সফল হতে হলে খারাপ হতে হয় - সফলতার আসল সত্য
খারাপকে সবাই বর্জন করতে চায়। কিন্তু যখন জীবনে সফল হওয়ার জন্য খারাপ হওয়ার প্রয়োজন পরে তখন সেটাকে বর্জন না করাই শ্রেয়।

আমরা সকলেই যার যার নিজের জীবনের সফলতা অর্জন করতে চাই। কিন্তু আমাদের আশেপাশের পরিবেশ, বিশেষ করে সামাজিক পরিবেশ গুলো আমাদের সফলতার বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
যখনই আমরা সমাজের বিরুদ্ধে যে কোন ভালো কিছুর উদ্যোগ নিয়ে কাজ করা শুরু করে দেই, তখনই দেখা যায় যে আমাদের সর্বপ্রথম বাধাটা সমাজ থেকে আসে। হয় তারা আমাদের সফলতা মেনে নিতে পারে না অথবা তারা চায় না আমরা সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে এমন কোন কাজ করে বসি যাতে আমাদের সাফল্য সফলতা শিখরে চলে যায়।
কিন্তু যাই হোক না কেন আপনি যদি জীবনে সফল হতে চান এবং তার জন্য আপনাকে সমাজের বিরুদ্ধে কেউ কাজ করতে হয়, তাও করুন। কেননা সফল হতে গেলে বাধা-বিপত্তি এসে থাকে। কারো পরিবার থেকে আসে, কারো সমাজ থেকে আসে, কারো বা রাষ্ট্র থেকে আসে।
কিন্তু এই বাধা গুলোর কারণে আপনি আপনার সফলতা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন না। আপনি আপনার জীবনে সফল হওয়ার জন্য অনেক বেশি ডেডিকেটেড। সুতরাং আপনাকে যেকোন মূল্যেই সফলতা অর্জন করতে হবে।
এসব ছোটখাটো পথের কাটা নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। এগুলোর সাথে কিভাবে মোকাবেলা করে নিজের সাফল্যকে নিজের হাতের মুঠোয় আনা যায় সেই চেষ্টা সর্বক্ষণ করতে হবে।
মনে রাখবেন যারা পৃথিবীতে সফল হয়েছে, তাদের জীবনেও কিন্তু নানা রকমের কাঁটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তারা তাদের সেই পথের কাঁটা গুলোকে ঠিকই ঝাড়ু দিয়ে দূর করে ফেলেছে এবং রাস্তা পরিষ্কার করে সামনে এগিয়ে গেছে। আপনার ক্ষেত্রেও একই কাজ করতে হবে।
সমাজ থেকে বা পরিবার কিংবা যেকোন জায়গা থেকে যদি সাফল্যের পথে বাধা এসে দাঁড়ায়, সে গুলোকে পরিষ্কার করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এই জন্য যদি আপনাকে সমাজের কাছে অনেক বেশি খারাপ হতে হয়, আপনি খারাপ হন।
যদি আপনি খারাপ হলে আপনি সফলতা অর্জন করতে পারেন, তবে খারাপ হওয়াই আপনাদের কাছে প্রযোজ্য। আজকের আর্টিকেলটিতে তাই সমাজের কাছে খারাপ হয়ে কিভাবে সফলতা অর্জন করা হয়, সেই সকল টিপস সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
তো চলুন আমরা আর দেরি না করে আর্টিকেলটির অংশে প্রবেশ করে ফেলি।
লোকে কি ভাববে?
আপনি কোন কাজ করার সময় হয়তো একটা কথা প্রায় শুনতে হবে যে আপনার এই কাজের কারণে লোকে কি ভাববে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ভাবনাটি আপনার কিন্তু কিছু আসে যায়না।
লোকদেরকে লোকদের মত ভাবতে দিন। লোকে কি ভাববে এই জিনিসটা যদি আপনি ভাবেন তাহলে লোকে কি ভাববে বলেন? তাই আপনি যদি সফলতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়াতে চান, তবে আপনাকে লোকের ফিলিংস বা মানুষজনের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া খুব একটা বেশি প্রয়োজন নাই।
কেননা আপনি ভালোমতো জানেন আপনার জীবনে সফল হওয়ার জন্য কি করতে হবে, আর কি করতে হবে না। এক্ষেত্রে যদি আশেপাশের লোকজন আপনাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তাদের পাত্তা দিবেন না। খুব ভদ্রভাবে তাদেরকে জানিয়ে দেবেন।
অথবা তাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলবেন যে, তাদের কথাবার্তা কিংবা লোকজন কিভাবে সেটা নিয়ে আপনার কিছু আসে যায় না। আপনি আপনার মত কাজ করে যাবেন।
নিজের দোষে অন্যকে দোষ দেওয়া দরকার নেই
সমাজে বসবাস করতে হলে মানুষ অনেক রকমের ভুল করে থাকে এবং উক্ত ভুলের কারণে যদি কখনো ধরা পড়ে যায় এবং স্বীকার করতে হয়, কিছু কিছু ব্যাক্তি ভালো সাজার জন্য কিংবা নিজের সফলতাকে না হারাতে চাওয়ার জন্য, নিজেদের দোষ স্বীকার করে না।
