বাংলাদেশের সেরা ৫টি লাইব্রেরি সম্পর্কে জানুন! সাথে থাকছে বোনাস!
বই হলো সফলতার মই। আর এই বই বসবাস করে গ্রন্থগারে। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় লাইব্রেরি। বর্তমানে সময়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশেই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের লাইব্রেরি। আমাদের দেশেও আছে এরকম অসংখ্য লাইব্রেরি। বাংলাদেশের এরকমই পাঁচটি লাইব্রেরি সম্পর্কে জেনে নিতে পড়ে নিন পুরো এই লেখাটি।

১. সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থাগার
১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই গ্রন্থগারটি বাংলাদেশের ‘কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার’। রাজধানী ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত এই গ্রন্থগারটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাঠাগার।
গ্রন্থগারটির অধিকাংশ বই বাংলা ও ইংরেজিতে হলেও হিন্দি, উর্দু, আরবি ও ফারসি ভাষার বইও এই গ্রন্থগারের সংগ্রহে রয়েছে।
দেশের দৈনিক পত্রিকা ও সাময়িকীর কপি এই গণগ্রন্থাগারের সংগ্রহে থাকে। সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থগারের সংগ্রহে রয়েছে ২,১৫,৪৩২ টি বই।
জাতীয় এই গ্রন্থাগারটি শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিনই খোলা থাকে।
২. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই গ্রন্থাগারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ভবনের দিকে টিএসসির মূল কেন্দ্রের পাশে অবস্থিত।
১৮ হাজারো বই নিয়ে যাত্রা শুরু করা এই গ্রান্থাগারটির বর্তমানে সংগ্রহে আছে প্রায় ৯ লক্ষ বই। এছাড়াও সংগ্রহে রয়েছে ৩০ হাজারের মতো বিরল পান্ডুলিপি।
বিভিন্ন জার্নাল, মাইক্রোফিল্ম এবং মাইক্রোফাইচ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় এই গ্রন্থাগারের সংগ্রহে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, নিবন্ধিত স্নাতক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ১০ দিনের জন্য ১০ টি বই নিয়ে পারেন উক্ত পাঠাগারটি থেকে।
৩. ইসলামিক ফাউন্ডেশন লাইব্রেরি
বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি সৌন্দর্যমণ্ডিত ভবনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন লাইব্রেরিটি অবস্থিত। লাইব্রেরিটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো ইসলামিক পাবলিক লাইব্রেরি হিসেবে পরিচিত।
এই লাইব্রেরির সংগ্রহে রয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার বই। বেশির ভাগ বই ইসলামী বিষয়ক হলেও এখানে ইতিহাস, ভূগোল, গণিত, দর্শন ও স্বাস্থ্য বিষয়ক বইও রয়েছে।
দৈনিক পত্রিকা, সাময়িকীও রাখা হয় এই লাইব্রেরিতে। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে এই লাইব্রেরির সংগ্রহে রয়েছে ৬১ কেজি ওজনের ১১০০ পৃষ্ঠায় রচিত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ পবিত্র কোরআন শরীফ।
প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বই ক্রয় করা হয় এই লাইব্রেরির জন্য। শনিবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিনই খোলা থাকে এই লাইব্রেরি।
৪. বৃটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি
১৯৫২ সালে পুরাতন ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডে বৃটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে এই লাইব্রেরিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ফুলার রোডে অবস্থিত।
বৃটিশ কাউন্সিল ভবনের নিচতলায় বৃটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরির অবস্থান। ইংরেজি ভাষায় রচিত একাডেমিক ও নন-একাডেমিক প্রায় ২৫ হাজার বইয়ের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে বৃটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরির।
১৫ হাজারের উপরে সিডি-ডিভিডি সংগ্রহের পাশাপাশি সাইবার জোনও রাখা হয়েছে এই লাইব্রেরিতে। সরকারি ছুটির দিন বাদে লাইব্রেরির কার্যক্রম প্রতিদিন চালু থাকে।
শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বৃটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি খোলা থাকে। শুক্রবারে বিকাল ৩ টা সন্ধ্যা ৭ টা কার্যক্রম পরিচালিত হয় বৃটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরির।
৫. বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লাইব্রেরি
প্রায় এক লাখের মতো বই সংগ্রহে থাকা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লাইব্রেরিটি বর্তমানে নতুন ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পাঠকের দোরগোড়ায় বই পৌঁছে দিতে তারা ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
দৃষ্টিনন্দন ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির গাড়িগুলো তে ৪০০০, ৬০০০, ৮০০০, ১১০০০, এবং ১৭০০০ হাজারের মতো বই থাকে।
প্রতিটি লাইব্রেরি প্রতি সপ্তাহে শহর ও গ্রামে গড়ে ৪০টির মতো এলাকায় গিয়ে আধঘন্টা থেকে দু'ঘন্টা পর্যন্ত সদস্যদের বই দেওয়া নেওয়া করে।
৬. বোনাস - রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এটি একটি তিনতলা ভবন যা অসাধারণভাবে লাইব্রেরির উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়েছে।
এটি বাইরে থেকে সুন্দর দেখায় এবং লাইব্রেরি ব্যবহারকারীদের জন্য শান্ত এবং আরামদায়ক পরিবেশ সরবরাহ করা আছে।
ভবনের নিচতলা স্টোরেজ এবং বই প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হয়, পড়ার ঘরগুলির জন্য সুন্দরভাবে ডিজাইন করা ভাল বায়ুচলাচল প্রথম তলা এবং ক্যাটালগিং, অটোমেশন এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য দ্বিতীয় তলা।
এটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম গ্রন্থাগারগুলির মধ্যে একটি এবং এটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক এবং সাধারণ পাঠকদের পাঠাগারের সহায়তা প্রদান করে আসছে।
এই লাইব্রেরিতে 3,50,000 এরও বেশি বই, 40,000 জার্নাল ভলিউম এবং সাময়িকী রয়েছে।
এই বই এবং জার্নালগুলি জ্ঞান এবং তথ্যের সমস্ত ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন, বিজ্ঞান এবং ফলিত বিজ্ঞানের উপর সমান জোর দিয়ে একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি প্রতিফলিত করে।
লাইব্রেরিতে সংবাদপত্র এবং অন্যান্য 'ক্ষণস্থায়ী' প্রকাশনার একটি বিশাল সংরক্ষণাগার রয়েছে।