত হয়। এই সুবিধার জন্য বাংলাদেশের সকল গ্রাহকের EBL এর দ্বারমুখী হওয়া উচিত বলেই আমি মনে করি।


এখানে আপনি পাবেন 27% এর স্ট্যান্ডার্ড APR, ৪৫ দিনের প্রারম্ভিক সুদ-চার্জবিহীন ব্যবহারের সুবিধা ও প্রারম্ভিক বোনাস।


আপনি এখান থেকে অতিরিক্ত সহায়ক কার্ডও পেতে পারেন তবে সেটার জন্য অতিরিক্ত চার্জ বহন করতে হবে।


৫. DBBL Credit Card

DBBL হচ্ছে Dutch Bangla Bank Limited যেটা বাংলাদেশের প্রথম জয়েন্ট ভেঞ্চার ব্যাংক এবং ATM সুবিধার স্তম্ভ স্বরূপ।


DBBL বাংলাদেশের ব্যাংকিং সুবিধাকে আরও সহজ করে তুলেছে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ATM ব্যবস্থা চালু করেছে।


এই ক্রেডিট কার্ডে গ্রাহকরা পাবেন এক্সক্লুসিভ সুবিধা এবং সাথে থাকছে সর্বনিম্ন APR সুবিধা। এই কার্ডের APR হচ্ছে মাত্র ১৫% আর সাথে থাকছে সবার চেয়ে বেশি, ৫০ দিনের প্রারম্ভিক সুদ মুক্ত লেনদেনের সুবিধা।


বিশেষ কার্ডের ক্ষেত্রে আপনি নবায়ন ফি মওকুফও করাতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, এখানে আপনি কোনো প্রারম্ভিক বোনাস পাবেন না তবে একটি অতিরিক্ত সহায়ক কার্ড ফ্রিতে পেতে পারবেন।


শেষ কথা

আজ আমরা জানলাম বাংলাদেশের কিছু সেরা ক্রেডিট কার্ড প্রোভাইডার ও কার্ডগুলো সম্বন্ধে কিছু সংক্ষিপ্ত তথ্য।


আপনারা যারা বাংলাদেশি পাঠক আছেন তারা যদি ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করতে চান, তাহলে উপরিউক্ত ব্যাংক বা কার্ডগুলো অবশ্যই ব্যবহার করতে পারেন।


আশা করি আমরা আপনাদের সঠিক তথ্য দিতে বা আর্থিক বিষয়াবলীতে সহায়তায় সক্ষম হয়েছি। যদি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।


এছাড়া পোস্ট সম্বন্ধে আপনাদের যেকোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে সামনের কোনো নতুন পোস্টে।


আরও পড়ুনঃ আয় অল্প হলেও সঞ্চয় করার দারুণ পদ্ধতিগুলো জেনে নিন