Work From Home করে অনলাইনে রোজগারের এই উপাইগুলি আপনার জেনে রাখা দরকার

Work from home বা ঘরে বসে আয় এই শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কম বেশি পরিচিত। বিশেষ করে করোনা মহামারীর এই সময়ে ঘরে থেকে আয় করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে আমরা সকলেই একে অপরের সাথে এক অদৃশ্য অন্তর্জালের মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত। এই ভার্চুয়াল দুনিয়া অথবা অনলাইন মাধ্যম আমাদের কে সুযোগ করে দিয়েছে ঘরে থেকেই অর্থ উপার্জনের।

Work From Home করে অনলাইনে রোজগারের এই উপাইগুলি আপনার জেনে রাখা দরকার
Work from Home Guide and Tips in Bangla

যদিও ইন্টারনেটে সূচনা লগ্ন থেকেই আউটসোর্সিং এর ধারণা জনপ্রিয়তা লাভ করে আসছে তথাপি post-COVID অবস্থায় মানুষ ঘরে বসে আয়ের প্রতি অধিক আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আপনি যদি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে আয় করার কথা ভেবে থাকেন তবে আজকের আয়োজন টি আপনার জন্য। এখানে আমরা ঘরে বসে উপার্জনের বিভিন্ন উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করব। 

Work from Home কি?

work from home. এই শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কম বেশি পরিচিত। যার বাংলা প্রতিশব্দ দাঁড়ায় ঘরে বসে আয় করা। পূর্বে আমাদেরকে সশরীরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কাজ করতে হতো। কিন্তু প্রযুক্তিগত উত্তোলনের ফলে ঘরে বসেই আমরা বিভিন্ন white collar job. করতে পারি। অনলাইনের মাধ্যমে গড়ে তুলতে পারি একটি সফল ক্যারিয়ার। বর্তমান সময়ে ঘরে বসে আয় করার বিষয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। 

কিভাবে আয় করবেন?

অনলাইন মাধ্যমটি শুধুমাত্র আপনার যোগাযোগের জন্য নয় বরং আয়ের ক্ষেত্রে হতে পারে অন্যতম উৎস। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের মাঝে আউটসোর্সিং এর ধারণা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আউটসোর্সিং বলতে মূলত অনলাইনের মাধ্যমে আয় করাকে বোঝায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে শুধু অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো ই নয় বরং বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা ইন্ডাস্ট্রিগুলো অনলাইন চাকরির অফার দিয়ে আসছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মূল চাহিদার ক্ষেত্র থাকে ফাইন্যান্সিং গ্রাফিক্স ডিজাইনিং অথবা মারকেটিং জাতীয় ক্ষেত্রগুলোতে।

করোনা মহামারীর এই সময়ে অধিকাংশ ব্যক্তিই অফিসে গিয়ে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করেছে। ফলে এসব কোম্পানিগুলো ঘরে বসেই তাদের এমপ্লয়ীদের কে কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। এছাড়া অনলাইনে আয়ের মাধ্যম হিসেবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি বা ফেসবুক পেজ সহ ব্লগিং সাইট গুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়। আপনি যদি কিছুটা ক্রিয়েটিভ হন তাহলে অনায়াসেই নিজের ইউটিউব চ্যানেল বা ফেসবুক পেজ ব্লগিং সাইট ইত্যাদি তৈরীর মাধ্যমে অনায়াসেই অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন এবং তা শুধুমাত্র ঘরে বসেই। এখন আমরা ঘরে বসে আয় করার বিভিন্ন কার্যকরী এবং মাধ্যমগুলো সম্পর্কে জানব। যার মাধ্যমে শুধুমাত্র আয় নয় বরং গড়ে তুলতে পারেন একটি সফল ক্যারিয়ার। 

ব্লগ লেখার মাধ্যমে আয়ঃ

বিভিন্ন ব্লগিং সাইট এর লেখার মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করতে পারেন। বর্তমান সময়ে এমন অনেক ব্লগিং সাইট রয়েছে যা আপনাকে মাসিক বেতনে অথবা চুক্তিতে ব্লগ লেখার সুযোগ দিচ্ছে। আপনি যদি লিখতে পছন্দ করেন তবে অনায়াসে ব্লগ লেখার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। এ ছাড়া অন্যের ব্লগে যদি লিখতে না চান তাহলে নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন কোন ব্লগিং সাইট। এক্ষেত্রে আইয়ের ক্ষেত্রটি কিছুটা সময় সাপেক্ষ হবে কারণ আপনার আয় তখনই হবে যখন আপনার পোষ্ট কৃত ব্লগে ভিউজ বাড়বে।

আপনি হয়তো ভাবছেন যে অন্য কোন ব্লগিং সাইট বা ওয়েবসাইট কেন আপনার কনটেন্ট লেখার জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করবে। আসলেই এখানেও কাজ করছে ভিউজ ট্রাফিক। একটি ব্লগিং সাইট তার ভিউজ এর ওপর ভিত্তি করে আয় করে থাকে। তাই আপনি যদি কোন ব্লগিং সাইট এর হয়ে লেখা দিয়ে থাকেন তবে তারা সেখান থেকে আপনাকে অর্থ প্রদান করে। তবে এক্ষেত্রে অর্থ উপার্জনের জন্য আপনাকে কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রথমত আপনার লেখাতে হতে হবে কপিরাইট মুক্ত। এছাড়া সাবলীল ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করার যোগ্যতা এতে এনে দিবে বাড়তি সুবিধা।