বরং অন্য ব্যক্তির উপর নিজের দোষ ছেড়ে দেন। যা প্রকৃতপক্ষে একদমই অন্যায়। আপনার মনে হতে পারে আপনার দোষের কথা সমাজ শুনলে আপনার সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনার সাফল্য আপনার হাতে। কোন সমাজের হাতে নয়। সুতরাং যখন আপনি নিজের দোষ করবেন, তখন সেটা দায়ভার নিজের উপরে রেগে গিয়ে অন্য কারো ওপর ছাড়বেন না। বরং নিজে কোথায় ভুল করেছেন, সেই ভুলটা জেনে সেটা সংশোধন করার চেষ্টা করুন।
কখনো আরেকজনের ওপরে সেই কারণে দোষ দেবেন না, যে কারণে আপনি মনোমালিন্য ভুগছেন।
নেতিবাচক বিশ্বাস দূর
আমরা যে সমাজে বসবাস করছি, সেই সমাজ সম্পূর্ণ নেতিবাচকতা ভরপুর। আর এই নেতিবাচক সমাজে বসবাস করে আমরা সফলতা অর্জন করতে অনেক বেশি হোঁচট খাই।
কিন্তু নেতিবাচক লোকদের সাথে মিশাও কোন ব্যাপার না, যদি না আপনি আপনার নিজের ভেতর নেতিবাচক বিশ্বাস না করেন। মনে রাখবেন আপনার নিজের প্রতি ইতিবাচক ধারণা এবং ইতিবাচক বিশ্বাস আপনাকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে।
তাই আপনার কোন কাজ নিয়ে যদি আপনার ভেতর কোনো নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা তৈরি হয় অথবা নেতিবাচক বিশ্বাসের তৈরি হয়, তবে সেই বিশ্বাস করুন এবং নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করুন, "আপনি পারবেন, আপনি কাজটা করতে পারবেন, আপনার দ্বারা সবই সম্ভব, আপনি অবশ্যই সফল হবেন।"
নিজেকে ভালোবাসুন
নিজেকে ভালোবাসা আর স্বার্থপর হওয়ার মধ্যে রয়েছে অনেক পার্থক্য। সমাজে চলতে গেলে আপনাকে আশেপাশের ব্যক্তিদের মতামতের যেমন গুরুত্ব দিতে হবে, তেমনি জীবনে সফল হতে গেলে আপনার নিজেকে ভালোবাসা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
অবশ্যই সমাজের মানুষদের পূর্বে আপনি নিজে আগে। তাই সমাজের মানুষের মতামতের গুরুত্ব দেওয়ার থেকে আপনি নিজে কোন জিনিসে ভাল থাকেন, সেটা আপনার জন্য জানা অনেক বেশি প্রয়োজন।
সেলফ লাভ বা নিজেকে ভালোবাসার শক্তি অনেক বেশি। সুতরাং আপনি সফল হতে হলে আপনাকে প্রথমে সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজেকে ভালবাসতে হবে। আপনি আপনার ক্যারিয়ার কিভাবে বিল্ড আপ করবেন, সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর। সমাজের মানুষের ওপর নয়।
আপনি যে কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন, সেই কাজের উপর আপনি আপনার ক্যারিয়ার বেছে নেবেন। শুধু তাই নয় আপনি আপনার পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করতে পারেন।
পরিবারের কিংবা সমাজের কথা শুনে বিয়ে করার কোন প্রয়োজন নেই। এভাবে আপনি যদি একটি খারাপ ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তবে আপনার জীবনে সফলতার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়াবে।
খেলোয়ার মনোভাব ধরে থাকুন
একজন খেলোয়াড় কে দেখবেন, খেলার থেকে যদি সে আউট হয়ে যায় কিংবা খেলা থেকে বাদ পড়ে যায়, সে কিন্তু খেলা থামিয়ে দেয় না। সে পরবর্তীতে আবার ভালো করে ফেলার চেষ্টা করে এবং পরবর্তীতে কোথায় ভুল করেছে, সেই ভুল পরবর্তীতে না করার চেষ্টা করে।
আপনার ক্ষেত্রেও একই কাজ করতে হবে। চেষ্টা করবেন কখনো জীবনে সফল হতে গিয়ে ভুল পথে পরিচালিত হলে, সেই ভুল সংশোধন করে পরবর্তীতে আবার চেষ্টা করবেন যাতে ভুল না হয়। কিন্তু কখনই আপনার সফলতার চেষ্টা করা থামিয়ে দিবেন না।
এভাবে যদি আপনি আপনার সফলতার দ্বারপ্রান্তে যাওয়ার জন্য সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি খারাপ ব্যক্তির পরিচয় দেন, তবে কিন্তু আপনি শেষপর্যন্ত সফল হতে পারবেন। আশা করা যায় আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে উপভোগ্য ছিল। আজ এখানেই ইতি টানছি ধন্যবাদ।