রূপচর্চায় রান্নাঘরের এই উপাদানগুলি সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন

দামি জিনিস যে সব সময় ভালো হয় এমন তো কোন কথা নেই। ছোট ছোট বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিলে সেটাও একদিন বড় কাজে আসে। তাই রূপচর্চায় রান্নাঘরের উপাদানের উপর ভরসা করে দেখুন না, আশা করি অনেক ভাল ফল পাবেন।

রূপচর্চায় রান্নাঘরের এই উপাদানগুলি সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন
রূপচর্চায় রান্নাঘরের এই উপাদানগুলি সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন


সুন্দর ত্বক কে না চায়, তবে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ক্যামিকেলের যুগে ভালো জিনিসটা হাতে আসতেই চায় না। তার ফলে আমরা অজান্তেই আমাদের ত্বককে নষ্ট করে ফেলছি নিজের হাতেই।


বেশি টাকা-পয়সা খরচ না করে ঘরে বসে আপনি কিভাবে নিজের শরীরের এবং ত্বকের যত্ন নেবেন সেটা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে।


উপাদান গুলি কি কি তাহলে জেনে নেওয়া যাক 

আমরা রান্নাঘরে এমন অনেক জিনিস ব্যবহার করি যেগুলো ঘরোয়া প্রসাধনের উপাদান হিসেবে কাজে লাগানো যায়। যেমন ধরুন ডিম, আলু, শসা, লবণ, মধু, চা পাতা, দই ইত্যাদি। চলুন তাহলে সেগুলো ব্যবহার সম্পর্কে একটু জানা যাক- 


১. মধু :

প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর মধ্যে মধু একটি অতিপয়োজনীয় খাদ্যবস্তু। সরাসরি ত্বকে লাগালে রেশমের মতো উজ্জ্বলতা আসে। যাদের ত্বক একটু তেলতেলে তারা মধুর সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে  ত্বকে লাগালে ত্বক মসৃণ ও কোমল হয়।


যাঁদের ত্বক শুষ্ক ধরনের ডিমের বদলে দুধ মিশিয়ে নিতে পারেন। মধুর আরো একটি উপকারী গুণ হল মধু ক্লান্তি দুর করে অনিদ্রা নিবারণ করে স্নানের সময় জলে এক চামচ মধু দিয়ে স্নান করলে শরীরের উপকার হয়।


২. আলু :

ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ মেটাতে আলু ভীষণভাবে উপকার করে। আলু চাকা করে কেটে দুচোখে রাখলে চোখ ঠান্ডা হয়, রোদ লাগা জনিত জ্বালা নিবারণ হয়, আলু একজিমা তেও ভালো কাজ করে আলু। 


ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখতে, চোখের পাশে ফোলা কমাতে ব্যবহার করতে পারেন। আলু কেটে বা আলু থেঁতো করে আইপ্যাড এর মত ব্যবহার করা যায়।


আলু ত্বকে ব্লীচের কাজ করে। রোদে পোড়া দাগ অনায়াসেই তুলে দিতে পারে।


৩. দই :

কম বেশি সবার ঘরে ফ্রিজে টক দই থেকে থাকে দই তে নানা ধরনের এনজাইম থাকে।


মুখ ধোয়ার পর দই মুখে ঘষে মিনিট কুড়ি পরে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন যাদের তৈলাক্ত ত্বক বা দাগ ছোপ যুক্ত তাদের জন্য খুবই উপকারী।


৪. ডিম :

ডিমের প্রয়োগে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়। ভালো করে ফেটিয়ে নিয়ে মুখে ঘাড়ে প্রলেপ এর মত লাগিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। ডিমের ব্যবহার ত্বকের টানটান ভাব আসে পুষ্টি পায়।


সারা দিনের কাজ কর্মের পর মুখে ডিমের প্রলেপ দিলে চকচকে ও ঝকঝকে লাগে। ডিমের সাদা অংশ শ্যাম্পু করার আধঘন্টা আগে মাথায় লাগাতে পারেন এতে চুল আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।


৫. লবণ :

লবণ মেশানো হালকা গরম জল দিয়ে চোখ ধুলে চোখের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং চোখের ফোলা কমে যায়। লবণ মেশানো জলে তুলো ভিজিয়ে চোখের উপর প্যাডের মতো রাখুন ১ লিটার জলে এক চামচ পরিমাণ লবণ লাগে।


আবার হালকা গরম জলে তিন থেকে চার চামচ লবণ দিয়ে সেই জলে পা ডুবিয়ে রাখলে ক্লান্তি দূর হয়।


৬. বেসন :

বেসন শুধুমাত্র রান্না করার কাজে ব্যবহৃত হয় না রূপচর্চায় এর অবদান অনেকটাই। এই বেসনের সাথে আলুর রস কিংবা টমেটোর রস অথবা গোলাপজল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে পারেন, তারপর এটি মুখে গলায় হাতে লাগাতে পারেন।


শুকিয়ে যাওয়ার পর ঠান্ডা জলে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। ফলাফলটা আপনি নিজের চোখেই দেখতে পাবেন সপ্তাহে অন্তত একবার এই প্যাকটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।


৭. টমেটো :

টমেটো আমরা সবজি হিসেবে ব্যবহার করি। কিন্তু এই টমেটোতে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাদের ত্বকের পক্ষে উপকারী।


অর্ধেক টমেটোর উপর হালকা চিনি ছড়িয়ে দিয়ে ত্বকের উপর ঘষতে পারেন। ত্বকের উপরে মরা কোষ গুলোকে নিমেষেই তুলে ফেলতে পারে এই টমেটো চিনির স্ক্রাব। কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।


নিজের যত্ন নিতে গাদা গাদা টাকা লাগেনা, একটু সময়, একটু নিজেকে ভালো রাখার, সুন্দর রাখার মানসিকতা থাকলেই হবে। এগুলোতে আপনার এক টাকাও আলাদা করে খরচ করতে হচ্ছে না। হাতের কাছে রান্নাঘরে পেয়ে যাবেন প্রাকৃতিক উপাদান, যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও পাবেন না আপনি।


সব কিছু মিলিয়ে বেশ একটা ভালো ব্যাপার তাই নয় কি। শুধুমাত্র আপনার এই বিষয়ে আগ্রহ থাকার প্রয়োজন। ত্বকের একটু যত্ন নিলে ত্বক সুন্দর ও সতেজ থাকবে সে ক্ষেত্রে আপনার একটু কষ্ট তো করতেই হবে।