প্রত্যেক ব্লগিং সাইট এর নির্দিষ্ট কিছু চাহিদা থাকে আপনাকে অবশ্যই ওই ব্লগিং সাইট এর চাহিদা অনুযায়ী লেখা দিতে হবে। একটু সার্চ করলেই আপনি জানতে পারবেন বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট সম্পর্কে যা ব্লগারদেরকে এই ধরনের সুবিধা প্রদান করে আসছে। সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দনীয় ব্লগিং সাইট টি বেছে নিতে পারেন এবং রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার যা সবথেকে বেশি প্রয়োজন তা হচ্ছে জানার আকাঙ্ক্ষা। আপনি যদি নতুন কিছু জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন এবং লিখতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে এই ক্ষেত্রটি হতে পারে আপনার জন্য চমৎকার একটি আই এর উৎস। 

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারঃ

এখন প্রায় সকল কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ফেসবুক পেজ সহজ সোসাল প্লাটফর্ম গুলো ম্যানেজ করা।অর্থাৎ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে কোম্পানির প্রচার বৃদ্ধি করা। আর এই কাজটি আপনি ঘরে বসে করতে পারেন। ভালো একটি অংকের এই চাকরি আপনার ক্যারিয়ারের যুক্ত করবে নতুন মাত্রা।

কাজেই আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে কাজ করতে আগ্রহী হন এবং সারাদিন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটিভ থাকতে পছন্দ করেন তাহলে এ ধরনের চাকরি আপনার জন্য উপযুক্ত হবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একটি ওয়েবসাইট কিভাবে ম্যানেজ করতে হয় এই বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। এছাড়া নতুন নতুন বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ততা এবং ভালো ইংরেজি বলার দক্ষতা থাকলে আপনি অনায়াসেই হতে পারেন একজন সফল সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার। 

গ্রাফিক্স থেকে আয়ঃ

ভার্চুয়াল জগতে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজের চাহিদা অনেক বেশি। কোন লোগো ডিজাইন করা থেকে শুরু করে পোস্টার ক্যালেন্ডার ইত্যাদি সবকিছু ডিজাইন করা এর অন্তর্ভুক্ত। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন এ পারদর্শী হন তবে ঘরে বসে করে তুলতে পারেন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার। এক্ষেত্রে আপনি চুক্তিবদ্ধ হয়ে কোন প্রতিষ্ঠানের লোগো বা পোস্টের জাতীয় বিষয়গুলো তৈরি করে দিতে পারেন। আবার অনেক কোম্পানি নিজেদের ব্যক্তিগত গ্রাফিক্স ডিজাইনার রাখে। তবে গ্রাফিক্স ডিজাইনে এই প্রতিযোগিতায় নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই ইউনিক গুণস ম্পন্ন হতে হবে। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়ঃ

মার্কেটিং এর জগতে ক্রমশই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ধারণা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে বোঝায় কোন একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের পণ্য কে লেখনি বা ভিডিওর মাধ্যমে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে তার ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি করা। এক্ষেত্রে আপনি নিজের ওয়েবসাইট   ইউটিউব চ্যানেল অথবা ফেসবুক পেইজে এসব কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। সবশেষে আপনি ওই পণ্যটির একটি লিংক দিয়ে থাকবেন যেখানে ক্রেতাগণ ক্লিক করে পণ্যটি ক্রয় করতে পারবে। এভাবে যখনই কেউ আপনার প্রদত্ত লিঙ্ক থেকে একটি পণ্য ক্রয় করবে তার কিছু কমিশন আপনি পাবেন। বর্তমান সময়ে এই ধরনের আয়ের এর উৎস অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করে আপনিও এভাবে আয় করতে পারেন এবং তা শুধুমাত্র ঘরে বসে। 

ফটোগ্রাফি থেকে আয়ঃ

কি, অবাক হচ্ছেন? ফটোগ্রাফি যদি আপনার শখ হয়ে থাকে তবে এই শখ কে কাজে লাগিয়ে আপনি আয় করতে পারবেন অনেক টাকা। ঘরে বসে আয় করার জন্য এটি অন্যতম সফল এবং জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। এক্ষেত্রে আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে নিজের স্থিরচিত্র গুলো পাবলিশ করতে পারেন। যদি আপনার তোলা ছবির কারো প্রয়োজন হয় তবে সে মূল্য দিয়ে ক্রয় করতে পারবে। নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে না চাইলে অসুবিধা নাই কারন এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনি আপনার ছবিগুলো জমা দিতে পারবেন।এরপর সেগুলো বিক্রি হলে সেখান থেকে গুণে নেবেন নগদ অর্থ।

এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন আপনার ছবিগুলো যেন অন্যরকম হয় অর্থাৎ মানুষকে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। আমরা প্রায়ই দেখি থাকি যে আমাদের বিভিন্ন কাজের জন্য অনেক রকম ছবির দরকার পড়ে যেগুলো অনলাইনে টাকা দিয়ে কিনতে হয়। তাই আপনি যদি মানুষের সাইকোলজি বুঝে সেই অনুযায়ী ছবিগুলো পাবলিশ করতে পারেন তাহলে অনায়াসেই আপনি অনেক ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।