মশার থেকে হয়রান? জানুন মশা থেকে পরিত্রাণ কিভাবে পাবেন
মশা অতি ক্ষদ্র প্রাণী হওয়া সত্ত্বেও অসহ্যকর যন্ত্রণাদায়ক। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষ সারাজীবন সংগ্রাম করে আসছে। তবুও নিস্তার পাচ্ছে না। আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে কীভাবে খুব সহজে মশা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

মশা অতি ক্ষুদ্র প্রাণী হওয়া সত্ত্বেও আমাদের জীবনটাকে তছনছ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এক পাল মশা ঘরে প্রবেশ করলে সেই দিন আর রক্ষা নেই।
মানুষ সাধারণত জঙ্গলের হিংস্র বাঘ কেও এতটা ভয় করে না, যতটা মশাকে করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে মশার কামড়ে শুধু যে অসহ্যকর যন্ত্রণা হয় তা-ও নয়, মশা নানা রকমের রোগ বহন করে নিয়ে আসে। মশাবাহিত রোগ সবথেকে বেশি ভয়ঙ্কর হয়।
বিশেষ করে স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। এছাড়াও ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো মারাত্মক রোগ গুলো মশার কারণেই হয়ে থাকে।
আর এ কারণেই সাধারণত অন্যান্য যে কোন কিছুর থেকে মানুষ মশাকে অনেক বেশি ভয় পেয়ে থাকে।
সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই মশা ঘরে প্রবেশ করা শুরু করে। এই জন্য সূর্য ঢলে পড়ার সাথে সাথেই দেখা যায় শহরের অট্টালিকাগুলোর জানালা দরজার সব ঠাস ঠাস করে বন্ধ করে দেয়া হয়।
তাই বলে গ্রামগঞ্জে মশা নেই, এমনটি আবার ভেবে বসবেন না। মশার উপদ্রব সকল জায়গায় রয়েছে। দরজা জানালা বন্ধ করে দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো যাতে করে কোন মশা বাড়ির ভেতর প্রবেশ করতে না পারে।
কিন্তু সবসময় মানুষের এই কার্যপদ্ধতি সফল হয় না। কেননা মানুষ যত দ্রুত দরজা জানালা বন্ধ করতে চায়, তার থেকেও বেশি দ্রুত মশা ঘরে ঢুকে পড়ে। সুতরাং মশার সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষ কখনোই পেরে ওঠে না।
এই ক্ষুদ্র প্রাণীটার সাথে প্রাচীনকাল থেকে মানুষের যুদ্ধ লেগে আছে। অনেক সময় ধরে মশা দমন করার চেষ্টা করা হলেও দেখা যায় যে, এই মশাকে সম্পূর্ণভাবে দমন করা যায় না।
আর যেহেতু মশাকে দমন করা সম্ভব নয়, তাই আমাদের উচিত এমন কাজ করা যাতে করে মশা আমাদের নাগাল না পায়। এতে করে আমরা মশার কামড় থেকে রক্ষা পেলেও পেতে পারি।
আর আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে মশার উপদ্রব থেকে কিভাবে খুব সহজে বেঁচে থাকা যায়। আশা করি এই দারুন টিপস গুলো আপনাদের সত্যি কাজে লাগবে এবং আপনারা উপকৃত হবেন।
তাহলে চলুন দেরী না করে আর্টিকেলটির মূল অংশে প্রবেশ করে ফেলি।
ফ্যান চালু রাখুন
মশা থেকে বাঁচার জন্য সর্বপ্রথম যে কাজটি আপনারা করতে পারেন, সেটা হল আপনার ঘরের ফ্যানটা ফুল স্পিডে ছেড়ে রাখতে পারেন।
সিলিং ফ্যান কিংবা টেবিল ফ্যান হোক আর না কেন, সেটা যদি আপনার দিকে মুখ করে ফুলস্পিডে ছেড়ে রাখেন, তবে বর্ষার ওড়ার গতির সাথে আপনার ফ্যানের পাখার বাতাস সংঘর্ষিত হবে এবং মশা আপনার নাগাল পাবে না।
এতে করে হয় কি, যদি মশা আপনার বাড়ি ঘরে থেকেও থাকে তবুও ফ্যানের অতিরিক্ত স্পিডের কারনে সেটা আপনার গায়ে বসতে পারবে না।
