হাইট বাড়ানোর কিছু সহজ ও বৈজ্ঞানিক উপায়
আপনি কি নিজের উচ্চতা নিয়ে চিন্তিত? উচ্চতা বাড়াতে চাচ্ছেন কিন্তু সঠিক গাইডলাইন পাচ্ছেন না? চিন্তা নেই, পড়ে ফেলুন আমাদের আজকের পোস্ট আর পেয়ে যান উচ্চতা বাড়ানোর সম্পূর্ণ গাইডলাইন।

হাইট বা লম্বা হওয়া নিয়ে আমাদের সমাজের মানুষের মধ্যে অনেক রকম মতবাদ প্রচলিত রয়েছে। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা কম লম্বা বলে নিজেদের হাইট বাড়াতে চান। তারা হয়তো অনেকে আফসোসও করেন, যে যদি আমার হাইট আর ২ ইঞ্চি বেশি হতো।
কি ভালোই না হতো, কিন্তু তারা হয়তো কোনো সঠিক উপায় খুজে পাচ্ছেন না লম্বা হওয়ার জন্য। সবাই হয়তো কোনো শর্টকাট টেকনিক অনুসরণ করতে গিয়ে নিজেদের সময় ও শ্রম নষ্ট করে ফেলছেন। কেউ হয়তো আপনাকে বলতেই পারে, রোজ স্ট্রেচিং বা ঝুলে থাকা প্র্যাক্টিস করলেই আপনি লম্বা হতে পারবেন।
কিন্তু আসলেই কি তাই? মোটেই না, এতটাও সহজ নয় নিজের হাইট বাড়ানো, আবার ওতটা কঠিনও নয়। আপনার বয়স ১৫ হোক বা ৩৫, আপনি অবশ্যই নিজের হাইট বাড়াতে পারবেন যদি আমাদের দেখানো সঠিক উপায়গুলো অনুসরন করেন।
আজ আপনাদের এমন কিছু ব্যায়াম ও ট্রিকস সম্বন্ধে জানাবো, যা আপনাদের নিশ্চিতভাবেই হাইট বাড়াতে সহায়তা করবে, সেটা আপনার বয়স ১৫ হোক বা ৩০, কোনো ব্যাপার নয়। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে, মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
হাইট বাড়ানোর কিছু অব্যর্থ টিপস ও ব্যায়াম:
সাধারণত আমরা সাধারণ মানুষরা, ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রাকৃতিকভাবে লম্বা হতে পারি বা নিজেদের হাইট বাড়াতে পারি। কিন্তু এমনও কিছু ব্যায়াম বা কৌশল রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে ৩৫ বছর বয়স অব্দি নিজের হাইট বাড়ানো সম্ভব। তবে এর জন্য অবশ্যই আমাদের দেখানো ট্রিক্সগুলো সঠিকভাবে অনুসরন করতে হবে এবং হার মানা যাবেনা। তো চলুন শুরু করা যাক।
১. বাইসাইকেল চালানো
উচ্চতা বাড়ানোর প্রথম কৌশল হলো, নিয়মিত বাইসাইকেল চালানো। বাইসাইকেল চালানোর ফলে, আমাদের পায়ের পেশিগুলো বর্ধিত হয়, যা উচ্চতা বাড়ানোর কাজে সহায়ক। সাইকেল চালানোর সময়, সিট এমনভাবে সেট করুন, যাতে আপনার হাটু প্যাডেলিং করার সময়ে সম্পূর্ণ প্রসারিত করতে পারেন। এ
তে আপনার হাটু থেকে পায়ের পেশিগুলো গতিশীল হবে এবং বর্ধিত হতে থাকবে যা উচ্চতা বাড়ানোতে সহায়ক। তবে প্রথমেই অনেক বেশি সিট উঠাবেন না, ধীরে ধীরে সিটের উচ্চতা বাড়িয়ে নেবেন, এতে ধীরে ধীরে আপনার পেশিগুলো চাপ নিতে পারবে।
প্রথমে নিয়মিত ১ ঘন্টা সাইকেল চালানো শুরু করুন, এরপর ধীরে ধীরে সময়, দুরত্ব এবং সিটের উচ্চতা বাড়িয়ে নিতে পারেন।
আরও পড়ুন: ৪ টি এমন প্রশ্ন যেগুলো করলে মেয়েদের সহজেই ইম্প্রেস করতে পারবেন
২. ঝুলে থাকা
উচ্চতা বাড়ানোর দ্বিতীয় কাজটি হচ্ছে ঝুলে থাকা। নিয়মিত ১-২ মিনিট ঝুলে থাকলে, বাহু ও পায়ের পেশি প্রসারিত হয় এবং মেরুদন্ডের সম্প্রসারণও হয়ে থাকে। আপনাকে ওঠা নামা করতে হবেনা, শুধু ঝুলে থাকলেই হবে।
যদি আপনি নিয়মমতো প্রতিনিয়ত বারে ঝুলে থাকেন, তাহলে আপনার উচ্চতা খুব অল্প সময়েই বাড়ানো সম্ভব। প্রথমে প্রতিদিন ১-৩ মিনিট নিস্তব্ধ অবস্থায় ঝুলে থাকবেন, এরপর অভ্যাস হয়ে গেলে সময় বাড়িয়ে নিতে পারেন।
এতে আপনার শরীরের পেশি ধীরে ধীরে প্রসারিত হবে এবং আপনার শরীরের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সহজ হবে।
৩. কাধের উপর ভর করে রাখা
