শেখ মুজিবঃ শতবর্ষের চেতনায় মুজিবীয়শপথ

মুজিবীয় শপথ আগামী প্রজন্ম নির্মাণে চেতনার আলো।

শেখ মুজিবঃ শতবর্ষের চেতনায় মুজিবীয়শপথ
শতবর্ষের চেতনায় মুজিবীয়শপথ


চেতনার আলো জয়বাংলার মুক্তির শিখা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হৃদয়ে আছে লিখা।

কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির ভালোবাসার অমর একটি নাম 'বঙ্গবন্ধু'। হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন স্বাধীনতা। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রবাদপুরুষ চিরস্মরণীয় বাঙালির একটি নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।


তিনি বাঙালির জাতিসত্তার বিকাশে এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সর্বাদিক অবদানে হলেন জাতির পিতা। পৃথিবীর ইতিহাসে ও তিনি চিরভাস্বর হয়ে আছেন। তাঁর অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব, জীবনাদর্শ ও কর্মকীর্তি দিয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির স্বীকৃতি। বাঙালির হৃদয়ে তাঁর স্থান ভালোবাসার চির-অমলিন।

শেখ মুজিব 

আমার একটি নদীর নাম 
বঙ্গবন্ধু, 
আমার একটি পাখির নাম
অথৈ সিন্ধু। 

আমার স্বাধীনতার নাম
বঙ্গবন্ধু, 
সবুজ পাতার লাল সালাম
মুক্তির বিন্দু। 

আমার ঐ আকাশের নাম
শেখ মুজিবুর, 
আমার পরিচয়ের নাম
ঐ একাত্তোর।

আমি ভালোবাসি দেশ 
মা ও মাটি,
আমার চেতনায় মুজিব 
সত্য খাঁটি। 

শতবর্ষের লও সালাম
হে, শেখ মুজিব, 
তোমার স্বপ্নে হয় রঙিন 
ভোরের সজীব। 

নেলসন ম্যান্ডেলাঃ যিনি জীবন্ত কিংবদন্তীর রাষ্ট্রনায়ক

নোবেল বিজয়ী নাদিয়া মুরাদ : যৌনদাসী থেকে আজ হাজারো মানুষের মুক্তির প্রতীক

আব্রাহাম লিংকন: একজন কালজয়ী ব্যক্তিত্বের গল্প জানুন

কিশোর কুমার: ভারতীয় সদা হাসিখুশি একজন সুপারষ্টার

জীবনানন্দ দাশ: আধুনিক বাংলা কবিতার পথিকৃৎ এর গল্প জানুন


পাকিস্তান সৃষ্টির অল্পকিছুদিন পরই স্পষ্ট হয়ে ওঠে বৈষম্য আর পরাধীনতার গ্লানি। নিপীড়িত বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে যখন ঘনকালো মেঘের দূর্যোগ আধাঁরে পথ হারা মানুষ। শোষণ শাসন নিপীড়িত বাঙালি তখনই শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবময়ী আবির্ভাব। অসাধারণ দেশপ্রেম দূরদর্শী নেতৃত্ব  অন্যায় অত্যাচারের অবিচারের প্রতিবাদী চেতনা দিয়ে সমগ্র বাঙালি জাতিকে তিনি এক ও ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। 


তিনি ১৭ মার্চ ১৯২০ সালে গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ায় পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশ রাস্ট্রের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর অদম্য চলাফেরা খেলাধুলা পাড়া গায়ে স্কুলে বাড়িতে চেতনার পরিচয় মিলে। সবাই তাকে 'খোকা' নামে ডাকত। ছিপছিপে গড়নের দেহ ছটফটের স্বভাবের ছিলেন। 


১৯৪৮ সালে বাঙালির ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে ছাত্রসমাজ। এ সময় গ্রেপ্তার হন শেখ মুজিব সহ আরো অন্যান্য নেতা।

১৯৪৯ সালে তাঁর প্রচেষ্টায় আব্দুল হামিদ খান ভাসানী কে নিয়ে গঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। তিনি এই সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। 


১৯৭১ সালে ২ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সারা বাংলায় সর্বাত্নক অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। ৭ মার্চ ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে প্রায় দশ লক্ষ লোকের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। 


"এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, 
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।'


যে সুরে উঠলো জেগে আত্নত‍্যাগে বাঙ্গালী ভাই 
সে সুরে গড়ব এবার শতবর্ষের স্বপ্ন ছড়ায়।


১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র, ঘুমন্ত বাঙালির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এই রাত ইতিহাসের ঘৃণিত কালোরাত্রি হিসেবে পরিচিত। পিলখানা, রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। মধ্য রাতে হানাদার বাহিনী হাতে গ্রেফতার হন অন্যায়ের কাছে আপসহীন বাঙালি জাতির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সাক্ষরিত ঘোষণার পত্র বার্তাটি ২৬ ও ২৭ মার্চে চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করার মাধ্যমে প্রচারিত হয় স্বাধীনতার ঘোষণা।  সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে স্বতঃস্ফূর্ত মুক্তির সংগ্রাম স্বাধীনতার আন্দোলন। 


বাংলাদেশ ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল। বাংলার নির্ভীক মহান অবিসংবাদিত নেতা।  ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্ত হন, ১১ জানুয়ারি অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের শুভ সূচনা হয়। সংসদীয় গণতন্ত্র সরকার পদ্ধতি চালু করে প্রধানমন্ত্রী পদ অলংকৃত করেন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বিপথগামী সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হাতে সপরিবারে নিহত হন।


বাঙালি জাতির জীবনে ইতিহাসের বরপুত্র প্রবাদপুরুষের মুজিব শতবর্ষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের চেতনায় আলো জ্বালতে চায়। যে আলোয় আমরা পেয়েছি বিশ্ব নন্দিত নেতা, বাঙালি জাতির মহান পুরুষ মানুষের বন্ধু। যে আলোয় আমরা পেয়েছি মায়ের ভাষা সবুজের বুকে লাল পতাকার স্বাধীন পরিচয় সে প্রেরণায় আমাদের পথ হবে রঙিন। এই প্রজন্মের হাত ধরে বাস্তবিক রূপান্তর করতে এগিয়ে চলার শক্তি চেতনা  আদর্শ হোক মুজিব শতবার্ষিকীর শপথ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করব - এই হোক আমাদের প্রত্যয়। 


বঙ্গবন্ধু

আমার চেতনার শক্তি,
পরাধীনতার মুক্তি,
মুজিব, মুজিব, শেখ মুজিব,

মায়ের ভাষার সুবিশাল, 
সবুজের বুকে যে লাল, 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। 

পদ্মা, মেঘনার একটি নাম,
স্বাধীনতার বল সংগ্রাম, 
আমার আদর্শে মুজিব, 

বিশ্ব নন্দিত নেতা, 
সোনালী স্বপ্নের নেতা,
জাতির পিতা শেখ মুজিব। 

মুজিব শতবর্ষের বল,
দেশ গড়ার শপথে চল,
সোনালী ভোরের সজীব, 

উড়ন্ত পাখির ডানা,
বাংলা আমার ঠিকানা, 
খোকা নামের শেখ মুজিব। 


শতবর্ষের লও সালাম মুজিবীয় শপথ। আমরা গড়ব আমরা লড়ব দেশের সেবায় তরুণ। সুরে সুরে হোক বন্ধন, বাঁধো বুকে বল আমরা হব আলো। দিকে দিকে আজ ছড়িয়ে দেবো তাজ দেশ প্রেমের ভালো।


যে অঙ্কুরে অঙ্কুরিত হয় বরণীয় স্মরণীয় সোনার মানব সে মাটিতে রূপন করি এসো আমাদের গৌরব আর সৌরভ। যে আলোয় আঁধার কাটে পথ খুঁজে পায় পথিক সে আলোতে এসো রাঙাবো আগামীর স্বপ্ন।


শতবর্ষে শপথ করি 
হিংসা ভুলে সবাই 
মিলেমিশে এক হয়ে আজ
লড়াই দেশের সেবায়।

শিক্ষা দীক্ষায় গড়ব সমাজ 
বেকার মুক্ত তরুণ 
জ্বালব আলো ভাসব ভালো
আমরা মায়ের অরুণ।

রচনা:- রুদ্র মোহাম্মদ মনির