কেননা যখনই সে আপনার চামড়ায় বসে হুল ফোটানোর চেষ্টা করবে, ততবার ই বাতাসের ধাক্কায় উড়ে অন্য কোথাও চলে যাবে। এটা সবথেকে সহজ পদ্ধতি মশা তাড়ানোর জন্য।
হলুদ আলোর ব্যবহার
বাড়িতে সাদা আলোর তুলনায় হলুদ আলোর ব্যবহার করলে মশা তেমন একটা দেখা যায়না। হলুদ আলো সাধারণত অন্যান্য আলোর তুলনায় একটু বেশি তাপ উৎপন্ন করে।
একই সাথে এর রংটা মশার সহ্য হয় না বিধায় সে সাদা আলোর থেকে হলুদ আলোতে থাকতে অস্বচ্ছন্দবোধ করে। সুতরাং আপনি যদি মশার সমস্যা অতিষ্ঠ হয়ে যান, আপনার ঘরে হলুদ আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন। দেখবেন মশা অনেকটাই কমে গিয়েছে।
মসকুইটো ক্রিম
বাজারে অনেক রকমের মশা রোধক ক্রিম বের করা হয়েছে। এই ক্রিমটি সাধারণত যে কোনো রকমের পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন।
আপনি যখন বাইরে যাবেন অথবা বাড়ির ভেতর যে অবস্থায় থাকুন না কেন, চেষ্টা করবেন আপনার শরীরের যে অংশ কাপড়হীন অবস্থায় থাকবে, সেখানে মসকুইটো ক্রিম লাগিয়ে রাখার ।
এতে করে মশা আপনাকে সহজে কামড় দিতে পারবে না এবং আপনিও মশার কামড় থেকে বেঁচে যাবেন।
আজকাল বাজারে বিশেষ সুগন্ধিযুক্ত এবং ভালো কোয়ালিটির মসকুইটো ক্রিম পাওয়া যায়। একটা পকেট ক্রিম রেখে সারাক্ষণ আপনি বহন করতে পারবেন। বিশেষ করে এই ক্রিমটি বাচ্চাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
যখনই আপনার সন্তান বাইরে খেলতে বের হবে কিংবা স্কুলে যাবে অথবা যেখানেই যাক না কেন, আপনি চেষ্টা করবেন এই ক্রিমটি শরীরে লাগিয়ে দেওয়ার।
এতে করে আপনার সন্তান যেমন মশা থেকে সুরক্ষিত থাকবে। তেমনি ভাবে আপনিও আপনার সন্তানের অতিরিক্ত চিন্তা করা থেকেও পরিত্রান পাবেন।
রং বেরঙের পোশাক পরিহার
মশা সবসময় রংবেরঙের জিনিসের প্রতি আকৃষ্ট বেশি হয়। শুধু মশাই নয়, মৌমাছি প্রজাপতি ইত্যাদি বিভিন্ন কীটপতঙ্গ রং-বেরংয়ের জিনিসের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়।
আর এই কারনেই মশা এবং প্রজাপতির মাধ্যমে ফুলের পরাগায়ন সংগঠিত হয়। কিন্তু মশা সাধারণত রং-বেরংয়ের জিনিসের প্রতি আকৃষ্ট হলেও তার তেমন কোনো ভূমিকা নেই ফুলের পরাগায়নে কাজ করার।
আপনি যদি কালারফুল ড্রেস পড়ে বসে থাকেন, তবে মশা আপনার প্রতি খুব সহজেই আকৃষ্ট হবে এবং আপনার শরীর থেকে রক্ত চোষা শুরু করবে।
এই ক্ষেত্রে মশা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে, আপনি রং বেরঙের পোশাক পরিহার করুন তবে অবশ্যই আপনি শুধুমাত্র মশার কারণে রংবেরঙের পোশাক পরিহার করতে ইচ্ছুক হবেন না।
সেটা অবশ্য সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার। এখানে মাত্র আপনাকে একটি টিপস শেয়ার করে দেওয়া হয়েছে যাতে করে আপনি মশা থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।
সুগন্ধি ব্যবহার
কোন কীটপতঙ্গ সাধারণত সুগন্ধির সহ্য করতে পারে না। তাই আপনি মশা থেকে রক্ষা পেতে চাইলে পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন।
পারফিউমের অ্যালকোহল মশার বিরক্তির কারণ। তাই সুগন্ধি ব্যবহার করার ফলে মশা আপনার ধারের কাছেও আসতে যাবে না।
সুপ্রিয় পাঠক, উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করে আপনি যে কোন জায়গায় মশার উপদ্রব থেকে বেঁচে থাকতে সক্ষম হবেন। আজ তাহলে এখানেই ইতি টানছি, ধন্যবাদ।