উচ্চতা বাড়ানোর ৩য় উপায় হলো কাধের উপর ভর করে পা উপরের দিকে তুলে ব্যায়াম করা। এই ব্যায়াম করার জন্য নিজের হাত দুটিকে সাপোর্ট হিসাবে ব্যবহার করুন। নইলে আপনি যদি ভারসাম্য হারান, তাহলে কাধে প্রচন্ড ব্যথা পেতে পারেন।
এই ব্যায়ামটি আপনাকে প্রথমে ২০-৩০ সেকেন্ড করতে হবে, আর অভ্যাস হয়ে গেলে ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে হবে। প্রথমে ২০-৩০ সেকেন্ডে শুরু হলেও, পরে ২ মিনিট অব্দি ব্যায়ামটি করতে পারেন। এতে শরীরের রক্ত চলাচল দ্রুত হয় ও পেশি বর্ধনে অত্যাধিক সহায়তা করে।
এই ব্যায়ামটি করা হয়তো একা একা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই চাইলে আপনি কারও সহায়তা নিতে পারেন। আপনার সহায়ককে আপনার পজিশন সঠিক করে দেয়ার জন্য বলতে পারেন।
আর খেয়াল রাখবেন, আপনার কাধের উপর শরীরের ভারসাম্য রেখে, পা দুইটি সোজা বরাবর উপরের দিকে ভাসমান রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: ঘুমের ব্যাপারে ৮ টি আজব তথ্য যা আপনাকে অবাক করে দেবে
৪. কোবরা অনুশীলন করা
এই ব্যায়ামটি উচ্চতা বাড়ানোর জন্য অন্যতম সেরা কৌশল হিসাবে কাজ করে। এই ব্যায়ামে আপনাকে ঠিক কোবরা সাপের মতো মুভমেন্ট অনুশীলন করতে হবে। ব্যায়ামটি অনেকটাই পুশ আপের মতো কিন্তু পুশ আপ নয়। আপনাকে আপনার হাটু থেকে পায়ের পাতা মাটিতে শুইয়ে রাখতে হবে।
এরপর নিজের শরীরের উপরের বাকি অংশটুকু হাতের উপর ভর রেখে ওঠানামা করতে হবে। ৩০ সেকেন্ড প্ল্যাঙ্ক অবস্থায় থাকবেন, তবে হাটু থেকে পাতা অব্দি মাটিতেই থাকবে। আর ৩০ সেকেন্ড ঠিক সাপের মতো ওঠানামা করতে হবে। এতে শরীরের অভ্যন্তরীণ হাড়ের বিকাশ ঘটে এবং পেশি সম্প্রসারিত হয়ে উচ্চতা বাড়াতে সহায়তা করে।
খুব ধীরে ও সাবধানতার সাথে এই অনুশীলন করবেন, নইলে পেশিতে টান লাগতে পারে বা ছিড়েও যেতে পারে। যখন প্ল্যাঙ্ক অবস্থায় থাকবেন, তখন নিজের শরীরের সামনের অংশ যথাসম্ভব পিছনের দিকে টেনে ধরুন, এতে পেশি প্রসারিত হতে থাকবে।
৫. নিজের শরীর ভাজ করুন
শরীর ভাজ করা উচ্চতা বাড়ানোর একটি অন্যতম সহজ ও কার্যকর কৌশলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই পদ্ধতিতে সোজা হয়ে প্রথমে দাড়াতে হবে। এরপর নিজের শরীর সামনের দিকে আস্তে আস্তে ঝুকাতে হবে। চেষ্টা করুন নিজের হাতের আঙ্গুল দিয়ে পায়ের আঙ্গুল ছোয়ার চেষ্টা করুন।
প্রথমে যদি নাও পারেন, যথাসম্ভব হাত প্রসারণ করার চেষ্টা করুন। এরপর যদি হাত দিয়ে পায়ের আঙ্গুল ছুতে পারেন, তাহলে তারপর চেষ্টা করুন নিজের মাথা, হাটুর দিকে যথাসম্ভব নামানোর জন্য। কিন্তু মনে রাখবেন, নিজের শরীর পিছন দিকে সোজা রাখতে হবে এবং হাটু ভাঙ্গা যাবেনা।
আপনি চাইলে এভাবে ওঠানামা করতে পারেন বা এভাবে পজিশন হোল্ডও করতে পারেন। তবে উভয় ব্যায়াম করলে আপনার পেশি প্রসারণ দ্রুত হবে যা উচ্চতা বাড়ানোতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: জীবনে সাফল্য পেতে হলে গড়ে তুলুন ৬ টি অভ্যাস!
উপসংহার
আজকের মতো, এই ছিল উচ্চতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আমাদের আজকের পোস্ট। এই পোস্টের ২য় অংশে, আপনাদের উচ্চতা বাড়ানোর বাকি কৌশল সম্বন্ধে জানাবো।
আপনাদের পোস্ট সম্বন্ধীয় যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। আমরা যথাসম্ভব উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। সবাইকে শুভকামনা জানিয়ে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি!
শুভকামনা!